Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

বিমান ঘাঁটি বাড়াতে জমি দেখা

চিন-ভারত উত্তেজনার নিরিখে পানাগড়ের অর্জন সিংহ এয়ার ফোর্স স্টেশন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

বায়ুসেনা ঘাঁটি থেকে উড়ে যাচ্ছে সুপার হারকিউলিস। নিজস্ব চিত্র

বায়ুসেনা ঘাঁটি থেকে উড়ে যাচ্ছে সুপার হারকিউলিস। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৪৬
Share: Save:

গুরুত্ব বাড়ছে পানাগড়ের অর্জন সিংহ বায়ুসেনা ঘাঁটির। এর বহর বাড়াতে আরও জমির দরকার। ইতিমধ্যেই বায়ুসেনা কর্তৃপক্ষ স্থানীয় প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে জমির সমীক্ষা কাজ শুরু করেছেন। কাঁকসার বিডিও অরবিন্দ বিশ্বাস জানিয়েছেন, প্রায় ৮১২ একর জমির দরকার বলে জানিয়েছেন বায়ুসেনা কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিক সমীক্ষার কাজ চলছে।

চিন-ভারত উত্তেজনার নিরিখে পানাগড়ের অর্জন সিংহ এয়ার ফোর্স স্টেশন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বায়ুসেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্বাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে চিনের ‘বিপদ’ মাথায় রেখে ঢেলে সাজা হবে এই ঘাঁটিকে। বর্তমানে বায়ুসেনার বিশ্বস্ত হাতিয়ার, ৬টি সুপার হারকিউলিস বিমান ‘সি ১৩০ জে সুপার হারকিউলিস’ রয়েছে এখানে। অল্প সময়ে দুর্গম এলাকায় সেনা পৌঁছে দিতে এর জুড়ি মেলা ভার। ১৯ টন ওজন নিয়ে উড়তে পারে। স্বল্প উচ্চতায় উড়তে পারে, এবড়ো খেবড়ো রানওয়েতে ওঠানামা করতে পারে। দিন রাত পানাগড়ের ঘাঁটি থেকে হারকিউলিস বিমান পরীক্ষামূলক ভাবে ওঠা-নামা করেই চলেছে। বিমান নিয়ে চলছে প্রশিক্ষণ পর্বও। এ ছাড়া অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানের ওঠানামা তো লেগেই আছে।

সূত্রের খবর, পানাগড় থেকে চিন সীমান্তে পৌঁছতে এক ঘণ্টাও লাগে না সুপার হারকিউলিসের। আবার এই ১৩০ জে সুপার হারকিউলিস বিমান থেকেই সহজে শত্রুশিবিরের কাছাকাছি নেমে আক্রমণ হানাও সহজ। তাই বায়ুসেনার কাছে এখন পশ্চিম বর্ধমানের এই বিমানঘাঁটির গুরুত্ব খুব বেশি। তা ছাড়া, উত্তরপ্রদেশের হিন্ডনের পরে পানাগড়ই হল দেশের দ্বিতীয় ও পূর্বাঞ্চলের প্রথম সুপার হারকিউলিস ঘাঁটি।

বায়ুসেনা সূত্রের খবর, পানাগড়ের ঘাঁটিটিকে আরও শক্তিশালী করতে অতিরিক্ত জমি দরকার। শনিবার বায়ুসেনার পক্ষ থেকে ঘাঁটির লাগোয়া রাজকুসুম, বান্দ্রা, ফারাকিডাঙা প্রভৃতি গ্রামে জমি নিয়ে সমীক্ষা চালানো হয়। সঙ্গে ছিলেন কাঁকসার বিডিও এবং ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক ও কর্মীরা। বিডিও জানিয়েছেন, প্রায় ৮১২ একর জমির প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বায়ুসেনা কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিক ভাবে এক দফা জমি পরিদর্শন করা হয়েছে। এখনও চূড়ান্ত কিছু হয়নি। অরবিন্দবাবু বলেন, ‘‘প্রস্তাবিত এলাকায় রায়ত জমি তেমন নেই। তবে বন দফতরের জমিতে অনেকে পাট্টা নিয়ে বসবাস করছেন। এখনও নির্দিষ্ট কিছু হয়নি। জমির এলাকা ঠিক হলে দাগ নম্বর-সহ অন্যান্য নথি খতিয়ে দেখার কাজ শুরু হবে।’’

তবে, বায়ুসেনা কর্তৃপক্ষ জমি অধিগ্রহণ করবেন শুনে অধিকাংশ বাসিন্দাই খুশি। তাঁদের বক্তব্য, জমি তেমন উর্বর না হওয়ায় ফসল ভাল হয় না। কিন্তু, জমি ছাড়া তাঁদের আর কিছু না থাকায় এলাকাবাসী উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন। চাষি বিশ্বনাথ বাগদি বলেন, ‘‘দেশের স্বার্থে আমরা জমি দিতে রাজি। কিন্তু, প্রশাসন যেন আমাদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দিকটা দেখে। আমাদের তো এটুকুই সম্বল। ধান তেমন হয় না। ভাল ক্ষতিপূরণ পেলে আমাদের সুবিধা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Super Hercules Aircraft Panagarh airbase
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE