Advertisement
E-Paper

লরিতে রাশ পড়তেই মাল খালাসে কোপ

লরি-ট্রেলারের আনাগোনায় লাগাম পরানো শুরু হয়ে গিয়েছে। কলকাতা বন্দরে পণ্য ওঠা-নামার খতিয়ানে তার প্রভাব পড়তেও দেরি হল না। তিন দিনেই খালাসের বহর চোখে পড়ার মতো কমেছে বলে বন্দর-কর্তৃপক্ষের অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৫৪

লরি-ট্রেলারের আনাগোনায় লাগাম পরানো শুরু হয়ে গিয়েছে। কলকাতা বন্দরে পণ্য ওঠা-নামার খতিয়ানে তার প্রভাব পড়তেও দেরি হল না। তিন দিনেই খালাসের বহর চোখে পড়ার মতো কমেছে বলে বন্দর-কর্তৃপক্ষের অভিযোগ।

যান-সমস্যা মোকাবিলার উদ্দেশ্যে কলকাতা পুলিশ সকাল আটটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত বন্দরে কোনও লরি বা ট্রেলার ঢুকতে দিচ্ছে না। নিষেধাজ্ঞাটি বলবৎ হয়েছে গত শনিবার। কলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট (কেপিটি)-এর হিসেবে, এর জেরে গত তিন দিনে গড়ে পাঁচশোটি করে কন্টেনার নামানো (আনলোড) যায়নি। পাশাপাশি অভিযোগ, ডকের ভিতরে দিনভর অন্তত সাড়ে তিনশো ট্রেলার-লরি দাঁড়িয়ে থাকায় মাল খালাসের কাজ ঠিকঠাক করা যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে তিন দিনে পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে কেপিটি’র দাবি।

যদিও কলকাতা পুলিশ বা রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত বদলের কোনও লক্ষণ এখনও নেই। যান-নিষেধাজ্ঞা রদের জন্য বন্দর-কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েছেন। অন্য দিকে যানজট কমানোর লক্ষ্যে সরকার তথা পুলিশের তরফে কেপিটি’কে কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। নবান্নের ইঙ্গিত, বন্দর কর্তৃপক্ষ সেই পরামর্শ মেনে কাজ করলে এবং যানজট কমলে তবেই কিছুটা নরম মনোভাব দেখানো যেতে পারে।

অর্থাৎ, সঙ্কট সুরাহার আশু সম্ভাবনা নেই। প্রমাদ গুনছে বন্দর ব্যহারকারী ব্যবসায়ী মহল। তিন দিনেই পণ্য খালাসের এমন দশা দেখে তাদের আশঙ্কা, মাসের শেষে পরিস্থিতি রীতিমতো ঘোরালো হয়ে উঠবে। কেপিটি-র এক সূত্রের কথায়, ‘‘মাল নিয়ে কলকাতায় ভেড়ার পরিকল্পনা ছিল যে সব জাহাজের, তারা হয়তো
এখন পারাদ্বীপ বা ধামড়ায় গিয়ে নোঙর করবে। কলকাতার লোকসান বাড়তে থাকবে।’’

বন্দর তল্লাটে যান নিয়ন্ত্রণের পুলিশি নির্দেশ জারি হয়েছে গত ২০ সেপ্টেম্বর। কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের জারি করা বিজ্ঞপ্তিটিতে বলা হয়েছে, ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে সকাল আটটা ও রাত দশটার মধ্যে বন্দর এলাকায় কোনও লরি বা ট্রেলার ঢুকতে পারবে না। বিদ্যাসাগর সেতু, খিদিরপুর রোড, তারাতলা রোড, সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোড, গার্ডেনরিচ রোড, হাইড রোড, কোলবার্থ রোড ও রিমাউন্ট রোডে ভারী লরি, ট্রেলার চলাচল করবে শুধুমাত্র রাত দশটার পরে। ‘সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত।’— জানিয়েছেন সিপি।

অপর পক্ষে বন্দর-কর্তৃপক্ষ দেখাচ্ছেন ব্যবসার যুক্তি। ওঁদের তথ্য অনুযায়ী, কলকাতা বন্দরে রোজ গড়ে ১৪০০ ট্রেলার ও ৬০০ লরি আসে। এর দুই-তৃতীয়াংশ দিনের বেলায় মাল খালাসের কাজে লাগে। যেটা এখন একেবারে বন্ধ। কেপিটি’র আশঙ্কা, দিনের বেলায় লরি-ট্রেলারে মাল তুলে গন্তব্যে পাঠানো না গেলে এক সময় হয়তো কলকাতায় জাহাজ আসাই বন্ধ হয়ে যাবে।

উপায় কী?

কলকাতা বন্দরের ডেপুটি চেয়ারম্যান এস বালাজি অরুণকুমার মঙ্গলবার বলেন, মুম্বই ও চেন্নাই বন্দর এলাকাতেও যানজট ইত্যাদির সমস্যা রয়েছে। কিন্তু সেখানকার পুলিশ বন্দর ও বাসিন্দা, দুয়েরই স্বার্থ দেখে। ওঁর বক্তব্য: মুম্বই-চেন্নাই বন্দরে বিভিন্ন ধরনের যান চলাচলের জন্য পুলিশ আলাদা আলাদা লেন করে দিয়েছে। একটা লেন দিয়ে যাত্রিবাহী গাড়ি চলে। অন্যটা দিয়ে বন্দরের মালবাহী লরি-ট্রেলার। একই ভাবে কলকাতাতেও সুরাহা সম্ভব বলে মনে করছেন ওই বন্দর-কর্তা।

নবান্ন অবশ্য আপাতত তেমন কিছু ভাবছে না।

Port Nabanna police Lorry Products
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy