জলা জমি বুজিয়ে রাস্তা তৈরিকে ঘিরে দুই গ্রামের সংঘর্ষে জখম হলেন পাঁচ জন। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে আক্রমণের শিকার হয় পুলিশও। হাঁসুয়ার আঘাতে ও ইটের ঘায়ে জখম হয়েছেন চার পুলিশ অফিসার। এদের মধ্যে দু’জন মানিকচক গ্রামীন হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। বুধবার সকাল এগারোটা নাগাদ মালদহের মানিকচক থানা এলাকায় নওদা ও বড়ো বাগান গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। দু’ পক্ষই লাগাতার বোমাবাজি করে বলে অভিযোগ। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “জমি নিয়ে বিবাদের জেরে সংঘর্ষ বাধে দুই গ্রামের মধ্যে। কয়েকজন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশের তরফ থেকে মামলা করা হয়েছে। দুই পক্ষের কেউ এখনও কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মানিকচক ব্লকের এনায়েতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নওদা গ্রামের সঙ্গে ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বড়ো বাগানের বাসিন্দাদের মধ্যে রাস্তা তৈরি করা নিয়ে বিবাদ চলছে দীর্ঘ দিন ধরে। এই এলাকায় প্রায় ৮৫ শতক জলা জমি রয়েছে। এই জমির মধ্যে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের কিছু পাট্টাও রয়েছে। কিছু রয়েছে খাস জমি। নওদা গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, জলা জমিতে সুখা মরশুমে চাষবাস করা হয়। বর্ষাকালে জল হয়ে যাওয়ায় চাষবাস করা যায় না। বড়ো বাগানের বাসিন্দারা এই জমিতে মাটি ভরাট করে রাস্তা তৈরি করতে চাইছে বলে অভিযোগ। তাঁরা জানান, গত মঙ্গলবার বিকেলে মাটি ফেলা হয়। সেই সময় তাদের নিষেধ করা হয়েছিল। এদিন ফের মাটি ফেলতে গেলে নওদা গ্রামের বাসিন্দারা বাধা দেন। শুরু হয়ে যায় দুই পক্ষের মধ্যে লাঠি,হাঁসুয়া নিয়ে সংঘর্ষ। দু’পক্ষই ব্যাপক বোমাবাজি করে বলে অভিযোগ।
ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছলে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে তাঁদের উপর চড়াও হয় গ্রামবাসীরা। বাসিন্দাদের ছোঁড়া ইটের আঘাতে ও হাঁসুয়ার কোপে জখম হন চার পুলিশ আধিকারিক। এদের মধ্যে একজন এসআই ও তিনজন এএসআই। তাদের মধ্যে এএসআই প্রসূন কর্মকার ও যামিনীকান্ত রায়ের আঘাত গুরুতর। যামিনীবাবুর গলায় হাঁসুয়ার আঘাত রয়েছে। দুজনই মানিকচক গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে যান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক মোদি ও ডিএসপি সিদ্ধার্থ দোরজির নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী। সংঘর্ষে পাঁচজন গ্রামবাসীও কমবেশি জখম হয়েছেন।
ভূমিসংস্কার দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিবাদ থাকায় গত জুলাই মাসে এই জমিটি মাপার কাজ শুরু হয়েছিল। তবে ওই দিন সন্ধ্যে হয়ে যাওয়ায় আর কাজ করা যায়নি। পরে জমিতে জল জমে যাওয়ায় আর এগোনো যায়নি। বিডিও বলেন, “জমিটিতে কি সমস্যা রয়েছে তা দেখা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy