এই সেই বুদিপুকুর। —নিজস্ব চিত্র।
একশো দিনের প্রকল্পে পুকুর ও রাস্তায় মাটি কাটার কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠল সিপিএম ও বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। দক্ষিণ দিনাজপুরে গঙ্গারামপুর ব্লকের উদয় পঞ্চায়েতের ঘটনা। দুইমাস আগে এলাকার চালুন্দা গ্রামে ১০০ দিনের কাজে একটি পুকুরের মাটি কাটা ও মাটির রাস্তা তৈরি হয়। এই প্রসঙ্গে গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা জনাব আলির অভিযোগ, “ভুয়ো হিসাব দেখিয়ে পঞ্চায়েতের ক্ষমতাসীন নেতৃত্ব প্রায় তিন লক্ষ টাকা নয়ছয় করেছেন। সোমবার বিডিও-র কাছে এই আর্থিক দুর্নীতির ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে।”
জনাব আলির দাবি, পিয়াসকুড়ি ও বুদিপুকুর নামে ব্যক্তিগত মালিকানার দু’টি পুকুর আছে। পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ বুদিপুকুরের ধারে পিয়াসকুড়ি পুকুর সংস্কার হয়েছে বলে দাবি করে বোর্ড ঝুলিয়েছেন। অথচ ওই দুটি পুকুরের কোনওটাতেই একশো দিনের মাটি কাটার কাজ হয়নি। পুকুরের পাশে রাস্তায় মাটি কাটার ভুয়ো হিসাব দেখানো হয়েছে। বিরোধী তৃণমূলের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করে সংশ্লিষ্ট উদয় অঞ্চলের সিপিএমের প্রধান কারিজা বিবি বলেন, “চালুন্দা সংসদে পুকুর সংস্কারে ৮৬৩৯১ টাকা খরচ ধরা হয়েছিল। দু’মাস আগে ওই কাজ হলেও সে সময় তৃণমূল কেন অভিযোগ করেনি। এখন নয়ছয়ের অভিযোগ তুলেছে।” প্রধানের দাবি, নিয়ম মেনে ১০০ দিনের কাজে পুকুর ও রাস্তার মাটি কাটা হয়েছে। শ্রমিকদের মজুরি মেটানো হয়েছে। তদন্তে কোনও আপত্তি নেই পঞ্চায়েতের বিজেপির উপপ্রধান স্বরূপ চৌধুরীর। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, “পুকুরের নামে হেরফের হতে পারে। তবে কাজ হয়েছে। কোনও অনিয়ম হয়নি।” গঙ্গারামপুরের বিডিও বিশ্বজিৎ সরকার বলেন, “অভিযোগ পেয়ে বিভাগীয় অফিসারকে তদন্তে পাঠানো হয়। তিনি দেখে এসেছেন। রিপোর্ট দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ দিন বুদিপুকুরের মালিক মুন্না বারোয়ারের স্ত্রী প্রাচ্য বারোয়ার বলেন, “১০০ দিনের কাজে পুকুরে মাটি কেটেছি। সেই মাটি কাচা রাস্তায় ফেলা হয়। অভিযোগের বিষয়ে জানা নেই।” স্থানীয় মোনাব্বর আলি বলেন, “এক সময় বুদিপুকুর ডোবা ছিল। পঞ্চায়েত থেকে ডোবার মাটি কেটে রাস্তায় ফেলা হয়। পরে আবার ১০০ দিনের প্রকল্পে মাটি কাটা হয়েছে শুনছি।” পেয়াজকুড়ি পুকুরের মালিক রোশেন আলি বলেন, “পুকুরে মাটি কাটার জন্য আমি পঞ্চায়েতে আবেদন করিনি। পুকুরে আমি মাছ চাষ করি।”
উদয় পঞ্চায়েত ১৭ আসন বিশিষ্ট। গতবছর পঞ্চায়েত ভোটে সিপিএম ৮, বিজেপি ২ এবং ৭টি আসন তৃণমূল পায়। সিপিএম-বিজেপি জোট করে পঞ্চায়েতে ক্ষমতা দখল করে। সিপিএম সদস্যদের অভিযোগ, বর্তমান বোর্ডকে সরাতে তৃণমূল দুই মাস আগের ওই পুকুর, রাস্তা সংস্কারের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ করে। অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল সদস্যদের দাবি, পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ কাজের খতিয়ান তুলে ধরে বুদিপুকুরের ধারে যে বোর্ড ঝুলিয়েছে তাতে হিসাব দেখানো হলেও কত শ্রম দিবস তৈরি হয়েছে তা লেখা নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy