Advertisement
০৯ মে ২০২৪

শাশুড়িকে হত্যা করায় খুন জামাইকে

পারিবারিক গোলমালের জেরে শাশুড়িকে খুনের পরে পালানোর সময়ে পিটিয়ে-কুপিয়ে খুন করা হয়েছে এক ব্যক্তিকে। মঙ্গলবার সকালে শিলিগুড়ির প্রধাননগর থানার চম্পাসারি এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ মৃতার ছেলেকে গ্রেফতার করেছে। তিনি মাকে বাঁচাতে গিয়ে ভগ্নিপতির হাতে প্রথমে আক্রান্ত হন। পরে তিনি ধারাল অস্ত্র ছিনিয়ে ভগ্নিপতিকে খুন করেছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। জখম ওই ব্যক্তিকে প্রাথমিক চিকিত্‌সা করানোর পরে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:৪৬
Share: Save:

পারিবারিক গোলমালের জেরে শাশুড়িকে খুনের পরে পালানোর সময়ে পিটিয়ে-কুপিয়ে খুন করা হয়েছে এক ব্যক্তিকে। মঙ্গলবার সকালে শিলিগুড়ির প্রধাননগর থানার চম্পাসারি এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ মৃতার ছেলেকে গ্রেফতার করেছে। তিনি মাকে বাঁচাতে গিয়ে ভগ্নিপতির হাতে প্রথমে আক্রান্ত হন। পরে তিনি ধারাল অস্ত্র ছিনিয়ে ভগ্নিপতিকে খুন করেছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। জখম ওই ব্যক্তিকে প্রাথমিক চিকিত্‌সা করানোর পরে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, শাশুড়ির নাম কল্পনা সরকার (৬৫) এবং জামাইয়ের নাম রোহিণী দাস (৫০)। ভগ্নিপতিকে খুন করার অভিযোগে তাঁর বড় শ্যালক নেপাল সরকারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন বলেন, “মূল অভিযুক্ত খুন হয়েছে। তাঁকে খুনে অভিযুক্তকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।” তবে রোহিনী খুনে পরিবারের অন্য কোনও সদস্য জড়িত রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২২ বছর আগে বিয়ে হয় রোহিনী ও নমিতার। তাঁদের তিন মেয়ে। রোহিণী পেশায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। স্ত্রীর সঙ্গে বিবাদের কারণে গত এক বছর ধরে স্ত্রী নমিতাদেবী চম্পাসারির বটতলাতেই বাপের বাড়ি লাগোয়া এলাকায় আলাদা ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন। তাঁর সঙ্গে দুই মেয়ে থাকতেন। অপর মেয়ে বিবাহিত। রোহিণী স্ত্রী ও মেয়েদের কাছে স্বামী ও স্ত্রীর বিবাদের কারণ হিসেবে শাশুড়িকেই দায়ী করেছেন একাধিকবার বলে জানা গিয়েছে। এদিন ভোর পাঁচটা নাগাদ ভোজালি নিয়ে এসে চড়াও হয় শ্বশুরবাড়িতে। শাশুড়ি কল্পনাদেবী নিজেই দরজা খুলে দেন। পরে ঘরের ভিতরে ঢুকে ছিটকিনি আটকে দেন তিনি। সেই সময় শাশুড়ির সঙ্গে তার শ্যালকের মেয়ে ঘরে ছিল। তর্কাতর্কি হতে হতে হঠাত্‌ই ভোজালি বের করে শাশুড়িকে কোপাতে থাকে। মেয়েটি কোনও রকমে দরজার ছিটকিনি খুলে দেয়। তার আগেই অবশ্য শাশুড়ি মারা যান। তার গলায়, মাথায় আঘাত ছিল। মাকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন নেপাল ও দীপল দুই ভাই। এর পরে সকলে মিলে তাকে ধরে ফেলে মারধর করতে থাকে। নেপালবাবুকেও ভোজালি নিয়ে আক্রমণ করেন রোহিণী। তাঁকেও মাথায় ভোজালি দিয়ে কোপ দেওয়া হয়। এরপরে ভোজালি কেড়ে নিয়ে পাল্টা আক্রমণ করেন নেপালবাবু। তাঁর ভোজালির আঘাতে মৃত্যু হয় রোহিনীর। পরে প্রতিবেশীরা পুলিশকে খবর দিলে নেপালবাবুকে গ্রেফতার করেন তাঁরা। ঘটনাস্থলে যান এসিপি ওয়েস্ট মানবেন্দ্র দাস সহ পুলিশ বাহিনী।

এদিন সকালে তাদের বাড়িতে চিত্‌কার শুনে পাড়ার লোকজন এগিয়ে আসার চেষ্টা করলেও বাড়ির মূল দরজা ভিতর থেকে আটকানো ছিল। তাই কেউ ঢুকতে পারেননি। পাশের বাড়ির পাঁচিল দিয়ে ঢোকার চেষ্টা করলেও বাড়ির উঠোনে কল্পনাদেবীর রক্তাক্ত দেহ দেখে এবং খোলা ভোজালি দেখিয়ে ভয় দেখানোয় কেউ সাহস করেননি বলে জানান পাড়ার এক বাসিন্দা। ঘটনার সময় বাইরে উপস্থিত ছিলেন সদানন্দ মিত্র। তিনি বলেন, “রোহিণী মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। এদিন তাকে মেরে না ফেললে হয়তো বাকি আরও অনেককে মেরে ফেলত বলে আমাদের ধারণা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

siliguri mother in law murder son in law
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE