Advertisement
E-Paper

সন্ধ্যায় হিলকার্ট রোডে বহুতলে আগুন

রবিবারের ভর সন্ধ্যায় শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডের একটি বহুতলে ভয়াবহ আগুন লেগে পুড়ে গেল ভবনের চারতলার একটি বড় অংশ। মঙ্গলদ্বীপ নামের ওই বহুতল ভবনেই রয়েছে স্টেট ব্যঙ্ক অব ইন্ডিয়ার উত্তরবঙ্গের আঞ্চলিক কার্যালয়। ঘটনার জেরে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৪ ০২:২৮
জ্বলছে বহুতল।

জ্বলছে বহুতল।

রবিবারের ভর সন্ধ্যায় শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডের একটি বহুতলে ভয়াবহ আগুন লেগে পুড়ে গেল ভবনের চারতলার একটি বড় অংশ। মঙ্গলদ্বীপ নামের ওই বহুতল ভবনেই রয়েছে স্টেট ব্যঙ্ক অব ইন্ডিয়ার উত্তরবঙ্গের আঞ্চলিক কার্যালয়। ঘটনার জেরে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ছুটির দিন থাকায় এলাকার বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ থাকলেও পথচলতি সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। হিলকার্ট রোডের একটি অংশে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। তিনটি দমকলের ইঞ্জিন প্রায় ঘন্টা খানেকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছান উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব, পুলিশ কমিশনার জগমোহনও। তবে হতাহতের কোনও খবর নেই।

পুলিশ এবং দমকল সূত্রের খবর, ভবনের চারতলায় ব্যাঙ্কের রেকর্ড রুম, ক্যান্টিন ও পরিত্যক্ত জিনিসের স্তুপ ছিল। মার্চ মাসে ব্যাঙ্কের আর্থিক বছরের শেষ হওয়ায় এদিন ছুটির দিনেও পাঁচজন কর্মী ব্যাঙ্কের কর্মীরা তিনতলায় কাজ করছিলেন। তাঁরাও প্রথম চার তলায় ক্যান্টিন এলাকায় আগুন দেখতে পানয়

তবে কীভাবে আগুন লেগেছে তা নিয়ে ধন্দে দমকল থেকে পুলিশ কর্তারা। দমকলের শিলিগুড়ির স্টেশন ম্যানেজার বিষ্ণুপ্রসাদ ধরে’র অভিযোগ, “ছয়তলা ভবনটিতে কোথাও অগ্নিনির্বাপনের কোনও ব্যবস্থা ছিল না। তা থাকলে আরও আগে আগুন আয়ত্বে আনা যেত। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”


ঘটনাস্থলে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। ডেপুটি মেয়র সবিতা অগ্রবাল।

সেই সঙ্গে শট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছিল কী না তাও দেখা হচ্ছে বলে দমকলের তরফে জানানো হয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ম মন্ত্রী বলেন, “আমি কর্মিসভায় ব্যস্ত ছিলাম। খবর পেয়ে আসি। কীভাবে আগুন লেগেছে তা জানে ত পুলিশকে তদন্ত করতে বলেছি।” আর পুলিশ কমিশনার বলেন, “কীভাবে আগুন লেগেছে তা খতিয়ে দেখা হবে।”

স্থানীয় বাসিন্দা এবং ব্যবসায়ীরা জানান, ওই বহুতলে ব্যাঙ্ক ছাড়াও প্রচুর দোকানপাট, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে বড়মাপের ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা ছিল। তার উপরে ব্যাঙ্কের ক্যান্টিনে গ্যাস সিলিন্ডারও ছিল। যদিও দমকল কর্মীরা দ্রুত তিনটি সিলিন্ডার বার করে নিয়ে আসেন। দমকল কর্মীরা জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টা নাগাদ চার ক্যান্টিন চত্বর থেকেই আগুন লাগে।

সেই সময় তিনতলায় কাজ করছিলেন ৫ জন ব্যাঙ্ক কর্মী। তার মধ্যে ছিলেন সাব ব্রাঞ্চের চিফ ম্যানেজার নবীন কুমার দাস। তিনিই আগুন দেখে প্রথম দমকলে খবর দেন। ১৫ মিনিটে দমকলের তিনটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে যায়।


ঘটনাস্থলে ডেপুটি মেয়র সবিতা অগ্রবাল।

নবীনবাবু বলেন, “আমি কাজের ফাঁকে বাইরে বেরিয়ে আগুনের ফুলকি দেখতে পাই। ভয় পেয়ে আঁতকে উঠি। সঙ্গে সঙ্গে দমকলকে ফোন করি। সময়মত দমকল এসে পড়াতে রক্ষা পাওয়া গিয়েছে।” পরে খবর পেয়ে আসেন, স্টেট ব্যঙ্ক অব ইন্ডিয়ার শাখার চিফ ম্যানেজার দাওয়া তেনজিং শেরপা। তিনি বলেন, “আমি বিকাল ৫ টা পর্যন্ত ব্যাঙ্কে কাজ করে গিয়েছি। ওই তলায় পুরানো কাগজপত্র, ভাঙা আসবাবপত্র থাকে। তবে কি ক্ষতি হয়েছে তা এখনও বুঝতে পারছি না। আজ, সোমবার সকাল থেকে সব খতিয়ে দেখা হবে।”

পুলিশ সূত্রের খবর, ভবনটির ভাড়া নিয়ে ব্যাঙ্কের সঙ্গে ভবনের অন্যতম মালিক হুকুমচাঁদ অগ্রবাল আইনি লড়াই রয়েছে। সেই কারণে ভবনের সংস্কারের কাজও ঠিকঠাক হয়নি বলে অভিযোগ।

ছয়তলার ওই সুবিশাল ভবনটির অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থাও করা হয়নি বলে অভিযোগ। যদিও এর দায় ব্যাঙ্কের উপর চাপিয়েছেন হুকুমচাঁদবাবু। তিনি বলেন, “ব্যাঙ্কের চারতলায় ক্যান্টিনে রান্না হয়। হিটার, গ্যাসও ব্যবহার হয়। ব্যাঙ্কের শাখাটিও ভবনটির অধিকাংশ অংশ নিয়ে রয়েছে। তাই ওদেরই অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা করা উচিত ছিল। আর যে করিডোরের সামনে আগুন লেগেছে, তাতে জরুরিকালীন ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু ব্যঙ্ক কর্তপক্ষ তা বন্ধ করে রেখেছিল।”

যদিও এ বিষয়ে কিছু বলতে চাননি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। ঘটনার পর এলাকায় যান সিপিএমের স্থানীয় কাউন্সিলর কমল অগ্রবাল। তিনি বলেন, “কীভাবে কী হল তা দমকল পুলিশের দেখা উচিত। নইলে এই ধরণের বহুতলে আগুন ধরলে বিরাট ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।”

ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

fire high rise siliguri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy