Advertisement
E-Paper

হুমকি, স্কুলে যাওয়া বন্ধ ধর্ষিতার

ধর্ষণের অভিযোগ জানিয়ে থানায় অভিযোগ করেছিল নবম শ্রেণির ছাত্রী। মেডিক্যাল পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমাণও মিলেছে। তার দু’মাস পরেও অভিযুক্ত পিনাকী রায় নামে প্রতিবেশী যুবককে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। উল্টে অভিযুক্তদের হুমকির জেরে স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়েছে তাকে। বার্ষিক পরীক্ষা দিতেও স্কুলে যেতে সাহস করেনি সে। বৃহস্পতিবার মালদহের ডেপুটি পুলিশ সুপার(জেলা) টি ডুকপার সঙ্গে দেখা করে দ্রুত অভিযুক্তের গ্রেফতারের দাবি জানায় মালদহের হবিবপুরের ওই ছাত্রী ও তার পরিবার। ডিএসপি বলেন, “ওই কিশোরীর পরিবারের লোকেরা আমার কাছে এসেছিলেন। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট থানাতে পাঠিয়ে দিয়েছি।”

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৩৮

ধর্ষণের অভিযোগ জানিয়ে থানায় অভিযোগ করেছিল নবম শ্রেণির ছাত্রী। মেডিক্যাল পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমাণও মিলেছে। তার দু’মাস পরেও অভিযুক্ত পিনাকী রায় নামে প্রতিবেশী যুবককে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। উল্টে অভিযুক্তদের হুমকির জেরে স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়েছে তাকে। বার্ষিক পরীক্ষা দিতেও স্কুলে যেতে সাহস করেনি সে। বৃহস্পতিবার মালদহের ডেপুটি পুলিশ সুপার(জেলা) টি ডুকপার সঙ্গে দেখা করে দ্রুত অভিযুক্তের গ্রেফতারের দাবি জানায় মালদহের হবিবপুরের ওই ছাত্রী ও তার পরিবার। ডিএসপি বলেন, “ওই কিশোরীর পরিবারের লোকেরা আমার কাছে এসেছিলেন। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট থানাতে পাঠিয়ে দিয়েছি।”

ওই ছাত্রী ও তার পরিবারের অভিযোগ, ধর্ষণে অভিযুক্ত যুবক তৃণমূলের একজন স্থানীয় কর্মীর আত্মীয় হওয়ায় পুলিশ তাঁকে ধরছে না। পুলিশসূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৬ সেপ্টেম্বর বাড়িতে একা থাকার সুযোগ নিয়ে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে ওই যুবক। ওই ছাত্রীর বাবা বাইরে শ্রমিকের কাজ করেন। মা গৃহবধূ। ঘটনার সময় অন্য কাজে বাইরে গিয়েছিলেন তিনি। ধর্ষণের কথা কাউকে জানালে খুন করা হবে বলে হুমকি দেওয়ায় প্রথমে ভয়ে ওই কিশোরী মুখ খোলেনি। পরে মেয়ের অস্বাভাবিক আচরণ দেখে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মাকে সব জানায় ওই কিশোরী। স্থানীয় সূত্রের খবর, ঘটনার কথা জানাজানি হলে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার জন্য সালিশি সভাও বসানো হয়। কিন্তু তার ফয়সালায়য় সন্তুষ্ট না হয়ে ওই কিশোরীর পরিবার ১৫ সেপ্টেম্বর হবিবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযোগ দায়ের করার ওই কিশোরীকে মেডিক্যাল টেস্টের জন্য পাঠানো হয়েছিল। তাতে ধর্ষণের প্রমাণ মেলে বলে খবর। অভিযোগের পরেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। এমনকী অভিযুক্ত যুবককে এলাকায় ঘুরে বেড়াতে দেখা গেলেও পুলিশ ধরেনি, অভিযোগ আক্রান্তের পরিবারের। হবিবপুর থানার আইসি মোয়াজ্জেম হোসেন অবশ্য বৃহস্পতিবার বলেন, “অভিযুক্ত পলাতক। তাকে খোঁজা হচ্ছে।”

ছাত্রীর পরিবার অবশ্য জানিয়েছে, মামলা উঠিয়ে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে চাপ ও হুমকি দিচ্ছে অভিযুক্ত যুবকের পরিবার। অভিযুক্তের ভাই গত মাসের গোড়ায় ওই ছাত্রী ও তার মাকে মারধর করে। এমনকী রাস্তায় পেলে খুন করা হবে বলেও হুমকি দেয়। ঘটনার পর থেকে স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে ওই কিশোরী। সে বলে, “সেই দিনের পর থেকে আমাকে বাইরে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। মা-বাবা বাড়িতে থাকে না বলে পাহারা দিয়ে স্কুলে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এমনকী বার্ষিক পরীক্ষাও দেওয়া হয়নি।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত পিনাকীর মামা তৃণমূলের কর্মী নদীশ্বর সরকার। বামনগোলা ব্লকের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি সুনীল বর্মন অবশ্য নদীশ্বরবাবু তাঁদের দলের কর্মী নন বলে দাবি করেন। তিনি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। ওই ছাত্রীর আইনজীবী গোপাল সরকার বলেন, “একের পর এক হুমকি সত্বেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করছে না। বড় কোনও অঘটন ঘটে গেলে দায় কে নেবে?”

ধর্ষণে অভিযুক্তকে ধরার ব্যাপারে পুলিশের গড়িমসি চলছে কোচবিহারের শীতলখুচিতেও। সেখানে এক বধূকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করলেও, গত মঙ্গলবার তৃণমূল কর্মীরা তাকে ভ্যান থেকে ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগ। তারপরে ওই অভিযুক্ত, তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ প্রকাশ বর্মন, প্রকাশ্য বাজারে আক্রান্ত মহিলার স্বামীকে মারধর করে হুমকি দিলেও পুলিশ তাকে ‘নিখোঁজ’ বলে দাবি করছে। বাসিন্দাদের ক্ষোভ, পুলিশের একাংশের সঙ্গে যোগসূত্র থাকাতেই শীতলখুচির পঞ্চারহাটের ওই অভিযুক্তেরা পুলিশি হানার খবর আগেভাগে পেয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার অভিযোগকারিণী নিজে শীতলখুচি থানায় গিয়ে তাঁর স্বামীকে মারধরের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি বলেন, “পুলিশের উপরে হামলার পরেও কেন কেউ গ্রেফতার হচ্ছে না আমরা বুঝতে পারছি না।” প্রকাশের দাদা তৃণমূল নেতা উত্তম বর্মন অবশ্য এ দিন দাবি করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে।

এদিকে, হলদিবাড়িতে ধর্ষণের মামলায় চার্জশিট পেশের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব। গত ১৭ অক্টোবর হলদিবাড়ি থানায় ওই অভিযোগ দায়ের হয়। অভিযোগ, এলাকার তৃণমূল নেতা তথা কলেজের পরিচালন সমিতির সদস্য শহিদুল আলম ওরফে কমল প্রধানের বিরুদ্ধে চাকরির টোপ দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ করেন এক ছাত্রী। কী ভাবে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে তা গোপনে নিজের মোবাইলে ভিডিও রেকর্ডিং করে পুলিশের কাছে জমাও দেন ছাত্রীটি। সম্প্রতি ছাত্রীটিকে টাকা দিয়ে মামলা তোলার চাপ দেওয়ার অভিযোগ ওঠায় পুলিশ নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোরদার করেছে।

rape threat malda
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy