মিছিলে তৃণমূলের কোনও প্রতীক দেখা যায়নি ঠিকই। কিন্তু মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর মিছিলের সূচনা এবং সমাপ্তিস্থলে চোখে পড়েছে দলের পতাকা এবং ব্যানার। এমনকি, তৃণমূলের খেজুরি বিধানসভা কমিটির তরফে ঝোলানো শুভেন্দুর ছবির একাধিক কাট আউটেও ছিল ‘জোড়া ফুল’। মিছিলের যাত্রাপথে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাট-আউটও নজরে এসেছে। যা এই আবহে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি, শুভেন্দুর মুখে শোনা গিয়েছে বন্দেমাতরম স্লোগানও। গত ১০ নভেম্বর নন্দীগ্রামে ‘ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি’ আয়োজিত শহিদ দিবস সভায় ‘ভারতমাতা জিন্দাবাদ’ ধ্বনি দিয়েছিলেন শুভেন্দু। মঙ্গলবার তাঁর মুখে বন্দেমাতরমের প্রত্যাবর্তন ‘ইঙ্গিতবাহী’ বলে মনে করছেন রাজনীতির কারবারিদের একাংশ।
খেজুরিতে ‘হার্মাদ মুক্তি দিবস’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এই মিছিলে শুভেন্দু তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান সম্পর্কে কোনও বার্তা দেননি। সেটা দেওয়ার কথাও ছিল না। কামারদার সভায় শুভেন্দু বক্তৃতা করেছেন। কিন্তু সেখানেও তাঁর বক্তব্যে কোনও রাজনৈতিক প্রসঙ্গ আসেনি। তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা মানুষের মঙ্গলের জন্য কাজ করি। এই শান্তি, এই গণতন্ত্র, এই বাক স্বাধীনতা চিরস্থায়ী হোক। আমি ২০১০-এ এসেছিলাম। ২০১১ থেকে ২০১৯-এও এসেছিলাম। আমি আপনাদের পাশে সর্বদা এভাবেই থাকতে চাই।’’
সোমবারই শুভেন্দুর সঙ্গে তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়ের একপ্রস্ত আলোচনা হয়েছে। সেই আলোচনা ‘অমীমাংসিত’ রয়েছে বলেই সূত্রের খবর। কিন্তু মঙ্গলবার তাঁর অনুগামীদের আয়োজিত কর্মসূচিতে দলীয় পতাকা এবং প্রতীকের উপস্থিতি নিয়ে প্রত্যাশিত ভাবেই জল্পনা শুরু হয়েছে। নন্দীগ্রাম আন্দোলন পর্বে সিপিএমের ‘গড়’ খেজুরি ২০১০ সালের ২৪ নভেম্বর তৃণমূলের ‘নিয়ন্ত্রণে’ এসেছিল। এক দশক আগেকার সেই ‘পরিবর্তন’ স্মরণে আয়োজিত কর্মসূচিতে মঙ্গলবার খেজুরির বাঁশগোড়া থেকে কামারদা পর্যন্ত মিছিলে হেঁটেছেন শুভেন্দু। সেই মিছিলে অবশ্য ছিল শুধু কালো পতাকা এবং কালো কালিতে লেখা ব্যানার। ব্যানারে লেখা ছিল‘বাংলার মুক্তিসূর্য শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে খেজুরি হার্মাদমুক্ত দিবস’। প্রসঙ্গত, নন্দীগ্রাম জমি রক্ষা আন্দোলন পর্বে কালো পতাকা নিয়েই লড়াইয়ে সামিল হয়েছিল তৃণমূল-সহ বিরোধীরা।