মোজমপুরের গোষ্ঠী-সংঘষের ঘটনায় অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ দায়ের হল তৃণমূলেরই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে।
নিহত সেলিম শেখের স্ত্রী আরেফার অভিযোগের ভিত্তিতে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য আসাদুল্লা বিশ্বাস-সহ ন’জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে আসাদুল্লা বিশ্বাসের অনুগামী জখম ওয়াহেদ শেখের স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে তৃণমূলের রিন্টু শেখ, তুহুর আলি বিশ্বাস ও তাঁর চার ভাই সহ ২৭ জনের বিরুদ্ধেও খুনের চেষ্টার মামলা রুজু হয়েছে। দুই গোষ্ঠীর অভিযোগের ভিত্তিতে ৩৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা রজু করলেও পুলিশ এখনও পর্যন্ত এক জনকেও গ্রেফতার করতে পারেনি। উদ্ধার হয়নি মোজমপুর থেকে একটি অস্ত্রও। জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দোপাধ্যায় বলেন, “বুধবারের দু’গোষ্ঠীর সর্ংঘষের ঘটনায় কালিয়াচক থানায় দু’টি অভিযোগ জমা পড়েছে। দু’টি অভিয়োগের ভিত্তিতেই মামলা রুজু করে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। অভিযুক্তদের ধরতে তল্লাশিও শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের যারা পিছন থেকে মদত দিচ্ছে তাদের কাউকে ছাড়া হবে না।” এ দিন মোজমপুরে কোনও সর্ংঘষের ঘটনা না ঘটলেও গোটা এলাকায় চাপা উত্তেজনা ছিল। ডিএসপি সিদ্ধার্থ দোরজির নেতৃত্বে গোটা এলাকাতেই বিশাল পুলিশ বাহিনী ও র্যাফের টহল চলেছে।
এ দিকে মোজমপুরে দলের গোষ্ঠী সংঘর্ষের অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগে দলের নেতাদের নাম প্রকাশ্য চলে আসায় ‘অস্বস্তিতে’ পড়েছে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব। তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “পুলিশ তদন্ত করে দেখুক কারা কারা মোজমপুরে সংঘর্ষ করছে? সব পক্ষকেই পুলিশ ধরুক। আমরা পুলিশের কাজে বাধা দেব না।” মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী বলেন, “আমি দলের মুখপাত্র নই। এখন মোজমপুরে যে সংঘর্ষ হচ্ছে এর পিছনে কোনও রাজনীতি নেই। যাঁদের মধ্যে সংঘর্ষ হচ্ছে এক সময় তাদের কারও ভাই, কারও ছেলে, কারও আত্মীয় খুন হয়েছেন। সেই খুনের বদলা নিতেই এখন মোজমপুরে সংঘর্ষ হচ্ছে।”
জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক জীবন মৈত্রও একই মত প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “মোজমপুরের অর্থনৈতিক লেনদেনকে ঘিরে আমাদের আমলে আসাদুল্লা বিশ্বাসের সঙ্গে কংগ্রেসের তুহুর আলি বিশ্বাসের সর্ংঘষ ছিল। এখন ওরা সবাই এখন তৃণমূলে ঢুকেছে। সেই অর্থনৈতিক লেনদেনকে ঘিরেই এখনও ওই আসাদুল্লা বিশ্বাস ও তুহুর আলি বিশ্বাসের মধ্যে সর্ংঘষ জারি রয়েছে।”
মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র জানান, মোজমপুরে সাধারণ মানুষ শান্তিতে বসবাস করুক সেটাই তিনি চান। তাঁর অভিযোগ, “কংগ্রেস এলাকায় অশান্তি সৃষ্টিকারীদের মদত দিচ্ছে। আমি পুলিশকে বলেছি যাঁরা মোজমপুরে অশান্তি করছে তাদের গ্রেফতার করুন।” মোজমপুরে গোষ্ঠী সংঘর্ষে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে চলে আসার পর স্থানীয় কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী অবশ্য অভিযোগ করেছেন, “সর্ংঘষে লিপ্ত দু’পক্ষই শাসকদলের আশ্রিত বলে পুলিশ এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy