পুরুলিয়ার আবাসিক স্কুলে প্রথম শ্রেণির পড়ুয়ার রহস্যমৃত্যু। — নিজস্ব চিত্র।
স্কুলে ছুটি পাওয়ার লোভে আবাসিক প্রথম শ্রেণির এক ছাত্রের মাথা পাথর দিয়ে থেঁতলে খুন করার অভিযোগে আটক হল ওই স্কুলেরই অষ্টম শ্রেণির এক পড়ুয়া। ঘটনাটি ঘটেছে পুরুলিয়ার মানবাজার থানার জবলার ঘাসতোড়িয়া সারদা শিশু মন্দির আবাসিক স্কুলে। অভিযুক্তকে আটক করে হোমে পাঠানো হয়েছে।
কারও কাছে সে শুনেছিল, স্কুলে কারও মৃত্যু হলে ছুটি মিলবে হস্টেল থেকে। ছুটির লোভে ‘খুনের’ পরিকল্পনা সাজায় অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া। টার্গেট করে প্রথম শ্রেণির এক পড়ুয়াকে। স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ৩০ জানুয়ারি, মঙ্গলবার বিকেলে হস্টেল সংলগ্ন মাঠে খেলা করতে গিয়েছিল প্রথম শ্রেণির ওই পড়ুয়া। তার পর থেকেই তার আর কোনও খোঁজ নেই। পরে হস্টেল সংলগ্ন পুকুর থেকে ওই শিশুর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। শিশুকে তড়িঘড়ি উদ্ধার করে প্রথমে মানবাজার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং পরে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। শিশুর নাক, মুখে ক্ষতচিহ্ন থাকায় ঘটনাটি খুন হিসাবে সন্দেহ হয় সকলের। পর দিন, ৩১ জানুয়ারি দেহের ময়নাতদন্ত হয় পুরুলিয়া মেডিক্যাল কলেজে। ঘটনার তদন্তের দাবি জানিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয় মৃত শিশুর পরিবার। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তে নেমে ৫ ফেব্রুয়ারি ওই বিদ্যালয়েরই অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রকে আটক করে।
প্রথম শ্রেণির ছাত্রকে খুনের ঘটনায় ৫ ফেব্রুয়ারি, সোমবার মানবাজার থানার পুলিশের হাতে আটক হয় অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ওই বিদ্যালয়ের পড়ুয়া। প্রথমে তাকে পুরুলিয়ার শিমুলিয়া আনন্দমঠ জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের কাছে তোলা হয়। পরে সেখান থেকে হুগলির কল্যাণ ভারতী হোমে পাঠানো হয়। পুলিশ জানিয়েছে, জেরার মুখে অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্র ভেঙে পড়ে প্রথম শ্রেণির পড়ুয়াকে খুনের কথা কবুল করে। জিজ্ঞাসাবাদের পর প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করছে, স্কুলে কেউ মারা গেলে ছুটি পাওয়া যেতে পারে বলে জানতে পেরেছিল অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া। ছুটি পেতেই প্রথম শ্রেণির পড়ুয়াকে সে খুন করে। যদিও ঘটনার তদন্ত চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই স্কুলের আবাসিক প্রথম শ্রেণির পড়ুয়াকে কে খুন করল, তার তদন্তে নেমে আমরা ওই স্কুলেরই অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রকে আটক করেছি। জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করেছে খুনের কথা। প্রাথমিক ভাবে ছেলেটি আমাদের কাছে স্বীকার করেছে যে, ও ভেবেছিল কেউ মারা গেলে ছুটি পাওয়া যাবে। এটা ও আমাদের কাছে স্বীকার করেছে। আমরা বিষয়টির সত্যতা যাচাই করে দেখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy