Advertisement
E-Paper

আবাসে আবার আসছে ৫টি দল

কেন্দ্র জানিয়েছে, এ বার ১০টি জেলায় গরমিলের অভিযোগ যাচাই ছাড়াও জেলাশাসক, জেলা পরিষদের মুখ্য প্রশাসনিক অফিসার (সিইও) এবং জেলা প্রশাসনের অন্য কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবে কেন্দ্রীয় দল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:৩৪
আবাস-পরিস্থিতি ঘুরে দেখার জন্য আবার পাঁচটি অনুসন্ধানী দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

আবাস-পরিস্থিতি ঘুরে দেখার জন্য আবার পাঁচটি অনুসন্ধানী দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ফাইল চিত্র।

কেন্দ্রীয় দল গত সপ্তাহেই রাজ্যের দু’টি জেলায় ঘুরে গিয়েছে। বাংলার ১০টি জেলায় আবাস-পরিস্থিতি ঘুরে দেখার জন্য আবার পাঁচ-পাঁচটি অনুসন্ধানী দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্যের প্রশাসনিক মহল সূত্রে অবশ্য অভিযোগ, অনুমোদন মিলেছে, বাড়ি তৈরির সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে, অথচ বরাদ্দের বদলে আসছে নতুন দল! ফলে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির কাজ শুরুই করতে পারেনি রাজ্য সরকার।

টাকা কবে আসবে, বাড়ির কাজ কবে শুরু করা যাবে এবং শর্তমাফিক ৩১ মার্চের সময়সীমার মধ্যে প্রায় ১১ লক্ষ বাড়ি তৈরি করা যাবে কী ভাবে, তা নিয়ে এমনিতেই দুর্ভাবনায় পড়েছে নবান্ন। তার উপরে আবার কেন্দ্রের অনুসন্ধানী দল। কেন? কেন্দ্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ) রূপায়ণের পদ্ধতিতে বঙ্গের কয়েকটি জেলায় ফের ‘গরমিল’-এর অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। সেটাই খতিয়ে দেখতে আসছে ‘ন্যাশনাল লেভেল মনিটর্স’ (এনএলএম) দল (সবিস্তার সারণিতে)।

চলতি মাসের অর্ধেক কাটতে চলল, কেন্দ্রের বরাদ্দ না-আসায় বঙ্গে আবাস-উপভোক্তাদের প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া যায়নি। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, কেন্দ্রীয় দল ঘুরে গিয়ে রিপোর্ট দেওয়ার আগে পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বরাদ্দ হয়তো আটকেই থাকবে। ফলে সময়সীমার মধ্যে বিপুল সংখ্যক বাড়ি তৈরির ব্যাপারে নতুন করে অনিশ্চয়তা তৈরি হবে।

এক অর্থ-কর্তার কথায়, “কেন্দ্রীয় পোর্টালে প্রথম কিস্তির টাকা ছাড়ার প্রক্রিয়াটাই বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে রাজ্যের প্রদেয় বরাদ্দ প্রস্তুত থাকা সত্ত্বেও নিজেদের তহবিল থেকে কিছু কিছু অর্থ ছাড়া যাচ্ছে না। কেন্দ্রের বরাদ্দ পেলে তবেই তা ছাড়া যাবে।”

কেন্দ্র জানিয়েছে, এ বার ১০টি জেলায় গরমিলের অভিযোগ যাচাই ছাড়াও জেলাশাসক, জেলা পরিষদের মুখ্য প্রশাসনিক অফিসার (সিইও) এবং জেলা প্রশাসনের অন্য কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবে কেন্দ্রীয় দল। এই নিয়েই প্রশাসনিক মহলে বিস্ময় ও আতঙ্ক বাড়ছে। গোটা ঘটনাটির নেপথ্যে ‘রাজনৈতিক প্রভাব’-এর সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না নবান্ন।

পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, “২০১৮ সালের ৫ জুন প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, স্বাধীনতার ৭৫ বছরে সব ভারতবাসীর মাথায় পাকা ছাদ থাকবে। এ রাজ্যে তালিকা সংশোধনের পরে তাঁরা অন্তত ১১ লক্ষ উপভোক্তাকে অনুমোদন দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় দল তা দেখেও গিয়েছে। কিন্তু টাকা পাওয়া গেল না, অথচ দল পাঠানো হচ্ছে বার বার। আসলে ইন্ধন জোগানো হচ্ছে, আর তাঁরা মুচকি হাসছেন। এটা দ্বিচারিতা ছাড়া আর কিছু নয়।”

প্রশাসনের অন্দরের ব্যাখ্যা, অসম, উত্তরপ্রদেশ, বিহারের মতো রাজ্যকে গত এপ্রিল-মে মাসেই বাড়ি তৈরির ‘কোটা’ দিয়েছিল কেন্দ্র। বাংলা তা পায় ডিসেম্বরে। তার পরেও ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তালিকা ত্রুটিমুক্ত করে কমবেশি সাড়ে ১০ লক্ষ উপভোক্তাকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া গিয়েছে। সেই পদ্ধতি যাচাই করে গিয়েছে কেন্দ্রীয় দল। রাজ্যের এক কর্তার দাবি, “৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের অন্যত্র প্রায় পাঁচ লক্ষ অনুমোদনের কাজ হয়েছে আর এ রাজ্যে হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। কেন্দ্রীয় দল খামতি ধরতে পারেনি। প্রতিটি জেলা প্রশাসন নিষ্ঠার সঙ্গে তালিকা সংশোধন ও অনুমোদন করেছে। তার পরেও বরাদ্দের বদলে কেন্দ্রীয় দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত হতাশাজনক।”

কেন্দ্রীয় নিয়মবিধি অনুযায়ী চূড়ান্ত অনুমোদনের থেকে সর্বাধিক সাত দিনের অর্থাৎ ৭ জানুয়ারির মধ্যে প্রথম কিস্তির টাকা উপভোক্তার কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল। প্রথম কিস্তিতে প্রত্যেক উপভোক্তা ৬০ হাজার টাকা পেয়ে থাকেন। কমবেশি ১১ লক্ষ উপভোক্তার ক্ষেত্রে প্রথম কিস্তির জন্য থাকার কথা প্রায় ৬৬০০ কোটি টাকা। এই প্রকল্পে মোট খরচের ৬০% দেয় কেন্দ্র, ৪০ ভাগের দায়িত্ব রাজ্যের। সেই অনুযায়ী প্রথম কিস্তির বরাদ্দ হিসেবে কেন্দ্রের দেওয়ার কথা প্রায় ৩৯৬০ কোটি টাকা। রাজ্যের দেওয়ার কথা প্রায় ২৬৪০ কোটি।

Pradhan Mantri Aawas Yojna West Bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy