শিলিগুড়ির রামঘাট এলাকায় তৃণমূলের মিছিল। —নিজস্ব চিত্র।
শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লির শিলান্যাস অনুষ্ঠানে মন্ত্রীকে হেনস্থার অভিযোগে রাস্তায় নামল তৃণমূল। ‘উন্নয়নের বিরোধিতা কোনও মতে বরদাস্ত হবে না’, এই স্লোগানকে সামনে রেখে শনিবার এই মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন খোদ উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবও। এসএফ রোড থেকে রামঘাট শ্মশান এলাকা পর্যন্ত মিছিল হয়।
শুরুতে এসএফ রোডের ধারে পথসভা হয়। সেখানে বক্তৃতা করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী-সহ অন্যান্য নেতারা। ঘটনাচক্রে, এসজেডিএ-এর প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা শিলিগুড়ির তৃণমূল বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্যও ওই মিছিলে ছিলেন। বক্তৃতাও দেন তিনি। শিলান্যাস অনুষ্ঠানে আন্দোলনকারীকে মারধরের অভিযোগ তুলে বিরোধী কংগ্রেস, সিপিএম এবং বিজেপি রাজনীতি করছে বলে সরব হয়েছিল তৃণমূল। এ দিন তৃণমূলের পাল্টা প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে শাসক দলের বিরুদ্ধেই সেই অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “এই মিছিল শান্তিপূর্ণ ভাবে হয়েছে। কাউকে হুমকি, ভয় দেখানোর জন্য নয়। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই আমরা জোড় হাত করে মানুষের কাছে যাব। উন্নয়নের বিরুদ্ধে যারা, তাদের ন্যক্কারজনক ভূমিকার কথা মানুষের কাছে গিয়ে বলব। পুরসভা,এসজেডিএ, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকে কয়েক’শো কোটি টাকার উন্নয়ন কাজের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কিছু সমাজবিরোধী, জমির দালালকে নিয়ে বিরোধীরা ঝান্ডা ফেলে উন্নয়ন কাজের বিরোধিতায় নেমেছেন। তার প্রতিবাদে আমরা মাথা নিচু করে মানুষের কাছে যাব।” মন্ত্রীর দাবি, “বিরোধীদের বলতে হবে তারা বৈদ্যুতিক চুল্লির পক্ষে না বিপক্ষে? শ্মশান যে ট্রাস্টের অধীনে তারা অনুমোদন করেছে। অথচ তার পরেও বিরোধীরা গোলমাল চাইছে।” কালী পুজোর পরেই শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লি বসানোর কাজ শুরু হবে বলে তিনি এ দিন জানিয়ে দেন।
ওই ঘটনার জেরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীকে গ্রেফতারের দাবিতে আজ, রবিবার বামফ্রন্টের তরফে মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল। প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক অশোক ভট্টাচার্যের অভিযোগ, “মন্ত্রী নিজেই বৈদ্যুতিক চুল্লি বসানো নিয়ে রাজনীতি করছেন। বাসিন্দারা তাঁর সঙ্গে আলোচনা করতে চেয়েছিল। তিনি ডেকে নিয়ে গিয়ে মারধর করলেন।” অশোকবাবুর অভিযোগ, এ দিন দুপুর থেকেই বাসিন্দাদের বাড়িতে যান পুলিশ, বম্ব স্কোয়াডের লোকজন। এ ধরনের পরিস্থিতি আগে কখনও হয়নি। বাসিন্দাদের অনেকেই এ দিন অশোকবাবুর কাছে এসে এ ব্যাপারে অভিযোগ জানান। এ দিন তৃণমূলের ওই মিছিলকে ঘিরে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেছিল পুলিশ।
জেলা কংগ্রেসের অন্যতম নেতা তথা প্রাক্তন মেয়র পারিষদ সুজয় ঘটক বলেন, “কিরণ চন্দ্র শ্মশানে আরেকটি বৈদ্যুতিক চুল্লি বসানো এবং বর্তমান চুল্লির দূষণ ঠেকাতে আমরা পরিকল্পনা নিয়েছিলাম। পুরসভায় বিশেষজ্ঞ না-থাকায় শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রকল্প পাঠানো হয়েছিল। রাজ্য সরকার বা এসজেডিএ কেউই তখন সাহায্য করেনি।”
বিজেপি-র জেলা সভাপতি রথীন্দ্র বসুর বক্তব্য, “উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী যদি সত্যিই স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তুলে ধরতে চান, তা হলে আগে গত পাঁচ বছরে শিলিগুড়ি পুরসভায় তাঁর দলের কাউন্সিলরদের সম্পত্তির পরিমাণ কতটা বেড়েছে সেই হিসেব জনসমক্ষে রাখুন। তখনই বোঝা যাবে কোন দলের ক’জন শিলিগুড়ির উন্নয়ন চান?”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy