ফাইল চিত্র।
তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, সময় এলে সব বলবেন। কিন্তু এখনও সেই ‘সময়’ আসেনি। তাই স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) ও প্রাথমিক টেট মামলায় ধৃত রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আবার নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে চায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। মঙ্গলবার কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে অর্পিতার কয়েকটি ফ্ল্যাট ও পার্লারে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু নথি আটক করেন তদন্তকারীরা। কোনও কোনও ফ্ল্যাট সিল করে দেওয়া হয়েছে।
আজ, বুধবার পার্থ ও তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে আদালতে তোলা হবে। সেখানে তাঁদের দু’জনকেই ইডি নিজেদের হেফাজতে নিতে চাইবে বলে তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর। গত ২৩ জুলাই গভীর রাতে পার্থকে, ২৪ জুলাই অর্পিতাকে গ্রেফতার করা হয়। সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত (পিএমএলএ)-এর বিচারক তাঁদের ১০ দিনের ইডি-র হেফাজতে রেখে ৩ অগস্ট আদালতে তোলার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
তদন্তকারীদের দাবি, অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা, প্রচুর গয়না, বিদেশি মুদ্রা, পার্থের বাড়ি থেকে অর্পিতার বিভিন্ন জমির দলিল উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁদের নামে প্রচুর জমি-বাড়ি ও ফ্ল্যাটের হদিস মিলেছে। ইডি-র দাবি, বছর দশেকের বেশি সময় ধরে অর্পিতার সঙ্গে পার্থের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে বলে নানা নথিতে প্রমাণ মিলেছে।
তদন্তকারীদের অভিযোগ, ‘থিতু’ হওয়ার জন্য কিছুটা সময় চেয়ে পরে ‘সব’ বলবেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন পার্থ। যদিও এখনও পর্যন্ত তিনি তেমন কিছু তো বলেনইনি, উল্টে পার্থ ও অর্পিতা দু’জনেই তদন্তকে বিপথে চালিত করার চেষ্টা করছেন বলে তদন্তকারীদের অভিযোগ। ইডি-কর্তারা জানান, গুরুত্বপূর্ণ ও সুনির্দিষ্ট নথি থাকা সত্ত্বেও জেরায় তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার জন্য নানা ধরনের কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছেন পার্থ-অর্পিতা। তদন্তকারীদের দাবি, শুধু পার্থ-অর্পিতা নন, আরও বড় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত রয়েছেন বলে তদন্তের সূত্রে উঠে এসেছে। সেই কারণে ওই দু’জনকে হেফাজতে নিয়ে আরও জেরা করার প্রয়োজন আছে।
এ দিন তদন্তকারীরা বরাহনগর, দক্ষিণ শহরতলির পাটুলি এবং দক্ষিণ কলকাতার লেক ভিউ রোডে অর্পিতার নেল আর্ট বিউটি পার্লার, ফ্ল্যাট ও অতিথিশালায় তল্লাশি চালান। বিউটি পার্লার বন্ধ ছিল। সেখানে শাটার ভেঙে তল্লাশি চালানো হয়। পাটুলির পার্লারের বিষয়ে কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর প্রসেনজিৎ দাসকে দীর্ঘ ক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। বছর দুয়েক আগে অর্পিতা যে-আবাসনে বিউটি পার্লার খুলেছিলেন, পার্থ-ঘনিষ্ঠ প্রসেনজিৎ তার প্রোমোটার। ওই বিউটি পার্লার এবং লেক ভিউ রোডের পার্লার থেকে শাটারের তালা ভেঙে কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইডি। বালিগঞ্জের পণ্ডিতিয়া রোডের একটি আবাসনে অর্পিতার পাঁচতলার ফ্ল্যাট থেকেও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার হয়েছে বলে তদন্তকারীদের দাবি।
এ দিনই কলকাতার ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের হোসেনপুরে ওমভিলা নামে একটি আবাসনে অর্পিতার একাধিক ফ্ল্যাট সিল করে দেয় ইডি। তা ছাড়া কেন্দুয়া মেন রোড ও ল্যান্সডাউনের আবাসনে অর্পিতার বন্ধ ফ্ল্যাটেও এ দিন তল্লাশি চালানো হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy