Advertisement
E-Paper

তাঁর দরবারে কারা? নবান্নের ‘নজরবন্দি’ দলছাড়া মুকুল রায়

রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর সূত্রের খবর, ওই অতিথিদের মধ্যে তৃণমূলের তেমন নামী কোনও মুখ অবশ্য ছিল না। তবে নদিয়া, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, মেদিনীপুর, কোচবিহারের মতো জেলা থেকে ওই দিন মুকুলের বাড়িতে গাড়ি করে এসেছিলেন তৃণমূলের একেবারে নিচুতলার কর্মীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:১৩
মুকুল রায়। ফাইল চিত্র।

মুকুল রায়। ফাইল চিত্র।

দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পরেও প্রতি মুহূর্তে নবান্নের ‘নজরবন্দি’ মুকুল রায়।

তাঁর সঙ্গে কে কে দেখা করছেন, কে কে তাঁর কাঁচরাপাড়ার বাড়িতে গিয়ে দুর্গাপুজোয় ভোগ খেলেন, তাঁদের নাম-ধাম, গাড়ির নম্বর-সমেত তালিকা পর্যন্ত তৈরি করছে তৃণমূল। সরকারকে এই কাজে গোয়েন্দারাও সহায়তা করছেন বলে শাসক দলের একাংশ দাবি করেছেন।

সেই নজরদারিতে কলকাতার নিজাম প্যালেস বা ই এম বাইপাসের আস্তানার পাশাপাশি তাঁর কাঁচরাপাড়ার বাড়িও রয়েছে। সে জন্যই তাঁর বাড়িতে নবমীর দুপুরে ভোগ খেতে কে কে কোথা থেকে এলেন, তার বিশদ তথ্য রাজ্য সরকারকে জানিয়ে দিয়েছেন আইবি-র গোয়েন্দারা।

রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর সূত্রের খবর, ওই অতিথিদের মধ্যে তৃণমূলের তেমন নামী কোনও মুখ অবশ্য ছিল না। তবে নদিয়া, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, মেদিনীপুর, কোচবিহারের মতো জেলা থেকে ওই দিন মুকুলের বাড়িতে গাড়ি করে এসেছিলেন তৃণমূলের একেবারে নীচুতলার কর্মীরা। এই কর্মীদের প্রত্যেকের নাম-ধাম, সাকিন ঠিকানা মুকুলের ঠোঁটস্থ। নদিয়া থেকেই সব থেকে বেশি লোক ওই দিন এসেছিলেন বলে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন। তবে অচেনা লোকের ভিড়ে উত্তর ২৪ পরগনার দু’জন চেনা মুখও ছিলেন বলে খবর।

চেনা কর্মীর থেকে একেবারে তৃণমূল স্তরের কর্মীরাই যে তাঁর পাশে বেশি রয়েছেন, তা স্বীকার করছেন মুকুল নিজেও। পঞ্চমীর সকালে তৃণমূল ছাড়ার ঘোষণার পর থেকেই অসংখ্য কর্মী তাঁর সঙ্গে দেখা করছেন, ফোনে যোগাযোগ করছেন বলে মুকুল শিবির বারবারই দাবি করছে। দ্বাদশীর সন্ধ্যায় নিজাম প্যালেসে নিজের ঘরে বসে মুকুলও বলছিলেন, ‘‘এ বার দুর্গাপুজোয় আমার বাড়িতে যাঁরা এলেন, তাঁদের বেশিরভাগই একেবারে নীচু তলার কর্মী। হয়তো সচেতন ভাবেই অনেকে পুজোয় এড়িয়ে গিয়েছেন আমাকে।’’

আরও পড়ুন: রেড রোডে শোভাযাত্রা, থমকাতে পারে শহর

তাঁকে ঘিরে এই নজরদারির মধ্যেই মুকুল-ঘনিষ্ঠ বিধায়ক, সাংসদ ও জেলার নেতাদের সঙ্গে আলাদা আলাদা ভাবে কথা বলা শুরু করেছেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। মুকুলের সঙ্গে তাঁরা যাতে তৃণমূল ছাড়ার কোনও চেষ্টা না করেন, তা বোঝানোর পাশাপাশি দলে তাঁদের গুরুত্ব দেওয়ারও ভাবনাচিন্তা চলছে দলে। সে জন্যই তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসের টিকিটে জেতা বাগদার বিধায়ক দুলাল বরকেও তৃণমূলে নিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ শুরু হয়েছে তৃণমূল-অন্দরে। বাগদার প্রাক্তন বিধায়ক উপেন বিশ্বাস ‘অসন্তুষ্ট’ হতে পারেন বুঝেও দুলালকে দলে নেওয়ার তোড়জোড় শুরু করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। শুধু দুলাল নন, দুলালের মতো ‘বিক্ষুব্ধ’দের দলে গুরুত্ব বাড়ানোর দিকেও এ বার নজর দিতে চাইছে শাসক দল।

তাঁর উপরে রাজ্য সরকারের নজরদারি চলছে বুঝেও নবমীর রাত থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূলের বিধায়ক, সাংসদদের তিনি বিজয়ার শুভেচ্ছাপত্র পাঠিয়েছেন বলে জানালেন মুকুল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-সহ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছেও তাঁর সেই শুভেচ্ছা পৌঁছেছে বলে মুকুলের দাবি।

বিজেপির সঙ্গে মুকুলের যোগাযোগের কথা জানেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বও। মুকুল দলের তরফে অনেক কিছু পাওয়া সত্ত্বেও কেন দল ছাড়লেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। একই জিজ্ঞাসা বা ক্ষোভ দলের নীচু তলার কর্মীদের মধ্যেও দানা বাঁধছে বলে তৃণমূল নেতাদের ধারণা। সেই ক্ষোভেই মুকুল এর পর জেলা সফরে বেরোলে কর্মীরা ‘প্রতিক্রিয়া’ দেখাতে পারে বলে দলের অন্দরের একাংশের আশঙ্কাও রয়েছে।

Mukul Roy TMC BJP Mamata Banerjee মুকুল রায় বিজেপি তৃণমূল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy