Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

প্রতারণা কাণ্ডে দু’ঘণ্টা পুলিশি প্রশ্ন মুকুলকে

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সন্ধ্যা সওয়া ৬টা নাগাদ বাইরে বেরিয়ে এসে মুকুল জানান, তাঁর কাছে যা যা জানতে চাওয়া হয়েছিল, সব প্রশ্নেরই জবাব দিয়েছেন তিনি।

ঠাকুরপুকুর থানা চত্বরে মুকুল রায়। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

ঠাকুরপুকুর থানা চত্বরে মুকুল রায়। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:৩৯
Share: Save:

রেলের একটি কমিটির সদস্যপদ পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় তিনি আগাম জামিনের আবেদন করেছেন কলকাতা হাইকোর্টে। তার ফয়সালার আগেই, সোমবার ওই মামলায় বিজেপি নেতা মুকুল রায়কে তলব করে কিছু ক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করল কলকাতা পুলিশ।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সন্ধ্যা সওয়া ৬টা নাগাদ বাইরে বেরিয়ে এসে মুকুল জানান, তাঁর কাছে যা যা জানতে চাওয়া হয়েছিল, সব প্রশ্নেরই জবাব দিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, এই মামলা রাজনৈতিক চক্রান্তের ফল।

এর আগে বড়বাজারে টাকা উদ্ধারের এক মামলায় মুকুলকে তাঁর দিল্লির বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল কলকাতা পুলিশ।

সরশুনা থানার ৭০ লক্ষ টাকার প্রতারণার মামলায় সোমবার মুকুলকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের দক্ষিণ-পশ্চিম বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার নবকুমার গুপ্ত। মুকুল এ দিন বিকেল ৪টে ১০ মিনিটে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারের ঠাকুরপুকুরের কার্যালয়ে হাজির হন। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে তাঁকে নানা প্রশ্ন করেন তদন্তকারীরা। মুকুলের আগাম জামিনের মামলায় হাইকোর্ট রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে, ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওই নেতাকে গ্রেফতার করা যাবে না। তবে মুকুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠাতে বাধা নেই। সেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে ৭২ ঘণ্টা আগে তলবি নোটিস দিতে হবে। সেই নির্দেশ অনুযায়ী এ দিন হাজির হওয়ার জন্য তাঁকে তিন দিন আগে নোটিস পাঠানো হয়েছিল। উচ্চ আদালতে আগাম জামিনের শুনানি হওয়ার কথা ১৬ সেপ্টেম্বর।

পুলিশ জানায়, রেলের একটি কমিটির সদস্যপদ পাইয়ে দেওয়ার নামে ২০১৫ ও ২০১৬ সালে কয়েক দফায় সন্তু গঙ্গোপাধ্যায় নামে এক যুবকের কাছ থেকে ৭০ লক্ষ টাকা নেওয়া হয়েছিল অভিযোগ। সন্তু চলতি বছরের জানুয়ারিতে মুকুল-সহ চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন বাবান ঘোষ ও সাদ্দাম আনসারি নামে দু’জন। ওই মামলায় ইতিমধ্যে বাবানকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তিনি জামিন পেয়েছেন।

বাবান গ্রেফতারের পরেই আগাম জামিন চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মুকুল। তদন্তকারীদের সূত্রের খবর, এ দিন জিজ্ঞাসাবাদের সময় মুকুলকে বলা হয়, বাবান ও সাদ্দাম তদন্তকারীদের কাছে তাঁর নাম জানিয়েছেন। মুকুল ওই দুই অভিযুক্তকে কী ভাবে চেনেন, সেই প্রশ্ন করা হয়। ওই বিজেপি নেতা জানান, অনেকেই তাঁকে চেনেন। তিনি তাঁদের চেনেন কি না, তা বলতে পারছেন না। ঘটনাটি চার বছর আগেকার। তখন তিনি রেলমন্ত্রী ছিলেন না। ওই বিজেপি নেতার আইনজীবী প্রশান্ত মজুমদার জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিন আগে নোটিস পাঠানো হয়েছিল। সেই নোটিস পেয়েই তিনি হাজির হন।

মুকুলকে পুলিশ তলব করেছে শুনেই অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারের কার্যালয় ঠাকুরপুকুর থানার সামনে হাজির হন বিজেপির জনা পঞ্চাশ কর্মী-সমর্থক। মুকুলের প্রবেশ ও প্রস্থানের সময় তাঁরা ওই নেতার সমর্থনে স্লোগান দেন।

এক পুলিশকর্তা জানান, মুকুলের বয়ান খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশি সূত্রের খবর, এ দিন জিজ্ঞাসাবাদের সময় মুকুলকে তিন দফায় চা খাওয়ানো হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবার ডেকে পাঠানো হলে ফের হাজির হবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mukul Roy Police Forgery
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE