পুলিশের অনুমতি না নিয়ে লাঠি নিয়ে রায়গঞ্জ শহরে মিছিল করার অভিযোগে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক (আরএসএস) সঙ্ঘের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার রাজেশকুমার যাদব বলেন, “পুলিশ অনুমতি না দেওয়া সত্ত্বেও আরএসএসের সদস্যরা রায়গঞ্জে লাঠি নিয়ে মিছিল করে বেআইনি কাজ করেছেন। তাই আরএসএসের বিরুদ্ধে রায়গঞ্জ থানা মামলা দায়ের করেছে।” পুলিশ সূত্রের খবর, আদালতে দোষ স্বীকার করে নিলে তাঁদের জরিমানা করে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হতে পারে।
যদিও আরএসএসের তরফে এ দিন বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর চক্রবর্তী পুলিশের বিরুদ্ধেই রাজনৈতিক চক্রান্ত করে মিছিলের অনুমতি না দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। শঙ্করবাবুর অভিযোগ, “গত ২৬ মে আরএসএস নেতৃত্ব রুটমার্চ করার অনুমতি চাইতে রায়গঞ্জ থানায় গিয়েছিলেন। অনুমতির লিখিত আবেদন আইসির কাছে জমাও দেওয়া হয়। কিন্তু পুলিশ তৃণমূলের সঙ্গে চক্রান্ত করে অনুমতি না দিয়ে অসৌজন্যতা দেখিয়ে জটিলতা সৃষ্টি করে। পুলিশ অবশ্য দাবি করেছে, রায়গঞ্জের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি বিচার করে আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কা করেই লাঠি নিয়ে মিছিল করার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
ওই দিনের কর্মসূচির জন্য অনুমতির প্রয়োজন ছিল না বলেও দাবি করেছে বিজেপি। শঙ্করবাবুর দাবি, “ওই দিন আরএসএস মিছিল করেনি। শারীরিক প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর আরএসএস সদস্যরা লাঠি নিয়ে শহরে রুট মার্চ বা টহলদারি করে অনুশীলন করেছেন। এই ধরণের সামাজিক কাজের ক্ষেত্রে পুলিশের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হয় না।” তাঁর হুঁশিয়ারি, “পুলিশ আরএসএসের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে মামলা দায়ের করলে আরএসএস ও বিজেপিও আইসি সহ পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করবে। প্রয়োজনে আন্দোলনও হবে।”
উল্লেখ্য, গত ১৪ মে থেকে সারদা স্কুলে এ রাজ্য-সহ দেশের একাধিক রাজ্যের আরএসএসের স্বয়ংসেবকদের নিয়ে একটি সাংগঠনিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার শারীরিক প্রশিক্ষণ শেষ হয়। বুধবার আরএসএসের শতাধিক সদস্য রায়গঞ্জ স্টেশন থেকে সুদর্শনপুর এলাকার ওই স্কুল পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার রাস্তায় সাংগঠনিক উর্দি পরে লাঠি নিয়ে মিছিল করেন। তৃণমূল, কংগ্রেস ও সিপিএমের তরফে আরএসএসের বিরুদ্ধে পুলিশের অনুমতি না নিয়ে লাঠি নিয়ে মিছিল করার অভিযোগ তোলা হয়।
জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্য বলেন, “আইনশৃঙ্খলার স্বার্থে পুলিশ যে কোনও সংগঠন বা রাজনৈতিক দলকে মিছিলের অনুমতি নাও দিতে পারে। এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। পুলিশকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হলে সরকারও হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না।” পুলিশি সিদ্ধান্তকে পৃথকভাবে স্বাগত জানান রায়গঞ্জের সিপিএম সাংসদ সহম্মদ সেলিম ও জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ। তাঁরা প্রায় একই সুরে বলেছেন, “আইনভঙ্গকারী ও মদতকারীদের কোনও চাপের কাছে নতি স্বীকার না করে পুলিশ মামলার প্রতিটি পদক্ষেপ চালু রাখবে, এটাই আশা করছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy