বাল্মীকি অম্বেডকর যোজনা প্রকল্পে পাওয়া বাড়ি বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বাসিন্দাদের একাংশের বিরুদ্ধে। অনেকে আবার সরকারি প্রকল্পে পাওয়া ওই বাড়ি ভাড়া দিচ্ছেন বহিরাগতদের। এমনই ঘটনা নজরে এসেছে শিলিগুড়ির চম্পাসারি গ্রাম পঞ্চায়েতের সুকান্তপল্লি এলাকায়।
এলাকার খাস জমিতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসকারী গরিব পরিবারের বাসিন্দাদের ওই সরকারি প্রকল্পে বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল ২০০২ সালে। সরকারি জমিতে প্রকল্পের টাকায় ওই বাড়ি তৈরি। সে কারণে নিয়ম মতো যাঁরা প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন তাঁরা ওই বাড়ি কাউকে বিক্রি করতে বা ভাড়া দিতে পারেন না। অথচ তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দেদার অনিয়ম চললেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ভোট বাক্সের দিকে তাকিয়েই এ ব্যাপারে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না বলে অভিযোগ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত, ২০ ফেব্রুয়ারি সুকান্তপল্লির ওই প্রকল্পের ‘সি’ ব্লকে ৫১ নম্বর ঘরের বাসিন্দা রিনা তামাংয়ের ঘর থেকে আসবাব-সহ জিনিসপত্র তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে এলাকার অপর এক বাসিন্দার বিরুদ্ধে। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। ওই ঘটনা থেকেই তখন জানা যায়, প্রকৃতপক্ষে রিনাদেবী প্রকল্পে কোনও ঘরই পাননি। অধীর দে নামে এক ব্যক্তি প্রকল্পে ওই ঘরটি পেয়েছিলেন। তিনি পরবর্তীতে অন্য এক ব্যক্তির কাছে বাড়ি বিক্রি করে দেন। তাঁর কাছ থেকে রিনাদেবীদের ওই ঘর নেন।
প্রকল্পে মূল যাঁরা ঘর পেয়েছিলেন তাঁদের অনেকেই যে অন্যদের কাছে বাড়ি বিক্রি করে চলে গিয়েছেন ওই অভিযোগ স্বীকার করেন বর্তমান বাসিন্দাদের একাংশই। তাঁদেরই কয়েকজন জানান, প্রথম দফায় প্রকল্পে ২৫৯ টি ঘর তৈরির কথা ঠিক হয়। পরে আরও অনেক বাসিন্দা ঘর পেতে দাবি তুললে আবেদনকারীর সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়ায় ২৯৩ জন। ঘর বিলি নিয়ে এর পরেই দুর্নীতি শুরু হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগ ওঠে ঘর পাওয়ার ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেনেরও। প্রকল্পে ঘর পাওয়ার তালিকায় নাম নেই এমন অনেককে টাকার বিনিময়ে ঘর পাইয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। অথচ তালিকায় নাম থাকলেও অন্তত ৭০ জন ঘর পাননি বলে দাবি বাসিন্দাদের একাংশের।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “আগের সরকারের সময় ওই প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে বলে শুনেছি। সে সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান থাকার সময় ২০০২ সালে ওই প্রকল্প গড়ে ওঠে। অশোকবাবু বলেন, “অনেকেই বাড়ি বিক্রি করে চলে গিয়েছেন। কিন্তু নিয়ম মতো ওই বাড়ি এ ভাবে বিক্রি করা যায় না বা ভাড়া দেওয়া যায় না। আমাদের সময় এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবাও হয়েছিল। ঠিক হয়েছিল যাঁরা প্রকৃত প্রার্থী নন তাদের তুলে দেওয়া হবে। তবে শেষ পর্যন্ত তা করা যায়নি। গরিব বাসিন্দাদের তোলার ক্ষেত্রে সমস্যাও রয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy