Advertisement
E-Paper

টোপ দিয়ে পুলিশের জালে অস্ত্র কারবারি

তদন্তকারীরা জানান, শনিবার ভোরে জলঙ্গি থেকে বাসে কলকাতায় আসে কুরবান। তার পরে বাসে কামালগাজি। সেখানে চার দিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপের অফিসারেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৭ ০১:৪০
ফাঁদে: অস্ত্র-সহ কুরবান।

ফাঁদে: অস্ত্র-সহ কুরবান।

পুর নির্বাচনে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে দেদার সেভেন এমএম পিস্তল বিক্রি করার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। সেই ব্যবসায় কয়েক লক্ষ টাকা ঘরে তুলেছিল মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি এলাকার কুরবান ফিরোজি। নির্বাচন-পর্ব শেষ হওয়ার পরেই মুঙ্গেরের অস্ত্র কারবারিদের কাছে মাস দুয়েক বিশ্রাম চেয়েছিল কুরবান। তার আর্জি মঞ্জুরও হয়েছিল। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। ক্রেতা সেজে পুলিশ মোটা টাকার টোপ দিয়ে যোগাযোগ করেছিল তার সঙ্গে। ছুটিতে থাকা অবস্থাতেই সেই টোপ গিলে ধরা পড়ে গেল ওই অস্ত্র ব্যবসায়ী।

পুলিশ সূত্রের খবর, কুরবানকে প্রায় দ্বিগুণ দামের টোপ দেওয়া হয়েছিল। এক তদন্তকারীর কথায়, ‘‘নির্বাচনের মরসুমে দেদার অস্ত্র বিক্রির পরেও জলঙ্গির চকমারির সাহেবনগরে কুরবানের গ্রামের বাড়িতে মুঙ্গেরের কয়েকটি সেভেন এমএম পিস্তল মজুত ছিল। ওর ফোনে আড়ি পেতেই সেটা জানতে পেরেছিলাম।’’ ওই অফিসার জানান, মাস দুয়েক আগেই কুরবানকে শনাক্ত করা হয়। ফোনে আড়ি পেতে জানা যায়, উত্তরবঙ্গে নির্বাচনের সময়ে প্রচুর অস্ত্র সরবরাহ করেছিল সে। ওই অফিসার বলেন, ‘‘বাজারে মুঙ্গেরের সেভেন এমএম পিস্তল ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। তাই আমরা ফিরোজিকে বলি, চারটি সেভেন এমএম-এর জন্য দেড় লক্ষ টাকা দেব। কুরবান জানায়, চারটি নয়, আপাতত সে দু’টি সেভেন এমএম দিতে পারবে। মাসখানেক পরে মিলবে আরও দু’টি। ঠিক হয়, সোনারপুর এলাকায় শনিবার বিকেলে পিস্তলের ডেলিভারি দেবে সে।’’

তদন্তকারীরা জানান, শনিবার ভোরে জলঙ্গি থেকে বাসে কলকাতায় আসে কুরবান। তার পরে বাসে কামালগাজি। সেখানে চার দিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপের অফিসারেরা। বিকেল পাঁচটায় বাস থেকে নামার পরেই কুরবান ছদ্মবেশী পুলিশকর্মীকে ফোন করে। সাদা পোশাকের ওই পুলিশকর্মী ক্রেতা সেজে কুরবানের কাছে হাজির হন। কুরবানকে নিয়ে একটি গাড়িতে তোলেন। কুরবানকে ওই অফিসার বলেন, ‘‘আমাদের ডেরায় চলুন। ওখানে পিস্তল নিয়ে ক্যাশ টাকা দিয়ে দেওয়া হবে। তা ছাড়া, ভোর থেকে যা ধকল গিয়েছে, একটু স্নান করে বিশ্রামও নিয়ে নেবেন।’’ তার পরে গাড়ি সোজা গিয়ে দাঁড়ায় পুলিশ ফাঁড়ির সামনে। কুরবানকে ভিতরে নিয়ে গিয়ে ব্যাগ তল্লাশি করে দেখা যায়, কয়েকটি পুরনো জামাকাপড়। তার নীচে খবরের কাগজে মোড়া দু’টি সেভেন এমএম পিস্তল। ছোট প্লাস্টিকে দু’টি ম্যাগাজিন। ১০ রাউন্ড সেভেন এমএম কার্তুজ।

তদন্তকারীদের কথায়, ‘‘শুধু মুঙ্গের থেকে অস্ত্র এনে এ রাজ্যে পাচারই নয়, মুর্শিদাবাদের ডোমকল ও জলঙ্গিতে মুঙ্গেরের কারিগরদের এনে কারখানা খুলে সেভেন এমএম ও ওয়ান শটার তৈরিও হচ্ছে। মুর্শিদাবাদে মুঙ্গেরের অস্ত্র কারবারিদের মূল এজেন্ট কুরবানই। পুলিশের দাবি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং নদিয়ায় রাজনৈতিক কর্মী-সহ দুষ্কৃতীদের অস্ত্র পাচার করেছে বলে জেরায় কবুল করেছে কুরবান। বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার অরিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘মুঙ্গের থেকে অস্ত্র পাচারের জাল কতটা ছড়িয়েছে, কুরবানকে জেরা করে তার হদিস পাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।’’

Arrest Businessman Arms
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy