মমতা সরকারের দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই বিধানসভায় টক্কর বেধেছে শাসক ও বিরোধীদের। সংঘাতের সেই আবহে নতুন মাত্রা যোগ হল বিরোধী কংগ্রেস ও বামেদের বিধানসভার কার্য উপদেষ্টা (বি এ) কমিটির বৈঠক বয়কটের সিদ্ধান্তে। তাদের অভিযোগ, কৃষি, ভূমি, সংখ্যালঘু উন্নয়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতরের বাজেট আলোচনা ছাড়াই গিলোটিনে পাঠানো হচ্ছে। অধিবেশনের মেয়াদ বাড়ানো বা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনার দাবিও মানা হচ্ছে না। সরকারের এই ‘মানসিকতা’র প্রতিবাদেই বি এ কমিটি বৈঠকে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত বুধবার কংগ্রেস ও বাম পরিষদীয় দলের তরফে চিঠি দিয়ে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন, ‘‘বি এ কমিটির বৈঠক বিরোধীরা বয়কট করছেন, এমন নজির সাধারণ ভাবে পাওয়া যায় না। কিন্তু সরকার পক্ষ চায় না বিরোধীরা দফতরের কাজের ব্যর্থতার বিষয়ে আলোচনা করুক! তাই তারা বিরোধীদের কন্ঠরোধ করতে চায়।।’’ পাঁচ বছর আগে সূর্যকান্ত মিশ্রের নেতৃত্বে বিরোধী বামেরা মমতার প্রথম সরকারকে কাজের সময় দেওয়ার নীতি নিয়েছিলেন। কিন্তু এ বার মান্নানের নেতৃত্বে বিরোধীরা প্রথম থেকেই ‘রণং দেহি’ মেজাজে বিধানসভায় শাসক দলের মোকাবিলায় নেমেছেন। বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর উপস্থিতিতেই এ দিন মান্নান বলেন, ‘‘পাঁচ বছর বিরোধীরা চুপচাপ ছিল বলে শাসকদের এত সাহস বেড়েছে! সংবিধান আমাদের যতটুকু অধিকার দিয়েছে, তা কাজে লাগানো হবে।’’
স্পিকারকে লেখা চিঠিতে কংগ্রেস পরিষদীয় দলের সহকারী নেতা নেপাল মাহাতো এবং সচেতক মনোজ চক্রবর্তী স্পষ্ট জানিয়েছেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে বিধানসভায় আলোচনা করতে দেওয়া হচ্ছে না। এই অবস্থায় নিছক উপস্থিতি নথিভুক্ত করানোর জন্য তাঁরা বি এ কমিটির বৈঠকে গিয়ে কী করবেন? মান্নানের ব্যাখ্যা, ‘‘স্পিকারের মর্যাদা ও সম্মান রক্ষা করতেই চিঠিতে আমরা বয়কট শব্দটি লিখিনি।’’ মান্নানের সুরে সুজনবাবুও বলেন, ‘‘সংসদীয় রীতি মেনে বিরোধী দলের মর্যাদা যদি না
দেওয়া হয়, তবে তো প্রতিক্রিয়া হবেই!’’
বিধানসভায় আজ, বৃহস্পতিবারই বি এ কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা। বিরোধীদের বয়কট নিয়ে স্পিকার বিমানবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘এটা ওঁদের ব্যাপার। তবে সকলের সঙ্গে আলোচনা করেই বি এ কমিটিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আমার প্রত্যাশা, সভার মর্যাদা রক্ষায় সকলেই অংশগ্রহণ করবেন।’’ আর সরকারি মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষের দাবি, রমজানের জন্য সাড়ে চারটের মধ্যে অধিবেশন শেষ করতে হচ্ছে বলেই আলোচনায় কাট-ছাঁট করতে হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy