কিশোরীকে গণধর্ষণের ঘটনা মিটিয়ে নেওয়ার জন্য সালিশি ডাকার ব্যাপারে এ বার নাম জড়াল তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যেরও।
গত ১৯ নভেম্বর হলদিবাড়ির বছর ষোলোর এক কিশোরীকে বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে মাদক মিশ্রিত পানীয় খাইয়ে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে তিন যুবকের বিরুদ্ধে। বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার জন্য সালিশি ডাকা হয় বলে অভিযোগ করেন কিশোরীর মা। শুক্রবার তিনি থানায় অভিযোগ জানালে কৃষ্ণপদ রায় এবং খোকন সরকার নামে দু’জনকে ধরা হয়েছে। একজন এখনও ফেরার। রবিবার ধৃতদের তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে মেখলিগঞ্জ আদালত। তারা একটি দোকানে কাজ করে বলে জানা গিয়েছে।
মেয়েটির মায়ের অভিযোগ, এত দিন অভিযুক্তদের পরিবার থেকে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। পুলিশে অভিযোগ করতে বাধা পাচ্ছিলেন তিনি। ধৃত কৃষ্ণপদর মা জনতা সরকার পাল্টা দাবি করেন, “তিনটে ছেলেকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হয়েছে।”
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছিল, ঘটনার পরে স্থানীয় এক এসইউসি নেতা ওই সালিশি সভা ডেকেছিলেন। তবে রবিবার গ্রামবাসীদের একাংশ জানিয়েছেন, স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য সুভাষ রায় ও ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা প্রতিম রায়ও বিষয়টিতে জড়িত ছিলেন। এসইউসির স্থানীয় নেতা গোপাল বর্মন বলেন, “এ বিষয়ে তৃণমূলের সুভাষ রায়ই আমাদের জানিয়েছিলেন। তবে কোনও সালিশি সভা হয়নি।” অন্য দিকে, সুভাষবাবুর দাবি, “আমি কোনও সালিশি সভা ডাকিনি। যে গ্রামের কথা বলা হয়েছে, সেখানে আমি থাকিও না। কাজের সুবাদে গিয়েছিলাম। আমার সঙ্গে কিশোরী বা তার মায়েরও কোনও কথা হয়নি।” প্রতিমবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দু’মিনিট পরে কথা বলবেন বলে মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেন।
কিশোরীর বিধবা মায়ের অভিযোগ, ১৯ তারিখ রাতে তিনি চিনি আনতে পাশের একটি বাড়িতে গিয়েছিলেন। সে সময়েই কাজ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে এক যুবক তাঁর মেয়েকে ডেকে নিয়ে যায়। নির্জন এলাকায় নিয়ে গিয়ে তিন যুবক মিলে তাকে ধর্ষণ করে। তার পরে তাকে একটি গর্ভনিরোধক ওষুধও খাওয়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ কিশোরীর মায়ের। তিনি বলেন, “ঘটনার পরে জোর করে আমার মেয়েকে কোনও ওষুধ খাওয়ানো হয়। তারপর থেকে ও অসংলগ্ন আচরণ করছে।”
মেয়েটির পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দশেক আগে ওই কিশোরীর বাবা মারা গিয়েছেন। সে দীর্ঘদিন ধরেই পরিচারিকার কাজ করে। বছরখানেক আগে সে জলপাইগুড়ির একটি বাড়িতে কাজে যোগ দেয়। যদিও পুজোর পরে সে আর কাজে যায়নি।
হলদিবাড়ি থানার আইসি সৌম্যজিত রায় বলেন, “ধৃতদের জেরা করা হচ্ছে। ফেরার অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy