Advertisement
E-Paper

নওদা যদুপুরের আতঙ্ক বকুল ধৃত পঞ্চসায়রে

খুন, বোমাবাজি, অপহরণের মতো অন্তত ২২টি মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। কিন্তু দু’বছর ধরে হাজারো খুঁজেও বকুল শেখের হদিস পাননি মালদহ জেলা পুলিশের অফিসারেরা। শেষমেশ মাস কয়েক আগে খবর মেলে, মালদহ ছেড়ে কলকাতায় এসে ঘাঁটি গেড়েছে বকুল। তখন কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) সাহায্য চায় মালদহ পুলিশ।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৬ ০৪:১১
আলিপুর আদালতে ধৃত বকুল শেখ। রবিবার। — নিজস্ব চিত্র

আলিপুর আদালতে ধৃত বকুল শেখ। রবিবার। — নিজস্ব চিত্র

খুন, বোমাবাজি, অপহরণের মতো অন্তত ২২টি মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। কিন্তু দু’বছর ধরে হাজারো খুঁজেও বকুল শেখের হদিস পাননি মালদহ জেলা পুলিশের অফিসারেরা। শেষমেশ মাস কয়েক আগে খবর মেলে, মালদহ ছেড়ে কলকাতায় এসে ঘাঁটি গেড়েছে বকুল। তখন কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) সাহায্য চায় মালদহ পুলিশ। তারপরে শনিবার রাতে পূর্ব যাদবপুরের পঞ্চসায়র এলাকার একটি গেস্ট হাউস থেকে মালদহ পুলিশ ও এসটিএফের যৌথ বাহিনী বকুলকে গ্রেফতার করে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। রবিবার আলিপুর আদালতে হাজির করানো হলে বকুলকে দু’দিনের ট্রানজিট রিমান্ডের আর্জি জানানো হয়। তা মঞ্জুর করেছেন বিচারক।

কালিয়াচকের সুকদেবপুরের বাসিন্দা বকুল নওদা যদুপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি। প্রায় বছর খানেক আগে তৃণমূল তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে। কিন্তু কেন তাকে এত দিন ধরা যায়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মালদহ জেলা কংগ্রেসের সভানেত্রী মৌসম নুর ও সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্রর দাবি, বকুলকে নামেই দল থেকে বহিষ্কার করেছিল তৃণমূল, গোপনে যোগাযোগ ছিল।

বাম আমলে বকুল তাদেরই ঘনিষ্ঠ ছিল বলে স্থানীয় সত্রে জানা গিয়েছে। এক সময়ে সুকদেবপুরের গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে সিপিএম তাকে প্রার্থীও করেছিল। পাঁচ বছর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ছিল বকুল। ২০১০ সালে বকুল তৃণমূলে যোগ দেয়। ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে নওদা যদুপুরের ২৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং তিনটি পঞ্চায়েত সমিতিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয় তৃণমূল। এরপর থেকেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠতে শুরু করে বকুল। তৃণমূল সূত্রই জানিয়েছে, প্রাক্তন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রের সঙ্গে বকুলের ঘনিষ্ঠতা ছিল। সিপিএমের অম্বরবাবু দাবি করেছেন, তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরেই বকুল ক্রমশ বেপরোয়া হয়ে উঠতে থাকে। সাবিত্রী অবশ্য বলেন, ‘‘সবই বিরোধীদের কুৎসা। পুলিশ নিজেদের কাজ করেছে, আমার কিছু বলার নেই।’ সুকদেবপুর, নওদা যদুপুর বাজার, এনায়েতপুর, অনুপনগর, জগদীশপুর, খিকিরবোনা এ সব এলাকাতেই প্রথম দিকে বকুলের দাপটের কথা শোনা যেত। দায়ের হতে থাকে একের পর এক তোলাবাজি, লুঠ, খুনের মামলা। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দাপাতে দেখা গিয়েছে বকুলকে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তোলাবাজি নিয়ে বকুলের সঙ্গে বিবাদ শুরু হয় অন্য একটি গোষ্ঠীর।

২০১৪-তে ওই গোষ্ঠীর নেতার ছেলেকেই খুনের অভিযোগ ওঠে বকুলের বিরুদ্ধে। গত সেপ্টেম্বরে নওদা যদুপুরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে বকুলের নেতৃত্বে বোমাবাজির সময় এক ট্রাক মালিক মারা যান। বকুলকে বহিষ্কার করে তৃণমূল। কিন্তু বকুল তার পর থেকে নিখোঁজ হয়ে যায়। বকুলের হদিশ পেতে তার দুই স্ত্রীকেও গ্রেফতার করা হয়।

বকুল গ্রেফতার হওয়ার পরে এলাকা থমথমে। তবে প্রশাসন জানিয়েছে, কড়া নজরদারি রয়েছে।

CPM tmc police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy