E-Paper

মুচিপাড়ায় বৃদ্ধাকে খুনে গ্রেফতার ফেরিওয়ালা

যে সিসি ক্যামেরা থেকে সে নিজেকে আড়াল করতে চেয়েছিল, সেই ক্যামেরার ফুটেজ দেখেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। শনিবার ভোরে মগরাহাটের বাড়ি থেকে ময়মুরকে ধরেন লালবাজারের গোয়েন্দারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০২৫ ০৭:৪১
ধৃতের নাম ময়মুর আলি গাজি।

ধৃতের নাম ময়মুর আলি গাজি। —প্রতীকী চিত্র।

প্রথমে ছাতা দিয়ে মুখ আড়াল করে বাড়িতে ঢোকা ও বেরোনো। তার পরে পাশের গলিতে ঢুকে জামাকাপড় বদল। এর পরে শিয়ালদহ স্টেশনে পৌঁছে সেখান থেকে সোজা বাড়ি না গিয়ে বিভিন্ন স্টেশনে ঘুরে তার পরে বাড়ি যাওয়া। মুচিপাড়া থানা এলাকার বাসিন্দা এক বৃদ্ধাকে খুনের পরে পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে এমনই পন্থা নিয়েছিল মগরাহাটের বাসিন্দা ময়মুর আলি গাজি। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। যে সিসি ক্যামেরা থেকে সে নিজেকে আড়াল করতে চেয়েছিল, সেই ক্যামেরার ফুটেজ দেখেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। শনিবার ভোরে মগরাহাটের বাড়ি থেকে ময়মুরকে ধরেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে লুটের আংটি ও চুড়ি। মিলেছে ওই ছাতা এবং ময়মুরের সে দিনের জামাকাপড়ও। সে পেশায় পুরনো জিনিসপত্রের ফেরিওয়ালা।

গত বুধবার মুচিপাড়া থানা এলাকার সার্পেন্টাইন লেনে ৭৬ বছরের বৃদ্ধা নমিতা পালকে বাড়ির ভিতরেই মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে বৃদ্ধাকে শ্বাসরোধ করে খুনের কথা জানানো হয়েছিল। নমিতা বাড়িতে একাই থাকতেন। তিনি বাড়ির কিছু পুরনো জিনিস বিক্রির চেষ্টা করছিলেন। যার জন্য ফেরিওয়ালাদের যাতায়াত লেগে ছিল। তদন্তে নেমে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখতে শুরু করে। তাতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি ছাতা মাথায় দিয়ে ঘটনার দিন সকালে ওই বাড়ির দিকে যাচ্ছে। আবার মিনিট দশেক পরেই বেরিয়ে যাচ্ছে। ফুটেজে দেখা যায়, লোকটি নমিতার বাড়ি থেকে বেরিয়ে পাশের গলিতে ঢুকে জামাকাপড় বদলাচ্ছে। কিন্তু ফুটেজে মুখটা স্পষ্ট ভাবে দেখা যাচ্ছিল না।

পুলিশ জানিয়েছে, জামাকাপড় বদলে সোজা শিয়ালদহ স্টেশনে যায় অভিযুক্ত ময়মুর। তবে সেখান থেকে সোজা মগরাহাটের বাড়িতে যায়নি সে। ট্রেনে চেপে প্রথমে সোনারপুরে যায় ময়মুর। সেখান থেকে বারুইপুর-সহ বিভিন্ন জায়গা ঘুরে মগরাহাটে পৌঁছয়। তদন্তকারীরা ৫০টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ময়মুরকে দেখতে পেলেও তার পরিচয় জানতে পারেননি। পরে স্থানীয়দের সেই ছবি দেখানোয় জানা যায়, সে পুরনো জিনিসপত্র কেনাবেচা করে। মগরাহাটে বাড়ি। এর পরেই মুচিপাড়া থানা ও ডাকাতি দমন শাখার তদন্তকারীরা তাকে এ দিন কাকভোরে গ্রেফতার করেন।

পুলিশের কাছে ময়মুরের দাবি, সে আড়াই মাস ধরে ওই বাড়িতে যাতায়াত করছিল। নমিতা তাঁর কিছু পুরনো আসবাব বিক্রি করতে চাইছিলেন। তার সঙ্গে বৃদ্ধার ভাল সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। বৃদ্ধা যে একা থাকেন, তা-ও জানত সে। এ দিকে, বাজারে ময়মুরের অনেক টাকা দেনা হয়ে গিয়েছিল। সেই টাকা জোগাড় করতেই সে দিন নমিতাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে সে। তার পরে হাতের সামনে যা ছিল, তা নিয়েই বেরিয়ে পড়ে। সেই সঙ্গে ভিতরে থাকা একটি তালা সে বাইরের দরজায় লাগিয়ে দেয়। পুলিশের দাবি, দশ মিনিটের মধ্যে পুরো ঘটনাটি ঘটেছিল।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Muchipara Lalbazar

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy