Advertisement
E-Paper

Abhijit Sarkar: বিজেপি কর্মীর দেহ নিয়ে ধুন্ধুমার, হোমগার্ডকে চড়

বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পরে অভিজিৎ খুন হন। বিজেপির অভিযোগ, তিনি রাজনৈতিক হিংসার বলি হয়েছেন।

পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি বিজেপি কর্মীর। বৃহস্পতিবার এনআরএস হাসপাতালে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি বিজেপি কর্মীর। বৃহস্পতিবার এনআরএস হাসপাতালে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:২১
Share
Save

বেলেঘাটার নিহত দলীয় কর্মী অভিজিৎ সরকারের মৃতদেহ নিয়ে বৃহস্পতিবার দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে গোলমালে জড়ালেন বিজেপি কর্মীরা। এক বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে হোমগার্ডকে চড় মারার অভিযোগ উঠল। পুলিশকে চড় মারার হুমকি শোনা গেল বিক্ষোভরত আরও এক মহিলার মুখে। আর এগুলি যে বিজেপির কর্মীদেরই কীর্তি, কার্যত তার প্রমাণ দিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ স্বয়ং হুঙ্কার দিলেন, ‘‘হোমগার্ডকে মেরেছে, ঠিক করেছে! আমার কর্মীর গায়ে হাত দিলে বুকে পা তুলে দেব!’’ তৃণমূল নেতা তাপস রায়ের বক্তব্য, ‘‘এই ধরনের প্ররোচনামূলক কথা বলার দায়ে এখনই দিলীপ ঘোষকে গ্রেফতার করা যেতে পারে।’’

বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পরে অভিজিৎ খুন হন। বিজেপির অভিযোগ, তিনি রাজনৈতিক হিংসার বলি হয়েছেন। এই ঘটনায় সিবিআই তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিজিতের দেহ এ দিন শেষকৃত্যের জন্য নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ (এনআরএস) হাসপাতাল থেকে বার করার সময়ে গোলমালের সূত্রপাত। বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ, দলের যুব মোর্চার রাজ্য সহ-সভানেত্রী প্রিয়ঙ্কা তিবরেওয়াল এবং দলের নেতা সজল ঘোষ এ দিন সকালে হাসপাতালে যান। অর্জুন এবং সজলকে হাসপাতালে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন বিজেপি নেতারা। পুলিশ হাসপাতাল থেকে অভিজিতের দেহ ছাড়তে দেরি করছে বলেও অভিযোগ তোলেন তাঁরা। অভিজিতের পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ মৃতদেহ লোপাটের চেষ্টা করেছিল। এই অভিযোগ নিয়েই পুলিশের সঙ্গে বচসা, ধাক্কাধাক্কিতে জড়ান বিজেপি নেতারা। তখনই দেবদত্ত মাজি নামে এক বিজেপি নেতা কর্তব্যরত হোমগার্ড জিতেন্দ্র শর্মাকে চড় মারেন বলে অভিযোগ। সেই দৃশ্যের ভিডিয়ো ফুটেজও রয়েছে। দেবদত্ত গত বিধানসভা ভোটে চৌরঙ্গিতে বিজেপি প্রার্থী ছিলেন। পরে ওই আচরণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘আমি স্বীকার বা অস্বীকার করছি না। ইচ্ছাকৃত ভাবে মারা হয়নি। ওখানে দুর্ব্যবহার করা হচ্ছিল। পুলিশ আমাদের আবেগ নিয়ে খেলা করার ফলে এই ঘটনা ঘটেছে। মামলা হয়ে থাকলে আদালতে বুঝে নেব।’’

পুলিশ জানিয়েছে, জিতেন্দ্র কলকাতা পুলিশের ইএসডি-র অধীনে উল্টোডাঙা থানার হোমগার্ড। তিনি এ দিন এনআরএসে ডিউটিতে ছিলেন। তাঁর কানে এবং বুকে আঘাত লেগেছে। তাঁর অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে সরকারি কর্তব্যে বাধা দানের অভিযোগে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে এন্টালি থানা।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, ‘‘সরকারের গালে থাপ্পড় মারা উচিত। হোমগার্ডের কী অধিকার আছে এ সব করার? সে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছেলে নাকি?’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘এক জনের মৃতদেহ দেওয়া হচ্ছে না।’’ এর পরেই দিলীপ হুমকি দেন, ‘‘চাকরি তো সারাজীবন করতে হবে! আমাদের কর্মীরাও থাকবেন। সে কি পাড়ায় বা রাস্তায় থাকবে না? তাকে কে অধিকার দিয়েছে আমাদের বিধায়ক প্রার্থীকে তুই-তোকারি করার?’’

হাসপাতালে গোলমাল মিটলে অভিজতের দেহ নিয়ে যাওয়া হয় বিজেপির রাজ্য দফতরে। সেখানে দিলীপ-সহ দলের রাজ্য নেতারা নিহত কর্মীকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। বিজেপির রাজ্য দফতর থেকে বেলেঘাটার বাড়ি হয়ে অভিজিতের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় কেওড়াতলা মহাশ্মশানে। শ্মশানের যাত্রাপথ নিয়ে আলিপুরে ফের পুলিশের সঙ্গে বচসা হয় অভিজিতের দাদা বিশ্বজিৎ সরকার এবং এক মহিলার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনে দিয়ে অভিজিতের দেহ নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন তাঁর পরিজনেরা। পুলিশ তাতে বাধা দেওয়াতেই গোলমাল হয়। ওই মহিলাকে পুলিশকে চড় মারার হুমকি দিতে শোনা যায়। পরে অবশ্য কেওড়াতলায় অভিজিতের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।

হোমগার্ডকে বিজেপি নেতার চড় এবং দিলীপের তাতে সমর্থন ও হুমকি নিয়ে প্রত্যাশিত ভাবেই রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। তৃণমূলের উত্তর কলকাতা জেলা সভাপতি তাপস বলেন, ‘‘দিলীপ ঘোষ প্রায়ই উস্কানিমূলক মন্তব্য করেন। কর্তব্যরত সরকারি কর্মীকে মারা আইনের চোখে অপরাধ। সে কাজ কেউ করে থাকলে তাঁকে গ্রেফতার করা উচিত। দিলীপ ঘোষের সাহস থাকলে তিনি অল্পবয়সীদের প্ররোচনা না দিয়ে নিজে পুলিশের গায়ে হাত দিয়ে দেখান। তার পরে আইন অনুযায়ী ওঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হয় কি না, দেখতে পাবেন। তিনি যে পুলিশকে চড় মারার পক্ষে কথা বলেছেন, তার জন্যও তাঁকে গ্রেফতার করা যেতে পারে।’’

Abhijit Sarkar BJP Police Administration
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy