Advertisement
০২ মে ২০২৪

চাপে পড়ে ৪ ক্লাব সদস্যকে ধরল পুলিশ

ঘরে বাইরে প্রবল চাপের মুখে অবশেষে কিছুটা সক্রিয়তা দেখাল পুলিশ! বীরভূমের সিজেএম নিগ্রহ-কাণ্ডে যে ক্লাবের দিকে অভিযোগের আঙুল উঠেছিল, সেই ক্লাবের চার সদস্যকে গ্রেফতার করল সিউড়ি থানা।

সিজেএম নিগ্রহ কাণ্ডে বুধবার পুলিশ উদ্যোক্তা ক্লাবের চার সদস্যকে গ্রেফতার করল। —নিজস্ব চিত্র।

সিজেএম নিগ্রহ কাণ্ডে বুধবার পুলিশ উদ্যোক্তা ক্লাবের চার সদস্যকে গ্রেফতার করল। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৫ ০৩:২১
Share: Save:

ঘরে বাইরে প্রবল চাপের মুখে অবশেষে কিছুটা সক্রিয়তা দেখাল পুলিশ! বীরভূমের সিজেএম নিগ্রহ-কাণ্ডে যে ক্লাবের দিকে অভিযোগের আঙুল উঠেছিল, সেই ক্লাবের চার সদস্যকে গ্রেফতার করল সিউড়ি থানা।

পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার গভীর রাতে সিউড়ি শহরের আট নম্বর ওয়ার্ডের নিবেদিতাপল্লির বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় মনোজ ডোম, বুলেট কর্মকার ও সুজয় কাহারকে। ১১ নম্বর ওয়ার্ডের চৈতালি মোড়ের বাড়ি থেকে ধরা পড়েন অনুপ দাস। বুধবার সিউড়ি সিজেএম আদালতে ধৃতদের হাজির করানো হলে তাঁদের পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন সিউড়ি আদালতের বিচারক। পুলিশের দাবি, এই চার ছাড়াও শনিবার রাতে সিজেএম-কে নিগ্রহের ঘটনায় ওই ক্লাবের আরও কয়েক জন সদস্য যুক্ত। ধৃতদের জেরা করে বাকিদের খোঁজ করা হবে।

শনিবার রাতে সিউড়িতে জেলা তৃণমূলের কার্যালয়ের একেবারে সামনে চাঁদার জুলুমের শিকার হন বীরভূম জেলার মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায়। চাঁদা আদায়ের নামে বিচারকের গাড়ি আটাকে তাঁকে ও তাঁর নিরাপত্তা রক্ষীকে মারধর ও হেনস্থা করে কয়েক জন চাঁদা আদায়কারী। সোমবার দুপুরে ওই ক্লাবের মণ্ডপ তৈরির দায়িত্বে থাকা ডেকরেটর সংস্থার মালিক দিব্যেন্দু সরকার ও তাঁর তিন কর্মীকে (এঁরা প্রত্যেকেই স্কুল বা কলেজ পড়ুয়া) গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে দু’টি জামিন অযোগ্য-সহ ছ’টি ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান ধৃতের পরিজনেরা এবং এলাকাবাসী। তাঁদের পাশাপাশি জেলা আদালতের আইনজীবীদের একাংশেরও বক্তব্য ছিল, আসল অপরাধীদের ছেড়ে পুলিশ স্রেফ চোখে ধুলো দিতে চার নিরপরাধকে ধরেছে।

ইতিমধ্যে সিজেএম-কে মারধরের ঘটনাটি নিয়ে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ স্তরেও নাড়াচাড়া শুরু হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের কাছে ঘটনা সম্পর্কে খোঁজ করেন বলে নবান্ন সূত্রের খবর। ফলে, ‘কিছু একটা করে দেখানো’ নিয়ে বীরভূম জেলা পুলিশের উপরে চাপ ক্রমেই বাড়ছিল। তার জেরেই চার ক্লাব সদস্যের গ্রেফতারি বলে মনে করা হচ্ছে।

ধৃত ক্লাব সদস্য ও তাঁদের পরিজনেরা অবশ্য দাবি করছেন, তাঁরা নির্দোষ। পুলিশ অবশ্য সরকারি আইনজীবী বিকাশ পৈতণ্ডী মারফত এ দিন আদালতে দাবি করে, সোমবারের ধৃতদের মধ্যে যে দু’জন পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই ওই ক্লাব সদস্যদের নাম পাওয়া গিয়েছে। এ দিন ধৃতদের হয়ে কোনও আইনজীবীই দাঁড়াতে রাজি হননি। ধৃতদের জামিনের আবেদন জানাতে হাজির ছিলেন না লিগ্যাল সেলের কোনও আইনজীবীও। ধৃতেরা নিজেরাই বিচারকের কাছে তাঁদের জামিনের আবেদন রাখেন। ভারপ্রাপ্ত সিজেএম ঋষি কুশারি ধৃতদের পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজত রাখার নির্দেশ দেন।

সিউড়িতে জেলা তৃণমূলের কার্যালয় লাগোয়া ওই ক্লাবের সম্পাদক বা অন্য কোনও কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। সকলের ফোনই বন্ধ ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE