Advertisement
E-Paper

সেনার বিরুদ্ধে মন্তব্য করার আগে সতর্ক হওয়া উচিত: রাজ্যপাল

সেনার মতো একটা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলার আগে একটু ভাবনা চিন্তা করা উচিত। সরাসরি না বললেও এ ভাবেই রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করে কার্যত সেনার পাশেই দাঁড়ালেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৬ ১৪:৩৮
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

সেনার মতো একটা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলার আগে একটু ভাবনা চিন্তা করা উচিত। সরাসরি না বললেও এ ভাবেই রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করে কার্যত সেনার পাশেই দাঁড়ালেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। শনিবার আলিপুর ক্যাম্পাসে ‘ক্লিন ওয়াটার ফর অল’ অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেখানে তাঁকে রাজ্য-সেনার কাজিয়া নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “সেনার মতো একটা দায়িত্বশীল সংগঠনের বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য করার ক্ষেত্রে একটু সতর্ক হওয়া উচিত।”

গত দু’দিন ধরে ডানকুনি, পালসিট এবং মুর্শিদাবাদে টোল প্লাজায় সমীক্ষা কর্মসূচি চালান নিরস্ত্র সেনাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার রাতে নবান্ন থেকে এনিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রী। অভিযোগ করেন, রাজ্যকে অন্ধকারে রেখে এই সেনা কর্মসূচি চলছে। সেনা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত নবান্ন ছাড়বেন না জানিয়ে মমতা বলেন, ‘‘এখানে সেনা অভ্যুত্থান হয়েছে নাকি? তবে কি অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থার পাশাপাশি গোটা দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা হল? আমাদের নির্বাচিত সরকার। আমি সেনার হাতে ছেড়ে দেব না।’’ পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেন, যে ভাবে সেনা তল্লাশি চালাচ্ছে তাতে সাধারণ মানুষ ভয় পাচ্ছে। সেনা তোলা তুলছে বলেও অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। ঘোষণা মতো পরশু রাত নবান্নতেই কাটান তিনি।

গতকাল, শুক্রবার এই সেনা কর্মসূচি নিয়ে তৃণমূল প্রতিবাদ জানায় সংসদেও। এ দিকে কলকাতায় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করে বলা হয়, গত কয়েক বছর ধরেই এই রুটিন কর্মসূচি চলছে। এ বারও রাজ্য প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনকে জানিয়েই যা করার করা হয়েছে। একটা নির্দিষ্ট সময়ে গুরুত্বপূর্ণ হাইওয়েগুলো দিয়ে কত গাড়ি চলছে, এবং ভারী গাড়িগুলি একটা নির্দিষ্ট দূরত্ব অতিক্রম করতে কেমন সময় নিচ্ছে তা জানতেই এই পথ সমীক্ষা হয় বলে জানানো হয় সেনার তরফে। হঠাত্ যুদ্ধকালীন কোনও পরিস্থিতি তৈরি হলে তার জন্যই এই আগাম সমীক্ষা।

সেনাবাহিনীর পাশাপাশি গতকাল মুখ খোলেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রীও। সংসদে মনোহর পর্রীকর বলেন, পুলিশকে আগেই জানানো হয়েছিল যে সেনাবাহিনী ২৮, ২৯ ও ৩০ নভেম্বর মহড়া দেবে। কিন্তু ২৮ তারিখ বন‌্ধ ও অন্যান্য রাজনৈতিক কর্মসূচি থাকায় ওই দিন মহড়ার বিষয়ে পুলিশ আপত্তি জানায়। সেই আপত্তি মেনে নিয়ে ৩০ নভেম্বর এবং ১ ও ২ ডিসেম্বর মহড়ার তারিখ স্থির করা হয়। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, ‘‘বাংলার মুখ্যমন্ত্রী যে আচরণ করছেন, তা দেখে আমি বিস্মিত এবং ব্যাথিত।’’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের ‘রাজনৈতিক হতাশা’ থেকে সেনাকে যে ভাবে রাজনীতির মধ্যে টানছেন, তা ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলেও খোঁচা দেন পর্রীকর।।

তবে সেনার সাংবাদিক সম্মেলন বা কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিবৃতি, দুটোর কোনও বক্তব্যই মানতে চায়নি রাজ্য সরকার। ৩০ ঘণ্টা পর নবান্ন ছাড়ার আগে কাল সন্ধেয় মমতা ফের তোপ দাগেন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। তার আগে রাজভবনে অভিযোগ জানাতে যান পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। রাজ্যপাল না থাকায় দেখা হয়নি। পরে বাইরে এসে পার্থ বলেন, রাজ্যের অনুমোদন ছাড়াই সেনা তার কর্মসূচি চালিয়েছে। এ ব্যাপারে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ চেয়ে আবার তাঁরা রাজভবনে আসবেন। তবে তার আগেই এই চাপানউতোর নিয়ে মুখ খুলে দিলেন কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। সরাসরি সমালোচনা না করলেও, সেনা কর্মসূচি নিয়ে রাজ্যের এই বাকবিতণ্ডা, প্রতিবাদ যে তিনি ভাল চোখে দেখেননি তা বুঝিয়ে দেন রাজ্যপাল।

আরও খবর...

মমতার নালিশের পিছনে কি অন্য রাজনীতি

Keshari nath Tripathi Army
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy