Advertisement
E-Paper

সারদা তদন্তে অন্তিম লগ্নের জেরা পুলিশকে

ডাকা হবে সেই সব অফিসারদের, যাঁরা রাজ্য সরকারের করা মামলার তদন্তকারী অফিসার ছিলেন। এমন প্রায় ৫০ জন অফিসারের তালিকা তৈরি করেছে সিবিআই।

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:১৫

সারদা তদন্ত এ বার গুটিয়ে আনতে চায় সিবিআই। আর সেই কারণেই শেষ পর্যায়ে এসে রাজ্য পুলিশের অফিসারদের একে একে ডেকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ডাকা হবে সেই সব অফিসারদের, যাঁরা রাজ্য সরকারের করা মামলার তদন্তকারী অফিসার ছিলেন। এমন প্রায় ৫০ জন অফিসারের তালিকা তৈরি করেছে সিবিআই।

শুক্রবার এমনই এক অফিসার শঙ্কর ভট্টাচার্য হাজির হয়েছিলেন সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে। সিবিআই সূত্রের খবর, রাজ্যের করা প্রতিটি মামলা সংক্রান্ত কিছু ব্যাখ্যার প্রয়োজনে ডাকা হচ্ছে এই অফিসারদের। এ দিনও শঙ্করবাবুর কাছে মামলা সংক্রান্ত কিছু বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। প্রয়োজনে পরে আবার তাঁকে ডাকা হতে পারে।

সিট গঠন করে রাজ্যের পুলিশ অফিসারেরা যখন তদন্ত করেছিলেন, তখন সারদার বেশ কিছু তথ্য-প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ উঠেছিল কিছু অফিসারের বিরুদ্ধে। ওই অফিসারদের সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে কি না, তা নিয়ে আপাতত কিছু বলতে নারাজ সিবিআই। তবে এমন অনেক সাক্ষী রয়েছেন, যাঁরা সিবিআইয়ের কাছে তথ্য-প্রমাণ দিয়ে জানিয়েছিলেন যে একই তথ্য-প্রমাণ তাঁরা পুলিশকেও দিয়েছিলেন। প্রশ্ন উঠেছে, যে তথ্য-প্রমাণের উপরে ভিত্তি করে প্রভাবশালীদের গ্রেফতার করেছিল সিবিআই, সেই একই

তথ্য-প্রমাণ পেয়েও রাজ্য পুলিশ কেন তাদের এক বার জেরাও করল না কেন?

সারদায় অন্যতম অভিযুক্ত এক সাংসদ সারদা তদন্তের সঙ্গে যুক্ত পুলিশের একাংশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন। সেই অভিযোগ পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্সকে তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সিবিআই যে হেতু সারদা নিয়ে

তদন্ত করছে তাই কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স থেকে সেই তদন্তভার সম্প্রতি সিবিআইয়ের হাতেই ন্যস্ত হয়েছে।

এই বছরের শেষে সারদার তদন্ত গুটিয়ে আনার আগে সেই সব অভিযুক্ত অফিসারদের বিরুদ্ধে তারা কোনও ব্যবস্থা নেবেন কি না, তা নিয়েও মুখ খুলতে চাননি তদন্তকারীরা।

শুধু তথ্য-প্রমাণ লোপাটই নয়, রাজ্য পুলিশের একাংশের বিরুদ্ধে সাক্ষী ও অভিযুক্তদের প্রভাবিত করার অভিযোগও উঠেছে। সিবিআইয়ের কাছেও অভিযোগ এসেছে, সারদায় অভিযুক্ত ও সাক্ষীরা সিবিআই ও ইডি-র সামনে যাতে মুখ না

খোলেন, সে জন্য রাজ্য পুলিশের একাংশ এখনও তাঁদের চাপে রেখেছেন। এখনও সারদা নিয়ে বহু মামলা রাজ্য সরকারের হাতে রয়েছে বলেই এটা সম্ভব হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।

অভিযুক্ত ও সাক্ষীদের একাংশের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, রাজ্যের এই মামলাগুলি ছড়িয়ে আছে দার্জিলিং থেকে সুন্দরবনে। জেলে থাকা সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন, তাঁর সহযোগী দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে সেই সব মামলায় কখনও সিউড়ি, কখনও বোলপুর, কখনও উত্তরবঙ্গ, কখনও বর্ধমান, কখনও কাঁথি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এতে তিতিবিরক্ত তাঁরা। সুদীপ্তর আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী ও দেবযানীর আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতার কথায়, ‘‘এ ভাবে তাঁদের হেনস্থা করা হচ্ছে।’’ আইনজীবীদের দাবি, সিবিআই যে চারটি মামলা করে তদন্ত করছে সেখানে সারদায় নয়ছয় হওয়া সমস্ত টাকার পরিমাণই লিপিবদ্ধ রয়েছে। তা হলে আলাদা করে রাজ্য পুলিশের হাতে এই মামলাগুলি রেখে কী লাভ, সে প্রশ্নও তুলেছেন বিপ্লববাবু। অনির্বানবাবুর বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টে গিয়েও সমস্ত মামলা সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছিল।

কিন্তু, তাদের লোকবল কম বলে জানায় সিবিআই। সেই যুক্তি মেনে মামলায় চার্জশিট হওয়া প্রায় ৬৮টি মামলা রাজ্যের হাতেই রেখে দেয় শীর্ষ আদালত।

Saradha Chit Fund Scam CBI Police State Government সিবিআই শঙ্কর ভট্টাচার্য
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy