Advertisement
E-Paper

হাত নাড়তে পারবেন না রাহুল! কংগ্রেসকে সাত শর্তে বেঁধে বীরভূমে ‘ন্যায় যাত্রা’র অনুমতি দিল পুলিশ?

শুক্রবার থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হওয়ায় প্রাথমিক ভাবে রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’য় পুলিশের অনুমতি মেলেনি। পরে ‘অলিখিত’ অনুমতি মিলেছে বলে দাবি কংগ্রেস সূত্রে।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১১:৪৮
রাহুল গান্ধী।

রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।

শুক্রবার থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হওয়ায় প্রাথমিক ভাবে রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’য় পুলিশের অনুমতি মেলেনি। তা নিয়ে দীর্ঘ টালবাহানা ও লাগাতার আলোচনার পর শেষে পুলিশের অলিখিত অনুমতি মিলেছে বলে দাবি কংগ্রেস সূত্রে। এর পরেই মুর্শিদাবাদের কান্দি থেকে বীরভূমের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে রাহুলের ন্যায় যাত্রা। কংগ্রেস মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায় বলেন, ‘‘পুলিশই নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে আমাদের।’’ যদিও মুর্শিদাবাদ বা বীরভূম পুলিশের তরফে এ ব্যাপারে সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি।

কংগ্রেস সূত্রে খবর, পুলিশের তরফে লিখিত অনুমতি দেওয়া হয়নি। অলিখিত অনুমতি দিয়েছে। বেঁধে দেওয়া হয়েছে কিছু শর্তও। কংগ্রেসের ওই সূত্রের দাবি, পুলিশের প্রথম শর্ত, বীরভূম ও মুর্শিদাবাদের বাকি অংশে যাত্রার সময় গাড়ি থেকে নেমে জনতার উদ্দেশে হাত নাড়তে পারবেন না। দ্বিতীয়, জরুরি পরিস্থিতি ছাড়া কনভয় কোথাও দাঁড় করানো যাবে না। তিন, রাহুলের কনভয়ে সর্বোচ্চ পাঁচটি গাড়ি থাকবে। এ প্রসঙ্গে এক কংগ্রেস নেতার বক্তব্য, ‘‘রাহুলজির কনভয়ে অনেক নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন। তাঁদের জন্যই তো পাঁচটি গাড়ি লাগে। পুলিশের এই শর্তের কোনও যৌক্তিকতা নেই।’’

কংগ্রেস নেতারা জানাচ্ছেন, পুলিশের দেওয়া চতুর্থ শর্ত হল, রাহুলের যাত্রায় ‘সঙ্গী’ কংগ্রেস কর্মীরা দড়ি দিয়ে রাস্তার দু’পাশ আটকাতে পারবেন না। কোনও ভাবে যাতে পথ অবরুদ্ধ না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। পঞ্চম শর্ত হল, রাহুলের যাত্রার রুটে যান চলাচল পুলিশই নিয়ন্ত্রণ করবে। তাতে নাক গলাবেন না কংগ্রেস নেতার নিরাপত্তারক্ষীরা। যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে কংগ্রেস কর্মীরা পুলিশকে সব রকম ভাবে সহায়তা করবেন। ষষ্ঠ শর্ত, রাহুলকে যদি জরুরি পরিস্থিতিতে গাড়ি থেকে নামতে হয়, তা হলে সর্বোচ্চ তিন জন তাঁর সঙ্গে নামতে পারবেন। সপ্তম শর্ত হল, রাহুলের যাত্রাপথে কোনও মাধ্যমিক পরীক্ষাকেন্দ্র থাকলে সচেতন থাকতে হবে। পরীক্ষা শেষ হলে আশপাশেই কোথাও যাত্রা থামিয়ে দিতে হবে। পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে বেরিয়ে গেলে তার পর আবার যাত্রা শুরু করা যেতে পারে। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের যাতে কোনও ভাবে অসুবিধায় পড়তে না হয়, তা খেয়াল রাখতে হবে।

রাহুলের ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ মুর্শিদাবাদ জেলার খড়গ্রাম, আওগ্রাম, এড়োয়ালি, পারুলিয়া হয়ে শুক্রবার বীরভূমের তারাপীঠ থানার বুধিগ্রাম অঞ্চলের মাঝিপাড়ায় পৌঁছনোর কথা। রাহুলের সঙ্গে থাকবেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। আগে রাহুলের আসার কথা ছিল সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ। কিন্তু মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য অনুমতি দেয়নি পুলিশ। পুলিশ সুপারের দফতরের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, কংগ্রেসের পক্ষে রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’র জন্য আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য পুলিশের তরফ থেকে সেই আবেদন বাতিল করা হয়। কংগ্রেস সূত্রে খবর, এর পরেই দলীয় নেতারা পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করেন বিষয়টি নিয়ে। শেষে সাত শর্তে যাত্রার অনুমতি পুলিশ দিয়েছে বলে দাবি কংগ্রেস সূত্রে।

কংগ্রেস সূত্রে খবর, সফর সূচি অনুযায়ী, বিকেল সাড়ে ৪টে পর্যন্ত বীরভূমে থাকার কথা রাহুলের। ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে, রামপুরহাট থানার মনসুবা মোড় ও বগটুই মোড় হয়ে রাহুলের গাড়ি ভাঁড়শালাপাড়া মোড়ে যাবে। সেখানে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে গাড়ি থেকেই ধন্যবাদ জ্ঞাপন করার কথা রাহুলের। সেই কারণে ভাঁড়শালাপাড়া মোড়ে রাহুলের গাড়ি কিছু ক্ষণের জন্য দাঁড় করানো হতে পারে। কিন্তু পুলিশি শর্তের কারণে তা সম্ভব হবে না বলেই মনে করছেন কংগ্রেস নেতারা। জেলা কংগ্রেস সভাপতি মিল্টন রশিদ আগেই জানিয়েছিলেন, রাহুলের যাত্রাপথে জেলার ২৫০ জন দলীয় কর্মীর থাকার ‌কথা ছিল। রাহুলের দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল মাড়গ্রাম থানার ভোল্লা ক্যানাল মোড় পেরিয়ে একটি বেসরকারি স্কুলে। এক কংগ্রেস নেতার কথায়, ‘‘এ সব হয়তো কিছুই হবে না। এমনিতেই অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। যাত্রা জাতীয় সড়ক ধরে নলহাটি ও মুরারইয়ের রাজগ্রাম পেরিয়ে সোজা ঝাড়খণ্ডে চলে যাবে হয়তো।’’

Rahul Gandhi Bharat Jodo Nyay Yatra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy