Advertisement
E-Paper

ধর্ষক-খুনি এক জন না কি একাধিক? বাদী, বিবাদী-সহ সব পক্ষের মতামত শুনে কী নির্দেশ লিখেছেন বিচারক

নির্যাতিতার পরিবার এবং অভিযুক্ত সঞ্জয়ের তরফে আদালতে বার বার দাবি করা হয়, ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা ঘটানো একার পক্ষে সম্ভব নয়। নেপথ্যে একাধিক ব্যক্তি জড়িত। যদিও সিবিআই অন্য যুক্তি দেয়।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:২৯
One or more accused involved in RG Kar case, what was the opinion of Justice Anirban Das

(বাঁ দিকে) সঞ্জয় রায় এবং বিচারক অনির্বাণ দাস (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

আরজি করের মহিলা চিকিৎসক-পড়ুয়াকে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় কি শুধুই সঞ্জয় রায় জড়িত? না কি আরও কেউ? ৯ অগস্ট ঘটনার পর থেকে বার বার বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই প্রশ্নই উঠছে। তদন্ত থেকে শুরু করে বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীনও ‘এক না একাধিক’ এই প্রশ্নই ঘুরেফিরে এসেছে। সোমবার শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস তাঁর রায়ে নিজের পর্যবেক্ষণের কথা জানান। শুধু তা-ই নয়, কোন কোন তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তিনি সেই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন, তা-ও উল্লেখ করেছেন বিচারক দাস।

নির্যাতিতার পরিবার এবং অভিযুক্ত সঞ্জয়ের তরফে আদালতে বার বার দাবি করা হয়, ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা ঘটানো একার পক্ষে সম্ভব নয়। নেপথ্যে একাধিক ব্যক্তি জড়িত। যদিও তদন্ত শেষে সিবিআই যে চার্জশিট দেয়, তাতে স্পষ্টই উল্লেখ করেছিল, গণধর্ষণের কোনও প্রমাণ মেলেনি! সেই সঙ্গে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত হিসাবে একমাত্র সঞ্জয়ের নামই জানায় সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বক্তব্যের সঙ্গে একমত হতে পারেননি নির্যাতিতার পরিবার এবং সঞ্জয়ের আইনজীবীরা। বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীন বিচারক দাসের এজলাসে তাঁরা বার বার দাবি করেছেন, একাধিক ব্যক্তি জড়িত খুন এবং ধর্ষণের ঘটনায়।

তবে বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীন সিবিআইয়ের আইনজীবী দাবি করেন, ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় জড়িত এক জনই। তিনিই অভিযুক্ত। অর্থাৎ সঞ্জয়ই। কিসের ভিত্তিতে সিবিআই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে, তা-ও আদালতে জানায়। তাদের দাবি, তদন্তের সময় দুই ফরেন্সিক চিকিৎসক এবং এমএমআইবি-র (তদন্তের স্বার্থে গঠিত চিকিৎসকদের দল) মতামতের উপর ভিত্তি করেই ঘটনায় এক জনের যুক্ত থাকার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে। বিচারক দাসও বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীন দুই ফরেন্সিক চিকিৎসকের কথা শুনেছেন। তাঁদের মধ্যে এক জন আরজি করের, অন্য জন এমসের।

বিচারক দাস তাঁর রায়ে জানান, তিনি সব পক্ষের বক্তব্য খুব গুরুত্ব সহকারে শুনেছেন। একই সঙ্গে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট, ময়নাতদন্তের সময় তোলা ছবি এবং আরজি করের ফরেন্সিক চিকিৎসকের কথা বিবেচনা করেছেন। সেই চিকিৎসকের মতে, নির্যাতিতার মুখ, নাক এবং গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। শরীরের বাইরে যে আঘাতের চিহ্ন ছিল তা স্বাভাবিক। ওই চিকিৎসকের যুক্তির প্রমাণ মেলে ময়নাতদন্তের সময় তোলা ছবিতেও।

বিচারক আরও জানান, আত্মরক্ষার্থে আঘাত-সহ তাঁর শরীরে একাধিক চিহ্ন মিলেছে। এমনকি, শরীরে দৃশ্যমান নয়, এমন আঘাতও রয়েছে। সেই আঘাতের কারণে শরীরের ভিতরে রক্তক্ষরণও ঘটেছে। নির্যাতিতার বেশ কয়েকটি আঙুলেও আঘাত রয়েছে। যা ঘটেছে শুধুমাত্র এক জনের দ্বারাই সম্ভব। আরজি করের চিকিৎসকের মতামত মান্যতা পায় এমএমআইবি-র বিপোর্ট এবং এমসের ফরেন্সিক চিকিৎসকের বয়ান থেকে।

সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারক দাস কী সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন, তা তিনি তাঁর রায়ে জানান। বিচারক জানান, নির্যাতিতার মুখে যে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে, তা প্রতিরোধের কারণেই। অর্থাৎ, অভিযুক্তের অত্যাচারের কবল থেকে নির্যাতিতা বাঁচার চেষ্টা করেছিলেন। সে সময়ই আঘাত লাগে, যা অভিযুক্তের ডান হাতের দ্বারা করা হয়েছে। বিচারক দাসের কথায়, ‘‘সব পক্ষের কথা শুনে এবং তথ্যপ্রমাণ বিচার করে আমার এটাই মনে হয়েছে ধর্ষণ এবং খুন এক জনই করেছেন।’’

RG Kar Rape and Murder Case Sanjay Roy RG Kar Case Verdict
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy