Advertisement
E-Paper

মোবাইল উধাও, দুই নাবালক-সহ ধৃত ছয়

বেতগুড়ি চা বাগানের ম্যানেজার নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে ট্রেন ধরতে গিয়েছিলেন। তাঁর প্যান্টের পিছনের পকেটে রাখা ছিল দামী ট্যাবটি। কথা বলার জন্য মোবাইল বের করতে গিয়ে দেখেন, সেটি উধাও। শিলিগুড়ি জংশন এলাকায় একটি হোটেলে খাওয়ার সময় ফোনে কথা বলে হাত ধুতে গিয়েছিলেন সেলসের চাকুরে বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য। টেবিলে ফোন রেখে হাত ধুয়ে আসতে মিনিট দেড়েক। তার মধ্যেই উধাও সেটটি।

সংগ্রাম সিংহরায়

শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৪ ০২:০৬

বেতগুড়ি চা বাগানের ম্যানেজার নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে ট্রেন ধরতে গিয়েছিলেন। তাঁর প্যান্টের পিছনের পকেটে রাখা ছিল দামী ট্যাবটি। কথা বলার জন্য মোবাইল বের করতে গিয়ে দেখেন, সেটি উধাও।

শিলিগুড়ি জংশন এলাকায় একটি হোটেলে খাওয়ার সময় ফোনে কথা বলে হাত ধুতে গিয়েছিলেন সেলসের চাকুরে বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য। টেবিলে ফোন রেখে হাত ধুয়ে আসতে মিনিট দেড়েক। তার মধ্যেই উধাও সেটটি।

গৃহবধূ মমতা সরকার শপিং মলে গিয়েছিলেন অটোয় চেপে। তাঁর পাশেই জড়োসড়ো হয়ে বসেছিল দুটি বাচ্চা ছেলে। অটো থেকে নেমে দেখলেন তাঁর সাইড ব্যাগের জিপ খোলা। গায়েব তাঁর মোবাইল ফোনটি। ওই বাচ্চারা ছাড়া আর কেউ ছিল না অটোতে জানা সত্ত্বেও বিশ্বাস করতে মন চাইছিল না, ‘ওই বাচ্চাগুলো চুরি করে থাকতে পারে!’

গোটা উত্তরবঙ্গের সমস্ত থানাতেই কম-বেশি এভাবে লাগাতার মোবাইল চুরির অভিযোগ দায়েরে নাজেহাল হয়ে ছিলেন গোটা উত্তরবঙ্গের সমস্ত থানার পুলিশ কর্মীরা। তটস্থ পুলিশ কর্মীরা শেষ পর্যন্ত মোবাইল চুরি ও পাচারের এক চক্রকে গ্রেফতার করেছে নিউ জলপাইগুড়ি এলাকার দুটি লজ থেকে। এর মধ্যে তিনটি বালক। যাঁদের বয়স ৯-১২ বছরের মধ্যে। যা দেখে হতবাক পুলিশ কর্মীরাও। ধৃতদের কাছ থেকে ১৮টি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি ও জি পাল বলেন, “ছোট ছোট বাচ্চা ছেলেদের দিয়ে চক্রটি চুরি ও ছিনতাই করাত বলে আমরা জানতে পেরেছি। ধৃতদের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক তিন জন ওই বাচ্চাদের আত্মীয় ও পরিচিত। ধৃত তিন প্রাপ্তবয়স্ককে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হবে।”

রবিবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন চত্বরের একটি লজ থেকে দুই নাবালক সহ তিনজনকে গ্রেফতার করে নিউ জলপাইগুড়ি ফাঁড়ির পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সোমবার চত্বরের অন্য একটি হোটেল থেকে আরও তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। মোট ৬ জনের মধ্যে তিন জনই নাবালক। পুলিশ জানিয়েছে, এদের মধ্যে মনোজ কুমার দাস, পূরণ মাহাতো এবং মহম্মদ ইয়াসিনকে মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতে পেশ করা হয়। বিচারক ৫ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখার আর্জি মঞ্জুর করেছেন। ধৃত নাবালকদের জলপাইগুড়ি জুভেনাইল আদালতে পাঠানো হয়। তাদের আপাতত কোরক হোমে রাখা হয়েছেয়।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, বাজারের ভিড়ে সেঁধিয়ে গিয়ে মুহূর্তে পকেট থেকে মোবাইল ফোন বের গায়েব করতে সিদ্ধহস্ত তারা। দোকানির মুহূর্তের অসতর্কতায় টেবিল থেকে গায়েব হয়ে যায় দামী মোবাইল সেট। ধৃতদের সকলেরই বাড়ি ঝাড়খন্ডের সাহেবগঞ্জ এলাকায়। ধৃত পূরণের ছেলে রয়েছে নাবালকের মধ্যে। ধৃতরা প্রাথমিক জেরায় কবুল করেছে, নিজেদের আত্মীয় ও বন্ধুদের মধ্যে বাচ্চা ছেলে জোগাড় করে তাদের পকেট কাটা, চুরি শেখায়।

ঝাড়খন্ডের বাড়ি হলেও শিলিগুড়িে কেন্দ্র করে তাদের ‘অপারেশন’ চালায় জলপাইগুড়ি, ধূপগুড়ি, ফালাকাটা, কোচবিহার, ময়নাগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায়। চুরি করা ফোন তারা শিলিগুড়িতে জমা করে রাখে। ৩০-৪০টি মোবাইল হলে তারা ঝাড়খন্ডে গিয়ে বিক্রি করে দেয়। ফের শিলিগুড়িতে আসে। এখানে ১০-১৫ দিনের জন্য একটা বাড়ি ভাড়া নেয়। সেই সঙ্গে কোনও একটি হোটেল বা লজের ঘরও ভাড়া নেয়। চুরির মাল সমস্তই হোটেলে নিয়ে গিয়ে রাখে। সেখানে এক জন বা দু’জন থাকে। বাকিরা বাড়িতে থাকে। এই দফায় অবশ্য দু’টিই লজ নেওয়া হয়েছিল। পুলিশের সন্দেহ, বাচ্চাদের দিয়ে চুরি করালে বেশির ভাগ সময়ই সন্দেহ তাদের দিকে যায় না। কাজ হাসিল করতে চক্রটির সুবিধা হয়।

জেল হেফাজত। অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগে ধৃত জিটিএ সদস্য কাজিমান লোহাগুনকে ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত। ২৭ জুন গভীর রাতে পুল-বিজনবাড়ি এলাকা থেকে নির্বাচিত প্রবীণ জিটিএ সদস্যকে পুলিশ ধরে। পুলিশ জানিয়েছে, গত ১৭ জুলাই জামুনির একটি পর্যটন প্রকল্পে অনিচ্ছুক জমিদাতাকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে ছ’জনকে ধরে পুলিশ। আদালতে পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে জানা যায় জিটিএ সদস্য কাজিমান লোহাগুন দৃষ্কতীদের অস্ত্র সরবরাহ করেছিলেন। তাঁর থেকে একটি তাজা কার্তুজও উদ্ধার হয়েছে। গ্রেফতারের পরে প্রথমে আদালতের নির্দেশে ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয় জিটিএ সদস্যকে। মঙ্গলবার ফের তাঁকে আদালতে হাজির করা হলে দার্জিলিং জেলার মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট বিপ্লব রায় ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

two minor siliguri sangram singha roy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy