এক বছর বেহাল থাকার পর সম্প্রতি উত্তর দিনাজপুরের রুপাহার থেকে ডালখোলা পর্যন্ত ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ৬০ কিলোমিটার রাস্তা মেরামতির কাজ শেষ করেছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। সেই মেরামতির কৃতিত্ব কার? লোকসভা নির্বাচনের মুখে সেই প্রশ্নে কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে তরজা শুরু হয়েছে। দু’পক্ষই তাঁদের উদ্যোগে জাতীয় সড়ক মেরামতির কাজ হয়েছে বলে দাবি করে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছে। স্থানীয় স্তরে কংগ্রেস ইস্তাহার প্রকাশ করে তার প্রচার করছে। পিছিয়ে নেই সিপিএমও।
গত বছরের এপ্রিল থেকে চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত রূপাহার থেকে ডালখোলা পর্যন্ত জাতীয় সড়ক বেহাল ছিল। জাতীয় সড়কে অসংখ্য গর্ত ও খানাখন্দের পাশাপাশি অনেক জায়গায় পিচের চাদর উঠে গিয়ে তা যেন ‘চষা জমি’তে পরিণত হয়। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় সড়কে যানজট ও দুর্ঘটনার জেরে যাত্রীদের দুর্ভোগে পড়া নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়ায়। বাস, ট্রাক ও ট্রেকার-সহ বিভিন্ন গাড়ি প্রতিদিন বিকল হয়ে পড়ায় পরিবহণ মালিকেরা লোকসানের মুখে পড়েন। সময়মতো পণ্য আনা-নেওয়ার কাজ করতে না পেরে ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির মুখে পড়েন।
জাতীয় সড়ক মেরামতির দাবিতে গত মে থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকায় একাধিকবার পথ অবরোধ করে সিপিএম সহ ব্যবসায়ী ও পরিবহণ মালিকদের বিভিন্ন সংগঠন। রায়গঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত একাধিক বার মালদহ ও কলকাতায় গিয়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত সড়ক মেরামতি করারও দাবি জানান। এরপরেই গত নভেম্বরে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সড়ক মেরামতির জন্য ৩৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করেন।
জানুয়ারি মাসে ওই সংস্থাটি সড়ক মেরামতির কাজ শুরু করেন। মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে কাজ শেষ হয়। বিদায়ী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী দীপা দাশমুন্সি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে দিল্লিতে থেকে জাতীয় সড়ক মন্ত্রকের আমলা, মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীকে সমস্যার কথা বুঝিয়ে রীতিমত লড়াই করে সড়ক মেরামতির টাকা বরাদ্দ করাতে বাধ্য করেছি।” তাঁর কথায়, “জাতীয় সড়ক কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ। দেরিতে হলেও আমার উদ্যোগেই জাতীয় সড়ক মেরামতির কাজ শেষ হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারে বাসিন্দাদের এটাই বোঝানো হচ্ছে।”
রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী পবিত্ররঞ্জন দাশমুন্সির দাবি, “দীপাদেবী কেন্দ্রের মন্ত্রী থাকা সত্ত্বেও মাসের পর মাস জেলার জাতীয় সড়ক বেহাল ছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দলের তরফে সমস্যার কথা জানানো হয়। এরপরেই বাসিন্দাদের দুর্ভোগ রুখতে মুখ্যমন্ত্রী জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে চিঠি লেখেন। সেই অনুরোধে সাড়া দিয়েই জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ গত নভেম্বর মাসে সড়ক মেরামতির জন্য টাকা বরাদ্দ করেন।”
দীপাদেবী বলেন, “পবিত্ররঞ্জনবাবু ডাহা মিথ্যা কথা বলছেন। তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারের ভুল জমি অধিগ্রহণ নীতির কারণেই জাতীয় সড়ক মেরামতির কাজ শুরু করতে দেরি হয়েছে।” মুখ্যমন্ত্রী ও দীপাদেবীর নাম না করে রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের বামফ্রন্ট প্রার্থী সিপিএমের মহম্মদ সেলিমের কটাক্ষ, “রাজ্যে পালা বদলের পর দিদি ও বৌদির ঝগড়া চলছেই। সিপিএম টানা আন্দোলন না করলে জাতীয় সড়ক আজও মেরামতি হত না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy