রায়গঞ্জ পুর বাসস্ট্যান্ড ও লাগোয়া এলাকায় যানজট রুখতে বাস মালিকদের আবেদনে সাড়া দিয়ে বৈঠক করেছিল রায়গঞ্জ পুরসভা। ওই বৈঠকে পুরসভার প্রতিনিধিরা ছাড়াও হাজির ছিলেন বাস মালিক, ব্যবসায়ী ও ট্রাফিক পুলিশের আধিকারিকেরা। যানজট রুখতে ওই বৈঠকে সব পক্ষের সর্বসম্মত একাধিক সিদ্ধান্তও হয়। কিন্তু তার পরে প্রায় চার মাস পেরিয়ে গেলেও একাধিক সিদ্ধান্ত এখনও কার্যকরী হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। বাস মালিকদের অভিযোগ, গত দু’মাসে একাধিকবার পুলিশের কাছে লিখিতভাবে সে সব সিদ্ধান্ত কার্যকর করার দাবি জানানো হলেও কোনও লাভ হয়নি।
এই পরিস্থিতিতে পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ ও সিদ্ধান্ত কার্যকর করার জন্য পুরসভার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বাস মালিকেরা। সমস্যার সমাধানে নিজেদের ভূমিকা ঠিক করতে মঙ্গলবার রায়গঞ্জ পুর বাসস্ট্যান্ড চত্বরে তাঁদের নিজস্ব কার্যালয়ে বৈঠক করেন বাস মালিকেরা। বৈঠকের পরে পুর বাসস্ট্যান্ড ও লাগোয়া এলাকায় যানজট রুখতে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত কার্যকরী করা না হলে পুর-বাসস্ট্যান্ড বয়কটের হুমকি দিয়েছেন বাস মালিকেরা।
উত্তর দিনাজপুর বাস ও মিনিবাস ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক প্লাবন প্রামাণিক বলেন, “ট্রাফিক পুলিশ সক্রিয় না হওয়ায় বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত এখনও কার্যকরী হয়নি। ফলে পুর বাসস্ট্যান্ড ও লাগোয়া এলাকায় প্রতিদিন যানজটের সমস্যা বাড়ছে। যে হেতু, পুরসভা ওই বৈঠক ডেকেছিল, তাই সিদ্ধান্ত কার্যকরী করার বিষয়ে পুর কর্তৃপক্ষেরও ইতিবাচক ভূমিকা নেওয়া উচিত ছিল।” তাঁর দাবি, গত দু’মাসে সংগঠনের তরফে পর পর তিনবার পুলিশকে লিখিতভাবে বৈঠকের সিদ্ধান্ত কার্যকরী করার দাবি জানানো হলেও কোনও লাভ হয়নি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের দাবি পূরণ না হলে পরিবহণ মালিকেরা পুর-বাসস্ট্যান্ড বয়কট করে কসবা ও দেবীনগর এলাকা থেকে বাস ও ট্রেকার চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
পুরসভার চেয়ারম্যান মোহিত সেনগুপ্তের দাবি, “ওই বৈঠকে পুর বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া রাস্তায় বাস, ট্রেকার ও অটো দাঁড়িয়ে যাতে যাত্রীদের না তোলে সেই বিষয়েও সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।” তাঁর অভিযোগ, পরিবহণ মালিকদের একাংশের নজরদারির অভাবে এখনও পুর বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া রাস্তায় বিভিন্ন যাত্রিবাহী গাড়ি দাঁড়াচ্ছে। ট্রাফিক পুলিশের নজরদারির অভাবে বৈঠকের সিদ্ধান্ত কার্যকরী না হওয়ায় যানজটের সমস্যা মেটেনি। দোলের পরে পুরসভার তরফে সব পক্ষকে নিয়ে ফের বৈঠক ডেকে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা হবে।”
প্লাবনবাবুর পাল্টা দাবি, পুর বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া রাস্তায় কোনও যানবাহন দাঁড়িয়ে যাতে যাত্রীদের না তোলে, তার জন্য চালক ও কনডাক্টরদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া রয়েছে। তিনি বলেন, “তার পরেও রাস্তায় গাড়ি দাঁড়ালে তা দেখার দায়িত্ব ট্রাফিক পুলিশের।”
জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজার দাবি, “পুর বাসস্ট্যান্ড ও লাগোয়া এলাকায় যানজট রুখতে কোনও বৈঠকের কথা জানা নেই। সমস্যার বিষয়টি খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।”
রায়গঞ্জ পুর-বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিন জেলা সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন রুটে বাস, ট্রেকার ও অটো মিলিয়ে সাড়ে ৪০০ যানবাহন যাতায়াত করে। সমস্যা মেটাতে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, যানজট রুখতে বিভিন্ন রুট ফেরত অটো পরদিন থেকে রেললাইনের পাশের রাস্তা দিয়ে থানারোড হয়ে পুর-বাসস্ট্যান্ডে ঢুকবে। সেখানে ১০টির বেশি রিকশা থাকবে না। রিকশা দাঁড়ানোর জন্য পুরসভা একটি নির্দিষ্ট জায়গা চিহ্নিত করে দেবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy