—প্রতীকী চিত্র।
শহর থেকে জল নেমেছে। কিন্তু স্বাভাবিক হয়নি জীবনযাত্রা। এই মুহূর্তে ঘাটালের সব চেয়ে বড় সমস্যা ইন্টারনেটের অনিয়মিত সংযোগ। ‘লিঙ্ক’ থাকছে না বলে কার্যত অচল হয়ে রয়েছে ব্যাঙ্ক, বিমা, ডাকঘর-সহ নানা পরিষেবা। বন্ধ এটিএম। কবে স্বাভাবিক হবে ইন্টারনেট পরিষেবা, জানাতে পারেননি বিএসএনএল কর্তৃপক্ষও।
ঘাটালের টেলিফোন দফতরের আধিকারিক তপন পাইকার বলেন, “ঘাটালে মূল এক্সচেঞ্জটি এতদিন জলের তলায় ছিল। সবে জল সরছে। এক এক করে পরিষেবা চালু করছি। দিনরাত কাজ করে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছি।” কিন্তু সাধারণ গৃহস্থের ঘরে টেলিফোন এখনও অচল। ইন্টারনেট সংযোগও নেই।
ঘাটালবাসীর বক্তব্য, এখানে বন্যা নতুন ঘটনা নয়। আগে যা ছিল, তার সঙ্গে এখনকার পরিস্থিতির তুলনা হয় না। ইন্টারনেট, টেলিফোন ছাড়া একদিনও চলা সম্ভব নয়।
তাই তাঁদের দাবি, বন্যার সময়েও যাতে টেলিফোন, ইন্টারনেট বিদ্যুৎ পরিষেবা সচল থাকে, সে ব্যবস্থা প্রশাসনকেই করতে হবে। সে বিষয়ে প্রশাসন ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন মহকুমাশাসক পিনাকী রঞ্জন প্রধান। তিনি বলেন, “বিদ্যুতের সাবস্টেশন ও টেলিফোন এক্সচেঞ্জ শহরের উঁচু এলাকায় সরানোর বিষয়ে উদ্যোগী হচ্ছি। দ্রুত সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকও করা হবে।”
২৬ জুলাই ঘাটালের প্রতাপপুরে শিলাবতী নদীর বাঁধ ভেঙে জলমগ্ন হয় ঘাটাল শহরের ‘লাইফ-লাইন’ কুশপাতা। সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্ক, সরকারি অফিস, এটিএম চলে যায় জলের তলায়। শ্রীপুরের টেলিফোন এক্সচেঞ্জও জলে ডুবে যায়। ২৭ জুলাই থেকেই বন্ধ ঘাটালের ব্রডব্যান্ড পরিষেবা। অকেজো ল্যান্ডফোন। কুশপাতা এক্সচেঞ্জ থেকে কয়েকটি কার্যালয়ে কাজ অবশ্য চলছিল। কিন্তু ‘লিঙ্ক’ নিয়ে নাজেহাল আধিকারিক থেকে সাধারণ মানুষ।
গত সপ্তাহের শুরু থেকেই ঘাটাল শহরে জল নামতে শুরু করেছে। ব্যাঙ্ক, এটিএম থেকেও জল সরে গিয়েছে। কিন্তু বাসিন্দাদের অভিযোগ, এটিএমগুলি সংস্কার করে তা ফের চালু করার চেষ্টাও করছেন না কর্তৃপক্ষ।
ঘাটাল স্টেট ব্যাঙ্কের চিফ ম্যানেজার সুব্রত বিশ্বাস অবশ্য বলেন, “কাজ চলছে। চলতি সপ্তাহ থেকেই পরিষেবা স্বাভাবিক হয়ে যাবে।” একই বক্তব্য অন্যান্য এটিএম সংস্থার আধিকারিকদেরও।
এ দিকে লিঙ্ক না থাকায় দিনের পর দিন ব্যাঙ্কে লম্বা লাইন দিয়েও টাকা তোলা বা জমা দেওয়ার কাজ করতে পারছেন না গ্রাহকেরা। ব্যবসা প্রায় বন্ধ হতে বসেছে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। প্রবীণ নাগরিকেরাও টাকা তুলতে পারছেন না। গত ১৩ দিন ধরে ঘাটাল মুখ্য ডাকঘরে সমস্ত কাজ বন্ধ ছিল। একেই চিত্র ঘাটাল মহকুমা বিমা অফিসেও। শুক্রবার দুপুরে প্রথম লিঙ্ক আসে। তবে বেশিক্ষণ নয়।
ঘাটাল মুখ্য ডাকঘরের পোস্টমাস্টার পঙ্কজ সামন্ত বলেন, “ডাকঘরে কুড়ি হাজার গ্রাহক। লিঙ্ক না থাকায় সমস্ত কাজ শিকেয় উঠেছে। চূড়ান্ত সমস্যায় গ্রাহকেরা। ডাকঘরের অনান্য কাজও ব্যাহত হচ্ছে।”
জীবন বিমার ঘাটাল শাখার ম্যানেজার সুপ্রিয় ঘোড়ুইও বলেন, “আমার দফতর ১১ দিন অচল ছিল। শুক্রবার কাজ শুরু করেছি। কিন্তু লিঙ্কের সমস্যায় এখনও পরিষেবা ঠিকঠাক চালুই হয়নি। কবে স্বাভাবিক হবে বুঝতেও পারছি না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy