Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

রাস্তা আটকে চাঁদা, ধরলেন জেলাশাসক

রাস্তায় গাড়ি আটকে চাঁদা তোলার অভিযোগে এক তৃণমূল কর্মীকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক তাপস চৌধুরী। শুক্রবার সকাল ১০টা নাগাদ বালুরঘাট শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রঘুনাথপুর এলাকার ঘটনা। ধৃত যুবকের বাবা ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা নিরঞ্জন রায় খবর পেয়ে থানায় ছুটে যান।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৪ ০২:৩৩
Share: Save:

রাস্তায় গাড়ি আটকে চাঁদা তোলার অভিযোগে এক তৃণমূল কর্মীকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক তাপস চৌধুরী। শুক্রবার সকাল ১০টা নাগাদ বালুরঘাট শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রঘুনাথপুর এলাকার ঘটনা। ধৃত যুবকের বাবা ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা নিরঞ্জন রায় খবর পেয়ে থানায় ছুটে যান। তবে খোদ জেলাশাসক অভিযুক্ত ওই যুবককে হাতেনাতে ধরে ফেলায় পুলিশ কোনও ঝুঁকি না নিয়ে ধৃত ওই তৃণমূল কর্মীকে থানা হাজতে ঢুকিয়ে দেয়। চাঁদার জুলুমের বিরুদ্ধে খোদ জেলাশাসকের হস্তক্ষেপের খবরে পুলিশও নড়েচড়ে বসে। এর পরেই চাঁদা তোলার অভিযোগে ওই এলাকা থেকে অপর এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়। জেলাশাসক বলেন, “বেআইনি কাজ মানা হবে না। তা সে তিনি যে দলেরই লোক হোন না কেন। রাস্তায় গাড়ি আটকে পুজোর চাঁদা তোলা যাবে না।”

বালুরঘাট থানার আইসি বিপুল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সিভিক ভলান্টিয়ারের প্রশিক্ষণ নিয়ে পুলিশি ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে দলটি রাস্তায় চাঁদা তুলছিল। অভিযুক্ত দলের দু’জনকে ধরে কড়া পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।”

তৃণমূল সূত্রের খবর, পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে গত পুরভোটে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন নিরঞ্জন রায়। ভোটে তিনি পরাজিত হন। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি। তবে এদিন থানায় বসে তাঁর ছেলে ধৃত বিশ্বজিৎ রায় বলেন, “পাড়ায় গণেশ পুজো উপলক্ষে পরিচিত ছোট গাড়ির চালকদের কাছ থেকে চাঁদা তোলা হচ্ছিল। জুলুম করে চাঁদা তোলা হয়নি।”

ধৃত অন্য যুবক সুনীল ওঁরাওয়ের দাবি, “আমি চাঁদা তোলার সময় ছিলাম না। তবু পুলিশ গিয়ে আমাকে ধরে নিয়ে আসে।” তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক প্রবীর রায় বলেন, “আইন আইনের পথেই চলবে। তবে কেউ যদি অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকে, তা হলে দল তাঁর দায় নেবে না।”

শহরের রঘুনাথপুর এলাকা থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরত্বের মধ্যে সার্কিট হাউস এবং জেলাশাসক, পুলিশ সুপার সহ জেলা প্রশাসনের অন্য আধিকারিকদের বাংলো। ওই ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রঘুনাথপুর এলাকায় এদিন গণেশ পুজো উপলক্ষে রাস্তায় গাড়ি আটকে সকাল থেকে চাঁদা তোলা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, বাবা তৃণমূলের স্থানীয় নেতা হওয়ার সুবাদে ওই দলেরই সক্রিয় কর্মী বিশ্বজিৎ দলবল নিয়ে রাজ্য সড়কে গাড়ি আটকে গণেশ পুজোর চাঁদা তুলছিল। সকাল ১০টা নাগাদ জেলাশাসক অফিসে রওনা হওয়ার সময় ব্যস্ত রাস্তায় ওই দলটিকে গাড়ি আটকে চাঁদা তুলতে দেখেন। জেলাশাসক গাড়ি থেকে নেমে চাঁদা আদায়কারীদের দিকে তেড়ে যেতেই সকলে পালিয়ে যেতে থাকেন। কিন্তু ওই তৃণমূল কর্মীকে জেলাশাসক ধরে ফেলেন। এর পরে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ধৃতের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের রসিদ বই এবং কিছু টাকাও জেলাশাসক বাজেয়াপ্ত করে পুলিশকে তুলে দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

extortion road district magistrate balurghat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE