Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

স্কুল নিয়ে যোগেনের মন্তব্যে অস্বস্তি পার্থের

সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলির দৈন্যদশার কথা বলে সরকারি অনুষ্ঠানেই শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে অস্বস্তিতে ফেললেন তাঁর দলের সাংসদ-শিল্পী যোগেন চৌধুরী। শনিবার যোগেনবাবু বলেছেন, বেসরকারি স্কুলগুলির তুলনায় ক্রমাগত পিছিয়ে পড়ছে সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলি এবং একেবারে হতদরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়ে ছাড়া আর কেউ সেখানে পড়তে আসে না। উপলক্ষ ছিল বিকাশ ভবনে নবম শ্রেণির পাঠ্যবই প্রকাশ অনুষ্ঠান। রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ যোগেনবাবু সরকারি পাঠ্যক্রম কমিটির সদস্য।

পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগেন চৌধুরী। শনিবার বিকাশ ভবনে।  নিজস্ব চিত্র

পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগেন চৌধুরী। শনিবার বিকাশ ভবনে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:১৯
Share: Save:

সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলির দৈন্যদশার কথা বলে সরকারি অনুষ্ঠানেই শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে অস্বস্তিতে ফেললেন তাঁর দলের সাংসদ-শিল্পী যোগেন চৌধুরী। শনিবার যোগেনবাবু বলেছেন, বেসরকারি স্কুলগুলির তুলনায় ক্রমাগত পিছিয়ে পড়ছে সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলি এবং একেবারে হতদরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়ে ছাড়া আর কেউ সেখানে পড়তে আসে না। উপলক্ষ ছিল বিকাশ ভবনে নবম শ্রেণির পাঠ্যবই প্রকাশ অনুষ্ঠান। রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ যোগেনবাবু সরকারি পাঠ্যক্রম কমিটির সদস্য। শিক্ষামন্ত্রীর পাশে বসে এ দিন আচমকাই তিনি বলেন, “প্রাথমিকে সব খরচ (সরকার) বহন করতে গিয়ে স্কুলগুলির পরিকাঠামোগত বিষয়গুলি অবহেলিত হচ্ছে। সরকার যে টাকা দেয়, তা থেকে শিক্ষকেরা কিছু কিছু টাকা পান। কিন্তু এ ছাড়া উন্নয়ন বা ন্যূনতম রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় সর্বত্রই অভাবের ছাপ স্পষ্ট।”

যোগেনবাবুর এই মন্তব্যের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না শিক্ষামন্ত্রী। দৃশ্যতই বিব্রত বোধ করেন তিনি। কিন্তু যোগেনবাবু সেখানেই থেমে থাকেননি। শিক্ষার অধিকারের প্রসঙ্গ তুলে তিনি প্রস্তাব করেন, স্কুলের সর্বাঙ্গীন উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি ‘পাবলিক পার্টিশিপেশন’ (বেসরকারি উদ্যোগ)-এর প্রয়োজন থাকলে তা-ও ভেবে দেখা উচিত। এতে শিক্ষার মান বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।

রাজ্যে সরকারি প্রাথমিক স্কুলের জীর্ণদশার কথা বলতে গিয়ে যোগেনবাবু নিজের একটি অভিজ্ঞতার কথা তোলেন। জানান, সম্প্রতি বেশ কয়েকটি স্কুল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন তিনি। সেগুলির ক্লাসঘর খুবই জরাজীর্ণ। পড়াশোনার উপযুক্তই নয়। ওই স্কুলে খুবই গরিব পরিবারের ছেলেমেয়েরা ছাড়া আর কেউ পড়তেও আসে না। অথচ বেসরকারি স্কুলগুলির রমরমা বাড়ছে। যোগেনবাবুর মতে, “সরকার তো সকলের জন্য। স্কুলগুলির হাল ফেরানো দরকার, যাতে সবাই সেখানে পড়তে আসে।”

এই সময়েই শিল্পী-সাংসদকে থামিয়ে পার্থবাবু বলেন, “উনি যেখানে গিয়েছেন, সেখানে হয়তো বস্তি বা গ্রামের ছেলেমেয়েরাই আসে। কিন্তু অনেক ভাল সরকারি স্কুল রয়েছে।” তিনি জানান, যোগেনবাবু যে সব বেসরকারি স্কুলের কথা বলছেন, সেখানে উন্নয়ন খাতে পড়ুয়াদের থেকে টাকা নেওয়া হয়। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “সরকারি স্কুলের পরিকাঠামো বাড়ানোর প্রয়োজন এবং তা করা হচ্ছে। শিক্ষার মান বাড়াতে রাজ্য সরকার অনেক প্রকল্প গ্রহণ করেছে। প্রাথমিক স্তরেও কাজ শুরু হয়েছে। আগামী বাজেটেও এ ব্যাপারে কতটা সংস্থান করা যায়, তার চেষ্টা হচ্ছে।”

অস্বস্তি ঢাকতে শিক্ষামন্ত্রী শেষমেশ যোগেনবাবুকে বিষয়টি নিয়ে সংসদে আলোচনা করতে বলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE