Advertisement
০১ মে ২০২৪
Anubrata Mondal

ঠিক এক বছর আগে গ্রেফতার হন অনুব্রত, বীরভূমের রাজনীতিতে কি কেষ্ট আর আছেন?

বোলপুর শহরের নিচুপট্টি এলাকার নীল রঙা বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়ে গিয়েছিল সিবিআই। সেই দিন উপচে পড়েছিল ভিড়। এক বছর পরে সেই নিচুপট্টির সেই বাড়ি খাঁ খাঁ করছে!

anubrata mondal.

অনুব্রত মণ্ডল। —ফাইল চিত্র।

বাসুদেব ঘোষ 
বোলপুর শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২৩ ০৬:৪৯
Share: Save:

ঠিক এক বছর আগে এমনই এক অগস্টের সকাল। বোলপুর শহরের নিচুপট্টি এলাকার নীল রঙা বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়ে গিয়েছিল সিবিআই। সেই দিন উপচে পড়েছিল ভিড়। এক বছর পরে সেই নিচুপট্টির সেই বাড়ি খাঁ খাঁ করছে! অনুব্রত মণ্ডল নেই। নেই তাঁর মেয়ে সুকন্যাও।

প্রশ্ন উঠেছে, বীরভূমের রাজনীতিতেও কি অনুব্রত আর আছেন? বিশেষ করে পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের জয়ের পরে?

জেলবন্দি অনুব্রতকে ‘সচেতন’ ভাবে ‘মুছে’ ফেলতে চাইছে দল— এমন অভিযোগও করছেন অনুব্রত-ঘনিষ্ঠদের কয়েক জন। কারণ, একে তো পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের জয়। তার পরে দলের অনুষ্ঠানে বেশির ভাগ ব্যানার পোস্টারে তিনি ‘অনুপস্থিত’। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, সমস্ত পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূলের দখলে, ৫৯ আসনের জেলা পরিষদে বিরোধী জয়ী সদস্য কেবল এক জন। এবং এই সবই হয়েছে কেষ্টর অনুপস্থিতিতে। বিরোধীদের দাবি, অনুব্রতের ‘দেখানো পথে’ খেলেই জয় পেয়েছে শাসকদল। কিন্তু, এই বিপুল নির্বাচনী ‘সাফল্য’ অনুব্রতকে জেলার রাজনীতিতে আরও ‘অপ্রাসঙ্গিক’ করে দেবে বলে আশঙ্কা তাঁর অনুগামীদের একাংশের। তাঁদের ক্ষোভ, গ্রেফতারির আগে অবধিও জেলার শেষ কথা বলতে অনুব্রতকেই বুঝতেন সকলে। আজ সেখানে কেষ্টদার নামটুকুই
রয়ে গিয়েছে।

এই অবস্থায় আর কত দিন জেলা তৃণমূলের সভাপতি পদে রাখা হবে অনুব্রতকে—সেই চর্চাও ফের প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে বীরভূমে। দলেরই অনেকে মনে করছে, তিহাড় জেল থেকে বেরোনো অনুব্রতের পক্ষে কঠিন। ফলে, লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত অনুব্রত-হীন কোর কমিটির উপরেই আস্থা রাখবেন শীর্ষ নেতৃত্ব—এমনও মনে করছে বিভিন্ন মহল। তবে, অনুব্রত না থাকায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে বলে অনেকের মত। যার জেরে সম্প্রতি সিউড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন প্রণব কর। অনুব্রতের অনুপস্থিতিতে কোর কমিটির প্রধান মুখ যিনি, সিউড়ির সেই বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরীকে কটাক্ষ করে প্রণব বলেছেন, ‘‘বিকাশ নিজেকে অনুব্রত ভাবতে শুরু করেছেন।’’

বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বলছেন, ‘‘সমস্ত দুর্নীতির সঙ্গেই উনি যুক্ত। তাই উনি গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে দলও কালিমালিপ্ত হয়েছে। ফলে, এখন অনেক নেতাই তাঁর নাম নিচ্ছেন না, তাঁর ছবিও দেখা যাচ্ছে না বিশেষ। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, অনুব্রত মণ্ডলকে মুছে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে তাঁর দলেই।’’

বিকাশ রায়চৌধুরী যদিও বলছেন, ‘‘অনুব্রত মণ্ডলকে মুছে ফেলা হচ্ছে, এ কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা। পঞ্চায়েত নির্বাচনেও প্রায় সব জায়গায় তাঁর ছবি রেখে প্রচার করা হয়েছে। তাই অনুব্রত মণ্ডল ছিলেন, আছেন, থাকবেন।’’ অনুব্রত কি ফিরবেন? বিকাশের জবাব, ‘‘খারাপ লাগছে। তবে, এটা সম্পূর্ণ আইনের ব্যাপার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Anubrata Mondal TMC CBI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE