Advertisement
০১ অক্টোবর ২০২৩
Liluah

‘স্টাফ স্পেশ্যাল’ ট্রেন থেকে নামাতেই বিক্ষোভ

এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘‘পেটের দায়! কাজে তো আসতেই হবে, না হলে সংসার চলবে কী করে? তাই বেআইনি জেনেও বিশেষ ট্রেনে উঠতেই হয়।’’

ঝামেলা: লিলুয়া স্টেশনে ভাঙচুরের পরে সেখানে পুলিশি প্রহরা। সোমবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

ঝামেলা: লিলুয়া স্টেশনে ভাঙচুরের পরে সেখানে পুলিশি প্রহরা। সোমবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২০ ০৩:০৯
Share: Save:

সোনারপুরের পরে এ বার লিলুয়া। ‘স্টাফ স্পেশ্যাল’ ট্রেনে ওঠার অভিযোগে কয়েক জন সাধারণ যাত্রীকে পাকড়াও করে লিলুয়া স্টেশনে নামাতেই শুরু হয় বিক্ষোভ। অভিযোগ, স্টেশন মাস্টারের ঘরে ঢুকে জিনিসপত্র ফেলে দেওয়া থেকে শুরু করে গাছের টব ভাঙচুর করে উত্তেজিত জনতা। পরে আরপিএফ ও জিআরপি এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

সপ্তাহের প্রথম দিন, সোমবার সকাল সওয়া ৭টা নাগাদ লিলুয়া স্টেশনে কয়েক মিনিটের ব্যবধানে এসে ঢোকে বর্ধমান-হাওড়া রুটের মেন ও কর্ড শাখার দু’টি বিশেষ লোকাল ট্রেন। ওই দু’টি ট্রেন থেকে চার জন সাধারণ যাত্রীকে লিলুয়ায় নামিয়ে দেন টিকিট পরীক্ষকেরা। পাশাপাশি, ওই স্টেশনে নামা কয়েক জন অবৈধ যাত্রীকেও ধরা হয়। তাঁদের থেকে জরিমানা দাবি করেন টিকিট পরীক্ষকেরা। অভিযোগ, তাতেই প্ল্যাটফর্মে থাকা অন্যেরা এবং ট্রেন থেকে নামা যাত্রীরা খেপে যা‌ন। সকলেরই দাবি, তাঁদেরও বিশেষ ট্রেনে চড়ার সুযোগ দিতে হবে। শুরু হয় বিক্ষোভ।

অতিমারির কারণে এখন লোকাল ট্রেন পরিষেবা বন্ধ। শুধু রেলকর্মীদের জন্য কয়েকটি ‘স্টাফ স্পেশ্যাল’ ট্রেন চালানো হচ্ছে। গত ৮ অক্টোবর শিয়ালদহ শাখার সোনারপুর স্টেশনে ওই ধরনের একটি বিশেষ ট্রেন থেকে সাধারণ যাত্রীদের নামিয়ে দিতেও বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। সেখানে ওই অবৈধ যাত্রীদের ছোড়া পাথরে জখম হন কয়েক জন পুলিশকর্মী। স্টেশনে ভাঙচুর চলে। পরে বিশাল বাহিনী এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

এ দিন বর্ধমান থেকে হাওড়ার উদ্দেশে যাত্রা করা ওই বিশেষ লোকাল ট্রেনে প্রথমে রিষড়ায় চার জন অবৈধ যাত্রীকে পাকড়াও করেন টিকিট পরীক্ষকেরা। রেল সূত্রের খবর, প্রান্তিক স্টেশন হাওড়ায় তল্লাশির কড়াকড়ি থাকায় বর্ধমান, ব্যান্ডেল-সহ বেশ কয়েকটি স্টেশন থেকে ওই বিশেষ ট্রেনে ওঠা যাত্রীরা লিলুয়ায় নেমে পড়েন। সেখান থেকে অনেকে টোটো বা বাস ধরে সহজেই হাওড়া পৌঁছে যান। অনেকে আবার সেখান থেকে কলকাতার দিকেও চলে যান। এ দিন এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘‘পেটের দায়! কাজে তো আসতেই হবে, না হলে সংসার চলবে কী করে? তাই বেআইনি জেনেও বিশেষ ট্রেনে উঠতেই হয়।’’

এ দিন বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে প্রথমে টিকিট পরীক্ষকদের ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। তার পরে ওই অবৈধ যাত্রীদের একাংশ স্টেশন মাস্টারের ঘরে ঢুকে টেবিল, চেয়ার উল্টে দেন এবং প্ল্যাটফর্মে থাকা টব তুলে আছড়ে ফেলেন বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে বেলুড় জিআরপি-র ওসি বিকাশ মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিশাল বাহিনী এবং রেলরক্ষী বাহিনী ঘটনাস্থলে এসে সকলকে হটিয়ে দেয়। যে চার জনকে টিকিট পরীক্ষকেরা ধরেছিলেন, তাঁদেরও ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে রেলের দেওয়া মেমো অনুযায়ী নির্দিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করেছে জিআরপি।

লিলুয়ার ঘটনার খবর পেয়ে কিছু ক্ষণের জন্য রিষড়া স্টেশনে রেললাইন অবরোধ করেন অবৈধ যাত্রীরা। হাওড়া ডিভিশনের এক রেলকর্তা বলেন, ‘‘প্রায়ই খবর আসছিল, অসংখ্য অবৈধ যাত্রী বিশেষ ট্রেনে ভিড় করছেন। তা আটকাতেই এ দিন অভিযান চালানো হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE