Advertisement
E-Paper

ভর্তি শেষ হয়নি এখনও, বিতর্ক গৌড়বঙ্গে

বর্ধিত আসনের থেকেও আসন সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে বির্তকের মুখে পড়েছেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরেও এখনও প্রথম বর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। গত বুধবারই বর্ধিত আসনে ভর্তির জন্য আজ, সোমবার ৮ এবং মঙ্গলবার ৯ ডিসেম্বর কাউন্সেলিংয়ের দিন ধার্য হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। বছর শেষ হতে চললেও এখনও ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হওয়ায় শিক্ষাবর্ষই পিছিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন ছাত্রছাত্রীদের একাংশ।

অভিজিত্‌ সাহা মালদহ

শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:৪৩

বর্ধিত আসনের থেকেও আসন সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে বির্তকের মুখে পড়েছেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরেও এখনও প্রথম বর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হয়নি।

গত বুধবারই বর্ধিত আসনে ভর্তির জন্য আজ, সোমবার ৮ এবং মঙ্গলবার ৯ ডিসেম্বর কাউন্সেলিংয়ের দিন ধার্য হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। বছর শেষ হতে চললেও এখনও ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হওয়ায় শিক্ষাবর্ষই পিছিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন ছাত্রছাত্রীদের একাংশ।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অঙ্কের আসন ৭৫টির পরিবর্তে বাড়িয়ে ৮০টি করা হয়েছে। রসায়ন ও পর্দাথবিদ্যায় ২০টির বদলে ৪০টি, ভূগোলে ৩০টির পরিবর্তে ৪০টি, উদ্ভিদবিদ্যায় ২০টির বদলে ৪০টি, বাংলা ও ইতিহাসে ৭০টি আসন বাড়িয়ে ১০০টি করা হয়েছে। টিএমসিপির ‘চাপের’ জেরেই কর্তৃপক্ষ এখনও ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে পারেননি বলেও অভিযোগ।

কর্তৃপক্ষের একটি সূত্রের দাবি, শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের চাপে ভর্তি প্রক্রিয়ার শুরুতেই মেধা তালিকায় পিছিয়ে থাকা পড়ুয়াদেরও আগে ভর্তি করে নেওয়া হয়। যার জেরে মেধা তালিকার সামনের দিকে থাকা ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি করার জন্য আসন সংখ্যা বাড়ানো ছাড়া কর্তৃপক্ষের কোনও উপায় ছিল না। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোপাল মিশ্র বলেন, “ছাত্র ছাত্রীদের সুবির্ধাথে এই আসন বাড়ানো হয়েছে। এখানে কারও চাপে পড়ে বাড়ানোর অভিযোগ ভিত্তিহীন।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার ন্যূনতম ৪ মাস পরে সেমেস্টার পরীক্ষা নিতে হয়। আগামী মার্চ মাসে সেই পরীক্ষা নেওয়ার কথা ছিল। যদিও, ডিসেম্বরেও ভর্তির পরীক্ষা চলতে থাকায় আগামী বছরের এপ্রিল মাসের আগে সেই পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয় বলে জানাচ্ছেন ছাত্রছাত্রীদেরই একাংশ। কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানাচ্ছেন, গত বছর মার্চ মাসে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। এ বারও সেই একই মাসে পরীক্ষা নেওয়া হবে। তাঁদের দাবি, ভর্তি প্রক্রিয়া দেরি হওয়ায় প্রথম সেমেস্টার পিছানোর বিষয় নেই। এ বার মার্চ মাস পর্যন্ত যতটুকু সিলেবাসের পড়া হয়েছে সেই পর্যন্তই পরীক্ষা নেওয়া হবে। পরবর্তী পরীক্ষাগুলিতে তা অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে সিলেবাস শেষ করা হবে। তবে তা কতটা বাস্তবে সম্ভব তা নিয়ে সন্দিহান পড়ুয়াদের একাংশই।

যে আসন বাড়ানোর জেরে ভর্তি পিছোল, টিএমসিপির চাপেই তা হয়েছে বলে অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রেই জানা যায়, ভর্তি নিয়ে প্রথম থেকেই অভিযোগ উঠেছিল। কর্তৃপক্ষও চাপে পড়ে গত অগস্ট মাসে কাউন্সেলিং হওয়ার পরেও দ্বিতীয় কাউন্সেলিং করাতে পারেনি। প্রথমে গত ২৮ নভেম্বর দ্বিতীয় কাউন্সেলিং হওয়ার কথা জানিয়ে নোটিশ দেওয়া হলেও, পরবর্তীতে পিছিয়ে গত ২ ডিসেম্বর করা হয়। সেই দিনও বাতিল করে আগামী ৮ এবং ৯ ডিসেম্বর নতুন দিন ঘোষণা করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চলতি শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই সব বিষয়ে কিছু করে আসন বাড়ানো হয়েছিল। তারপরে ফের এ দিন যে আসন বৃদ্ধির ঘোষণা হয়েছে, তা নিয়ে আগে কোনও আলোচনা হয়নি বলেও দাবি করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যুক্ত একাংশ সদস্যরা জানিয়েছেন, কোনও বিষয়ে আসন বাড়াতে হলে আগে থেকে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। ভর্তির আগেই সে কথা আবেদনকারীদের জানিয়ে নোটিশ দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে প্রথম কাউন্সেলিং হওয়ার ৪ মাস পরে আসন বাড়ানোর পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও, উপাচার্য বলেন, “নিয়ম অনুযায়ীই ভর্তি নেওয়া হয়েছে।” তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফে অবশ্য এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। সংগঠনের জেলা সভাপতি প্রসেনজিত্‌ দাস জানিয়েছেন তিনি এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করবেন না।

তবে এর জেরে সমস্যায় পড়বেন ছাত্রছাত্রীরাই। তাঁদের ক্ষোভ, এ বার ভর্তির প্রক্রিয়া ডিসেম্বর পর্যন্ত গড়াবে। ফলে পরে যে সমস্ত ছাত্রছাত্রী ভর্তি হবে তাদেরকে চরম সমস্যায় পড়তে হবে। এ বারে বিভিন্ন বিষয়ে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ল্যাব ভিত্তিক বিষয়গুলির ছাত্রছাত্রীদের ল্যাব ব্যবহারের ক্ষেত্রে সমস্যা হবে। একই সঙ্গে তাঁদের অভিযোগ, এ বারে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে টাকার বিনিময়ে ভর্তি নেওয়া হয়েছে। আর এতে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মী সমর্থকদের মদত রয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোপাল মিশ্র বলেন, “আসন সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে এখনই পরিষ্কার করে কিছু বলে যাবে না। গত ২২শে নভেম্বর ইউ.সির মিটিং এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ বার বি.এডের ভর্তি আগে হওয়ায় এ বারের ভর্তির প্রক্রিয়া দেরি হচ্ছে। পরীক্ষা পিছোনোর কোনও বিষয় নেই। আর ছাত্রছাত্রীরা যে অভিযোগ করছে বেনিয়মে ভর্ত্তি নেওয়া হয়েছে তা লিখিত ভাবে জানালে খতিয়ে দেখা হবে। আর ল্যাবের সমস্যা মেটানোর চেষ্টা হবে।”

malda abhijit saha gour banga university controversy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy