বাইপাসের রাস্তার জন্য নেওয়া জমির উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবিতে অনুমতি না নিয়েই মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে মাইক বাজিয়ে আন্দোলন করায় তার বিরুদ্ধে ইসলামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন ইসলামপুরের মহকুমাশাসক। সোমবার বিকেলে ইসলামপুর থানায় ওই অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। অভিযোগ, মহকুমা অফিসের সামনে প্রশাসনের কোনও অনুমতি না নিয়েই মাইক বাজিয়ে আন্দোলন করা হচ্ছে। তাতে প্রশাসনিক কাজকর্ম করতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে মহকুমা প্রশাসনের কর্তাদের। যদিও অভিযোগে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। ইসলামপুরের মহকুমা শাসক ভিভু গোয়েল বলেন, “একটি অভিযোগ করা হয়েছে। তবে অনেকে মিলেই সেখানে রয়েছেন। কাজেই কাউকে আলাদা করে চিনে নাম উল্ল্যেখ করা য়ায়নি।” ইসলামপুরের এসডিপিও বৈভব তেওয়ারি বলেন, জানান, অভিযোগ মিলেছে। সেই হিসেবে মামলা রুজু করে তদন্তের কাজ শুরু হয়েছে।
রবিবার ইসলামপুর মহকুমা শাসক দফতরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করেন ইসলামপুরের বাইপাস এলাকার কৃষি জমি রক্ষা কমিটির সদস্যরা। সোমবার ছিল তার দ্বিতীয় দিন। অভিযোগ, বাইপাসের জমির ন্যায্য মূল্য ও জমিদাতাদের সরকারি চাকরি ও শংসাপত্র দাবি করেন তারা। যদিও আন্দোলনকারীদের পক্ষে রাজের জনশিক্ষা এবং গ্রন্থাগার মন্ত্রী আব্দুল করমি চৌধুরীর ভাইপো আলতামাস চৌধুরী বলেন, “মহকুমা শাসক দফতরের সামনে মাইক বাজানোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলে কোথাও লেখা নেই। তবে আমরা অনুমোদন চেয়েছিলাম পাইনি।”
জমির ক্ষতিপূরণের দাবিতে দল কোনও আন্দোলন করছে না বলে তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়ৈেছে। এ দিন দলের ইসলামপুর ব্লক সভাপতি মেহতাব চৌধুরী ওই দাবি করেছেন। জেলা তৃণমূল নেতা তথা মন্ত্রী আবদুল করিম চৌধুরী ভাইপো আলতামাস চৌধুরী ক্ষতিপূরণের দাবি গড়ার কমিটির সভাপতি হয়ে আন্দোলনে নামায় বিতর্ক দেখা দেয়। তৃণমূলের ব্লক সভাপতির দাবি, “তৃণমূল জমির ক্ষতিপূরণের দাবিতে কোনও আন্দোলন করছে না। কেউ যদি আন্দোলনে যান, সেটা তাঁর পুরোপুরি ব্যক্তিগত বিষয়। দলের এখানে কী করার আছে।” আলতামাস চৌধুরী জেলা আইনটিটিইউসি নেতাও। বর্তমানে সংগঠনের জেলা কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তিনি জেলার সহকারি সভাপতিও ছিলেন। শ্রমিক সংগঠনটির প্রাক্তন জেলা সভাপতি শেখর দাস বলেন, “আমরা ওই আন্দোলনের কথা জানি না। কেউ স্বেচ্ছায় যেতেই পারেন। তবে সেখানে তো তৃণমূলের কোনও পতাকা বা ব্যানারও ব্যবহার করা হয়নি।”
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, বাইপাসের জমির ক্ষতিপূরণের নায্য মূল্যের দাবিতে আন্দোলন দ্বিতীয় দিনে পড়ল। সোমবারও অবশ্য আন্দোলন মঞ্চ করার অনুমতি না দেয়নি প্রশাসন। এমনকি, ইসলামপুরের মহকুমা শাসক আন্দোলনকারীদের স্মারকলিপি জমা নেওয়ার জন্য অনুমতি দেননি। পরে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে একটি ফ্যাক্স বার্তাও পাঠান আন্দোলনকারীরা।
কৃষি জমি রক্ষা কমিটির সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা আলতামাস চৌধুরী বলেন, “আমরা বাসিন্দাদের নিয়ে আন্দোলন করছি। এতে কেন রাজনীতি টেনে আনা হচ্ছে জানি না। এদিন মহকুমা শাসক অফিসের সামনে মঞ্চ করার অনুমতি দেননি। স্মারকলিপিও নেনি।” এই প্রসঙ্গে মহকুমা শাসক ভিভু গোয়েল বলেন, “আন্দোলনকারীরা মঞ্চ তৈরির কোনও অনুমতি নেননি। এমনকি স্মারকলিপির বিষয়েও নিয়ম মানা হয়নি।”
ইসলামপুরের শ্রীকৃষ্ণপুর এলাকা থেকে অলিগঞ্জ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১০ কিলোমিটার রাস্তায় বাইপাস হবে। বাম আমল থেকেই সেই জমি অধিগৃহীত হচ্ছে। সেখানে একাংশের জমিদাতার ক্ষতিপূরণের বেশি টাকার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy