প্রধান শিক্ষককে ঘিরে ছাত্র ও অভিভাবকদের অশান্তিতে মঙ্গলবার উত্তেজনার সৃষ্টি হয় রতুয়ার বৈদ্যনাথপুর হাই স্কুলে। প্রধানশিক্ষক নিয়মিত স্কুলে না আসায় পঠন পাঠন ব্যহত হচ্ছে অভিযোগে এ দিন আন্দোলন করেন অভিভাবকদের একাংশ। এই সময় প্রধানশিক্ষক স্কুলে এলে তাঁকে ধাক্কাধাক্কি করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার কথা জানাজানি হতে প্রধানশিক্ষকের হেনস্থার প্রতিবাদে অভিভাবকদের উপর চড়াও হয় ছাত্ররা। ধুন্ধুমার কাণ্ড বাঁধে স্কুল চত্বরে। আন্দোলনের জেরে এ দিন ওই স্কুলের মূল ফটকের তালাই খোলেনি। জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) আশিস চৌধুরী বলেন, “গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আন্দোলনের নামে কথায় কথায় এ ভাবে স্কুল বন্ধ করে দেওয়া বা কাউকে হেনস্থা করা মোটেই উচিত নয়।”
স্কুল সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল থেকেই স্কুলের মূল ফটকে বসে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকদের একাংশ। প্রধান শিক্ষক পৌঁছতেই তাঁকে জামার কলার ধরে টেনে নিয়ে গিয়ে সংলগ্ন একটি গাছতলায় বসিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তার পর সেখানেই প্রধান শিক্ষককে ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে অন্য শিক্ষকরা স্কুলে এলে তাঁদেরও স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। প্রধান শিক্ষককে গাছ তলায় টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানতে পেরে খেপে ওঠে পড়ুয়ারা। অভিভাবকদের উপর চড়াও হয় তারা। বিডিওর নির্দেশে স্কুলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয় পুলিশ।
অভিভাবকদের অভিযোগ, গত জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে প্রধান শিক্ষক স্কুলে আসছেন না। তিনি না আসায় পঠনপাঠন ব্যহত হচ্ছে। একই সঙ্গে সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রী ও তফসিলি জাতি ও উপজাতির পড়ুয়ারা তাদের স্কলারশিপের ফর্ম জমা দিতে পারছে না। তফসিলি জাতি উপজাতির পড়ুয়াদের ভাতার টাকা এসে পড়ে থাকলেও তা বিলি করা হচ্ছে না। এ ছাড়া ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য শংসাপত্রও প্রধান শিক্ষক গরহাজির থাকায় মিলছে না বলে অভিযোগ।
প্রধান শিক্ষক মহম্মদ লিয়াকত আলি বলেন, “অসুস্থ থাকায় আমাকে কিছুদিন টানা ছুটি নিতে হয়েছিল। দীর্ঘ অনুপস্থিতিতে অভিভাবকদের ক্ষোভ ছিল। তবে নিয়মিত স্কুলে আসি না এ কথা ঠিক নয়। ছাত্রছাত্রীদের যাতে সমস্যা না হয় তা দেখা হবে। স্কুল পরিচালনার স্বার্থেই পুলিশে কোনও রকম অভিযোগ জানাচ্ছি না।” ছাত্রদের বক্তব্য, আন্দোলন নিয়ে তাদের কিছু বলার নেই। কিন্তু প্রধান শিক্ষককের হেনস্থা মেনে নিতে পারছে না তারা।