এই ফ্ল্যাটেই থাকতেন রামুয়া (ইনসেটে)। —নিজস্ব চিত্র
গভীর রাতে খড়দহের ফ্ল্যাটে ঢুকে হাওড়ার কুখ্যাত দুষ্কৃতী রামুয়াকে গুলি করে খুন করল দুষ্কৃতীরা। আট-দশ জনের একটি দুষ্কৃতী দল রামুয়ার ফ্ল্যাটে ঢুকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে পালিয়ে যায়। পানিহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে রামুয়াকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, অপরাধ জগতে পুরনো শত্রুতার জেরেই খুন হয়েছেন রামুয়া।
গত নভেম্বর মাসে একটি মামলায় জামিন পাওয়ার পর খড়দহ থানা এলাকার অমরাবতীর অরবিন্দ সরণিতে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করে থাকছিলেন রামুয়া। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী, কলেজ পড়ুয়া ছেলে এবং পাঁচ বছরের মেয়ে। চারতলার একটি ফ্ল্যাটবাড়ির উপরের তলায় থাকতেন তাঁরা। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ ৮-১০ জন দুষ্কৃতী নীচে থেকে রামুয়ার ফ্ল্যাটের কলিং বেল বাজায়। দরজা খুলতে রামুয়ার ছেলে নীচে নেমে আসে। রামুয়ার ছেলে পুলিশকে জানিয়েছেন, সদর দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে দু’জন সশস্ত্র দুষ্কৃতী তাঁর মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে সদর দরজার কাছেই দাঁড় করিয়ে রাখে। বাকিরা উপরে উঠে যায়।
রামুয়ার স্ত্রী জানান, ‘‘বেল বাজানো শুনে আমরা ভেবেছিলাম, ছেলে দরজা খুলে দিয়ে নীচে থেকে উপরে এসেছে। তাই দরজা খুলে দিই। সঙ্গে সঙ্গে ৫-৬ জন দুষ্কৃতী হুড়মুড়িয়ে ঘরে ঢুকে পডে়। আমার স্বামী তখন বিছানায় শুয়ে ছিল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁকে বিছানাতেই চেপে ধরে। খুব কাছ থেকে পর পর দু’রাউন্ড গুলি করে। তারপর দুষ্কৃতীরা হেঁটে গলির মুখ পর্যন্ত চলে যায়।’’ প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ মনে করছে, ওই গলির মুখে একটি গাড়ি রাখা ছিল। সেই গাড়িতেই চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রামুয়াকে পানিহাটি স্টেট জেনারেল নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতাল থেকেই খড়দহ থানায় খবর দেওয়া হয়।
ওই আবাসনটি তৈরি হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা কাঞ্চন দে-র জমিতে। তিনিও রামুয়ার ফ্ল্যাটের নীচের তলাতেই থাকেন। তিনি বলেন, ‘‘রাতে আমরা কোনও গুলির আওয়াজ পাইনি। ওই পরিবারটি ৬-৭ মাস আগে এখানে এসেছেন। বাড়িতে মাঝেমধ্যেই বাইরের লোকজন আসতেন। তবে যিনি মারা গিয়েছেন, তিনি যে ওঁর স্বামী, আমরা সেটা জানতামনা।’’
আরও পড়ুন: বিষে খুন! এনআরএসে দেহ ১৬ কুকুরছানার
আরও পড়ুন: ‘কুমারী মেয়ে ‘সিল্ড বটল’ বা ‘সিল্ড প্যাকেট’-এর মতো!’, বিতর্কিত পোস্ট শিক্ষকের
পুলিশ সূত্রে খবর, মধ্য হাওড়া এলাকায় একাধিক খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত এই রামুয়া। কয়েক বছর আগে মুন্না সিংহ নামে এক দুষ্কৃতীকে গলা কেটে খুন করে তাঁর মাথা দিয়ে ফুটবল খেলে আরও কুখ্যাত হয়ে উঠেছিল রামুয়া। ওই ঘটনায় এলাকায় এবং পুলিশ মহলে ব্যাপক তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল। তবে পুলিশের একটি সূত্রে খবর, সম্প্রতি অপরাধ জগৎ থেকে সরে আসার চেষ্টা করছিলেন রামুয়া। সেই কারণেই হাওড়া ছেড়ে খড়দহে থাকতে শুরু করেছিল। তবে প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, রামুয়া স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাইলেও অপরাধ তাঁর পিছু ছাড়েনি। পুরনো শত্রুতার জেরেই খুন করা হয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের আরও ধারণা, খুনের পিছনে হাওড়ারই কোনও দুষ্কৃতী গোষ্ঠী রয়েছে।
(দুই চব্বিশ পরগনা, হাওড়া ও হুগলি, নদিয়া-মুর্শিদাবাদ, সহ দক্ষিণবঙ্গের খবর, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা খবর, বাংলার বিভিন্ন প্রান্তের খবর পেয়ে জান আমাদের রাজ্য বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy