থানায় মারধরের লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়ার ২৪ ঘণ্টা পরেও মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীর বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা দায়ের না করায় ক্ষুব্ধ মালদহের আয়কর আইনজীবী সঞ্জয় শর্মা। মঙ্গলবার তিনি জানান, দু’দিন অপেক্ষার পরে গোটা বিষয়টি জানিয়ে তিনি মালদহ আদালতের দ্বারস্থ হবেন। আইনজীবীর অভিযোগ, মন্ত্রীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ হয়েছে বলেই মামলা দায়ের করেনি পুলিশ। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করব না।”
সোমবার সঞ্জয়বাবু থানায় অভিযোগ জানান, তাঁর বাড়িতে প্রচুর অনুগামী নিয়ে ঢুকে হামলা করেছেন মন্ত্রী। অতীতে সঞ্জয়বাবু মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দলীয় তহবিলে দু’কোটি টাকা চেয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন থানায়। সেই অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্যই চাপ দেওয়া হয় বলে সঞ্জয়বাবুর অভিযোগ। তিনি বলেন, “কিছুদিন আগে একজন কাউন্সিলর অভিযোগ করতেই পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে আমাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। তা হলে মন্ত্রী ও তাঁর দলবল আমার বাড়িতে ঢুকে আমার বাবা, স্ত্রী, ভাই ও নিরাপত্তা রক্ষীকে মারধর করল বলে অভিযোগ করলেও তা নথিভুক্ত হল না কেন?
তবে সোমবারের মতো কৃষ্ণেন্দুবাবু মঙ্গলবারও দাবি করেছেন, ওই আইনজীবী বেআইনি নির্মাণ করছিলেন বলে অভিযোগ পেয়েই তিনি তা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। সেই সময়ে তাঁকে অপমান করা হয় বলেও অভিযোগ রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যানপালন মন্ত্রীর। কিন্তু, আইনজীবীর বাড়ির লোকজন ক্ষমা চাওয়ায় তিনি তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেননি বলে দাবি করেছেন। মন্ত্রী বলেন, “আমিই তো পুলিশকে ডেকেছিলাম।”
তবে এই ঘটনা নিয়ে তৃণমূলের জেলা নেতাদের অনেকেই মুখ খুলতে চাননি। জেলার আরেক মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, “আমি কোনও মন্তব্য করব না।” একইভাবে মন্তব্য করতে চাননি তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনও।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র পুলিশের সমালোচনা করেছেন। তাঁর অভিযোগ, “তৃণমূল করলে সাত খুন করলেও মাপ। মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীর বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেবে না এটা নতুন কিছু নয়। অপরাধ করার পরেও অনুব্রত মণ্ডল , মনিরুল ইসলাম, তাপস পালদের সরকার দরাজ সার্টিফিকেট দিচ্ছে। মন্ত্রীর বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে এটা ভাবা যায়?”
জেলা কংগ্রেস সভানেত্রী তথা সাংসদ মৌসম বেনজির নূর মনে করেন, অভিযোগ অনুযায়ী মামলা করে তদন্ত হওয়া উচিত। তিনি বলেন, “কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন। যে কেউ অভিযোগ করতেই পারেন। পুলিশকে সেই অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে হবে।” বিজেপি জেলা সভাপতি শিবেন্দুশেখর রায় জানান, তাঁরাও ওই অভিযোগের কথা শুনেছেন। তিনি বলেন, “পুলিশ পক্ষপাত করলে গণতন্ত্রের পক্ষে তা বিপজ্জনক।”