চার সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করে চাঁচলের ১২ দিনের শিশুর চিকিৎসা শুরু হল মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
হাতে সংক্রমণ হওয়া শিশুটিকে পর্যবেক্ষণে রেখে মেডিক্যাল কলেজের সুপারের নেতৃত্বে চিকিত্সা চলছে। পাশাপাশি চাঁচলে শিশুটির চিকিত্সায় গাফিলতির জন্যই গুরুতর সংক্রমণ হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা নিয়ে প্রশাসনিক তদন্ত শুরু হয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার অমিত দাঁ জানান, এসএনএসইউ বিভাগে শিশুটির চিকিত্সা চলছে। কিন্তু শিশুটির হাতের সংক্রমণ কি ওষুধে সারিয়ে তোলা যাবে, না কি তাঁর পরিজনদের আশঙ্কা অনুযায়ী শিশুটির হাত কেটে ফেলতে হতে পারে সেই প্রশ্নের উত্তর সরাসরি এড়িয়ে সুপার বলেন, ‘‘৭২ ঘন্টা না কাটলে আমরা কিছুই বলতে পারছি না। সংক্রমণে অসুস্থ শিশুটির প্রাণ বাঁচানোই আপাতত জরুরি।’’
মেডিক্যাল কলেজ সূত্রেই জানা গিয়েছে, সুপারের নেতৃত্বে একজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, শল্য চিকিত্সক ও মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক শিশুটির উপর নজরদারি চালাচ্ছে। ড্রেসিং করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছে। ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখার পর পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে তা দেখা হবে। শিশুটি সুস্থ হলে তাকে স্ক্রিন গ্রাফটিং এর জন্য কলকাতায় পাঠানো হবে এমনটাও ঠিক রেখেছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।
মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্যালাইন দেওয়ার সময় শিশুটির শিরায় সূচ না ঢুকে মাংসপিন্ডে ঢুকে গিয়ে এই বিপত্তি বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু যেভাবে সংক্রমণ হয়েছে তা এক বা দু’দিনে হয়নি। ফলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে দেখেও সংশ্লিষ্ট চিকিত্সক কেন কোনও ব্যবস্থা নেননি তা নিয়ে বিস্মিত মেডিক্যাল কলেজের চিকিত্সকরা।
গত ১৬ জানুয়ারি চাঁচলের সতি এলাকার বাসিন্দা হাসিনা বিবি কন্যাশিশুটির জন্ম দেন। তিন দিন বাদে শিশুটির শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় স্যালাইন দেওয়া হয়। অভিযোগ, তারপর থেকেই শিশুটির ডান হাতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। বুধবার রাতে চাঁচল হাসপাতালে ভাঙচুর করা হলে রাতেই শিশুটিকে মালদহে স্থানান্তরিত করানো হয়।
ওই ঘটনায় শিশুটির পরিজনেরা অভিযোগ না জানালেও, বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। মালদহের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দিলীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘কী হয়েছিল সব কিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শিশুটির পরিবারের অভিযোগ পেলে তার ধরন দেখে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’