Advertisement
১৮ মে ২০২৪

ভিন রাজ্যে আলু যাচ্ছে কত, হিসেব রাখবে পুলিশ

ভিনরাজ্যে প্রতিদিন কী পরিমাণ আলু যাচ্ছে, পুলিশকে তার হিসেব রাখার নির্দেশ দিল রাজ্য সরকার। শর্ত সাপেক্ষে রাজ্যের আলু ভিন রাজ্যে পাঠাতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কোন জেলা দিয়ে প্রতিদিন কত পরিমাণ আলু অন্য রাজ্যে যাবে তার ঊর্ধ্বসীমাও বেঁধে দিয়েছে রাজ্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৪ ০২:১৩
Share: Save:

ভিনরাজ্যে প্রতিদিন কী পরিমাণ আলু যাচ্ছে, পুলিশকে তার হিসেব রাখার নির্দেশ দিল রাজ্য সরকার। শর্ত সাপেক্ষে রাজ্যের আলু ভিন রাজ্যে পাঠাতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কোন জেলা দিয়ে প্রতিদিন কত পরিমাণ আলু অন্য রাজ্যে যাবে তার ঊর্ধ্বসীমাও বেঁধে দিয়েছে রাজ্য।

বুধবার কোচবিহারে এসে পুলিশকে হিসেব রাখার নির্দেশ দিয়েছেন কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়। এ দিন কোচবিহারে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন তিনি। রাতে সার্কিট হাউসে রাজ্যের পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, জেলা পরিষদের সভাধিপতি পুষ্পিতা ডাকুয়া, জেলাশাসক পি উল্গানাথন সহ দফতরের পদস্থ কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানেই অসমে আলু পাঠানোর ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের নজর রাখার নির্দেশ দেন মন্ত্রী। আর প্রতিদিন আলু পাঠানোর হিসেব রাখার ভার দেন পুলিশকে। মন্ত্রীর কথায়, “বক্সিরহাট হয়ে উত্তরবঙ্গ থেকে দৈনিক ২০০ মেট্রিক টন আলু শর্ত সাপেক্ষে অসমে পাঠানোর সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়েছে। গোটা বিষয়টি জেলাশাসকে নজরে রাখতে বলা হয়েছে। কত আলু যাচ্ছে পুলিশ সেই হিসাব রাখবে।”

রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কোচবিহারের বক্সিরহাট হয়ে প্রতিদিন অসমে ২০০ মেট্রিক টন, পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড় হয়ে ওড়িশায় প্রতিদিন ৪০০ মেট্রিক টন এবং ঝাড়খণ্ডে ১০০ মেট্রিক টন আলু পাঠানোর ছাড়পত্র দিয়েছে রাজ্য। আর এই হিসেব রাখার ভার দেওয়া হয়েছে পুলিশকে। যদিও এই নির্দেশ নিয়ে পুলিশ মহলেই অসন্তোষ দানা বেঁধেছে। নির্দেশ পালন করতে হলে প্রতিদিন সব ট্রাকে তল্লাশি চালাতে হবে। সে কাজে বেশি সংখ্যক পুলিশ কর্মী চাই। সেই সঙ্গে আলুর হিসেব রাখার কোনও অভিজ্ঞতাই পুলিশকর্মীদের নেই, সেক্ষেত্রে কীভাবে সেই কাজ করা হবে, তা নিয়েই সন্দিহান পুলিশ কর্তারা। জেলার পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব জানিয়েছেন, সরকারি নির্দেশ মেনেই কাজ হবে।

এ দিকে, রাজ্যে আলুর দাম বেড়ে যাওয়ায় আলু উৎপাদক অন্য রাজ্যগুলির রফতানির প্রবণতাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন তিনি। এমনকি হিমঘরগুলিতে পর্যাপ্ত আলু মজুত থাকলেও উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন বাজারে কেন আলুর দাম বেড়েছে, সেই প্রশ্নেও ভিনরাজ্যের আলু রফতানির প্রবণতাকেই দুষেছেন তিনি। অরূপবাবুর ব্যাখ্যা, “দেশজুড়ে আলুর দাম বেড়েছে। তার উপরে পঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলি বাইরে আলু পাঠানোয় সমস্যা বেড়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এ রাজ্যের উপরে চাপ বেড়েছে।” তবে রাজ্য সরকার আলুর বাজারদর স্বাভাবিক রাখতে সচেষ্ট বলে দাবি করেছেন মন্ত্রী।

মন্ত্রীর নির্দেশ শোনার পরেই পুলিশের একাংশের মধ্যে নানা জল্পনা তৈরি হয়েছে। জেলা পুলিশের একটি সূত্রে জানানো হয়েছে, অসম সীমানায় নজরদারি নিরাপত্তা দেখভালে সবসময় বাড়তি চাপ থাকে। সে সবের মধ্যে আলুর হিসাব রাখতে হলে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কাজে সমস্যা হতে পারে। রাজ্যের পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য দাবি করেছেন, পুলিশের পক্ষে এ কাজ করা সমস্যাজনক নয়। তাঁর দাবি, “অসমের সীমানার চেকপোস্টে পুলিশ থাকে। ওখানে ওজন মাপার যন্ত্র রয়েছে। ফলে কত টন আলু অসমে যাচ্ছে তার হিসেবও পুলিশের পক্ষে রাখা মোটেই কঠিন কোনও কাজ নয়। তাছাড়া পুলিশের তরফে নির্দিষ্ট ছাড়পত্রের ব্যবস্থা করা হলেও ঠিকঠাক আলুর হিসেব থাকবে।” এ দিন কোচবিহারের সাতমাইল বাজারে নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির উদ্যোগে তৈরি ২০টি স্টলের উদ্বোধন করেন মন্ত্রী। ওই বাজার সহ কোচবিহারের একাধিক বাজারে একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

potato police coochbihar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE