জলমগ্ন নেতাজিপাড়া। চলছে এ ভাবেই যাতায়াত। ছবি: সন্দীপ পাল।
কোথাও হাঁটু সমান জল। কোথাও জল কোমর পর্যন্ত। মঙ্গলবার খরস্রোতা নদীর মতো জলের স্রোত বয়ে গিয়েছে জলপাইগুড়ি পুরসভার অন্তত ন’টি ওয়ার্ডে। লাগাতার বর্ষণে করলা নদী ভেসে প্লাবিত হয়েছে বহু এলাকা। জলপাইগুড়ির মহকুমাশাসক সীমা হালদার বলেন, “শহরের নদী লাগোয়া যে নিচু এলাকাগুলিতে জল দাঁড়িয়েছে সেখানে ত্রাণ শিবির খোলা না হলেও শুকনো খাবার বিলির কাজ চলছে।”
অন্য বছরের মতো এবারও শহরের পরেশ মিত্র কলোনিতে এদিন নৌকা ভেসেছে। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে নৌকা নামিয়ে উদ্ধার করতে হয় জলবন্দিদের। স্থানীয় কংগ্রেস কাউন্সিলার পরিমল মালোদাস জানান, অন্তত পাঁচশো জনকে নিরাপদ জায়গায় সরানো হয়েছে। সেচ দফতর সূত্রে খবর, শহরের বিস্তীর্ণ এলাকার নিকাশি নালাগুলি অতিবৃষ্টির জলের চাপ বহন করতে পারেনি। ওই কারণে মহামায়া পাড়া, কংগ্রেস পাড়া, পানপাড়া, অরবিন্দনগর, ইন্দিরা কলোনি, নিউ টাউন, নেতাজি পাড়া, আনন্দপাড়া, স্টেশন রোড, নিউ সার্কুলার রোড জলমগ্ন হয়ে পড়ে। নদীর চেহারা নেয় পাণ্ডাপাড়া। বৃষ্টির জমা জলে প্লাবিত হয়েছে ময়নাগুড়ি শহরের বিস্তীর্ণ এলাকাও। ময়নাগুড়ির ব্যাংকান্দি এলাকায় জলের তোড়ে রাস্তার একাংশ ভেসে গেছে। শহরের দেবীনগর, সুভাষনগরের কিছু অংশও প্লাবিত। চাতরার পাড় এলাকায় পঞ্চায়েত সমিতির বাঁধ তিস্তার জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতি হয়েছে। ময়নাগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুভাষ বসু বলেন, “বিকেল থেকে জরুরি ভিত্তিতে ওই বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে।” ধূপগুড়ির বারঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সিসাপাড়া থেকে একশো পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে। ক্রান্তি এলাকায় তিস্তা নদীর ছ’নম্বর স্পারে ফাটল ধরায় এখানে মুন্সিপাড়া, সেনপাড়া এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি নূরজাহান বেগম বলেন, “কিছু এলাকা বৃষ্টির জলে বন্দি হয়েছে। কিছু এলাকায় নদীর জল ঢুকেছে।” জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী জানান, পুরসভার ২৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১১টি জলবন্দি হয়েছে। দলের কর্মীদের খিচুড়ি বিলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুরসভার অভিযানের পরে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে লুকিয়ে থাকা শুয়োরের দল এদিন জল সাঁতরে পালাতে শুরু করে। এনসেফ্যালাইটিসের আতঙ্ক পুরোপুরি কাটেনি এখনও। তাই আতঙ্কিত শহরবাসী জল উপেক্ষা করেই শুয়োর খেদাতে নেমে পড়েন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy