চম্পাসারিতে সিলিন্ডার থেকে আগুন লেগে তিন জনের মৃত্যুর ঘটনায় কারও গাফিলতি রয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। শুক্রবার পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি মামলাও দায়ের করেছে। ওই মামলায় গ্যাস সিলিন্ডারটি মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরে সরবারহ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সরবারহের আগে সিলিন্ডারটি ‘লিক’ ছিল কিনা তা পরীক্ষা করা হয়নি বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। এ দিন মামলা দায়ের পরে বাজেয়াপ্ত সিলিন্ডারটি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে। গত ২ মে চম্পাসারিতে আগুনে এক দম্পতি এবং তাঁদের ১২ বছরের মেয়ের মৃত্যুর ঘটনা হয়। এই ঘটনার পরে গাফিলতির অভিযোগে পুলিশ তদন্তই শুরু করেনি বলে অভিযোগ উঠেছিল। বিভিন্ন মহলে সমালোচনার জেরে ঘটনার দু’সপ্তাহ পরে এ দিন পুলিশ মামলা দায়ের করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগ মোহন এ দিন বলেন, “তদন্ত প্রক্রিয়া চলছিল। সেই প্রক্রিয়াতেই এ দিন মামলা দায়ের করা হয়েছে। কারও গাফিলতি থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থলে যান উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। পুলিশি তদন্ত নিয়ে মৃতদের পরিবারের তরফে মন্ত্রীকে অভিযোগ জানানো হয়। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারকে ফোন করে দ্রুত তদন্ত সেরে যথাযথ পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন মন্ত্রী। সেই সঙ্গে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফেও পুলিশি তদন্ত নিয়ে অভিযোগ তোলা হয়। এরপরেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। সকালে প্রধাননগর থানায় মৃতদের পরিবারের সদস্যদের ডেকে পাঠানো হয়। এ দিন ফের তাঁদের বয়ান নথিবদ্ধ করে পুলিশ। তারপরেই পুলিশের তরফে মামলা দায়ের করা হয়। এ দিন পরিবারের তরফে জানানো হয়, ঘটনার দিনই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। সে অভিযোগের ভিত্তিতে শুধুমাত্র অস্বাভাবিক মামলা দায়ের করা হয় বলে জানা হিয়েছে। এ দিন পুলিশের দায়ের করা অভিযোগ প্রসঙ্গ পরিবারের সদস্যদের প্রশ্ন ঘটনার ১৪ দিন পরে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্ত শুরু হলেও কতটা গাফিলতির খুঁজে পাওয়া যাবে তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন এলাকার একাংশ বাসিন্দাও।
প্রধাননগরের গ্যাস সরবারহকারী সংস্থা সূত্রে অবশ্য এ দিন দাবি করা হয়েছে, তারা পুলিশের তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করছে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশকে সব তথ্য দিয়েছে। ঘটনায় তাঁদের কোনও গাফিলতি নেই বলেও সংস্থা সূত্রে দাবি করা হয়েছে।