প্রেমিকার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেই নিষেধ! না-শোনায় প্রকাশ্যে চড়ও মেরেছিলেন প্রেমিকার দিদি। সেই রাগে তাঁকে এবং তাঁর সঙ্গীকে কুপিয়ে খুন। হুগলির বৈদ্যবাটিতে সেই জোড়া খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণ করল পুলিশ। জানা গেল, খুনের সাঁতরে গঙ্গা পার করে পালানোর চেষ্টাও করেছিলেন অভিযুক্ত অর্জুন পাসওয়ান। বৈদ্যবাটির জোড়াশ্বত্থতলা দিয়ে নেমে সুরকিতলা ঘাট হয়ে গঙ্গা পেরিয়ে ব্যারাকপুরে উঠেছিলেন তিনি। শনিবার সেই ঘাটেও তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়।
কয়েক দিন আগেই বৈদ্যবাটি পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের সীতারাম বাগান এলাকার ভাড়াবাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছিল অপর্ণা মাঝি (৩২) এবং মণীশ ভাদুড়ি (৩৫)। পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্তে নেমে অপর্ণার মা-বোনকে জিজ্ঞাসা করেই অর্জুনের সম্পর্কে জানতে পারেন তদন্তকারীরা। তাঁরা জানান, অর্জুন এবং তাঁর জামাইবাবু নাসিরুদ্দিন শেখ গোটা পরিবারকেই হুমকি দিতেন। এর পরেই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অপর্ণার ছোটো বোন রিম্পার সঙ্গে একটি পানশালায় আলাপ হয়েছিল হাওড়ার চামরাইলের বাসিন্দা গাড়িচালক অর্জুনের। ধীরে ধীরে তাঁদের প্রেম হয়। রিম্পাও স্বামীকে ছেড়ে তাঁর সঙ্গে থাকা শুরু করেছিলেন। অপর্ণাও পরে দু’জনকে তেলেঙ্গনায় কাজের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। সেখানে কিছু দিন থাকার পর তাঁরা আবার এ রাজ্যে ফিরে আসেন। তার পরেই রিম্পা এক দিন তাঁর দিদিকে জানান, অর্জুনের সঙ্গে তিনি আর থাকতে চান না। অন্য আর এক জনকে তাঁর পছন্দ হয়েছে। এর পরেই দিদি অর্জুনকে বোনের সঙ্গে মেলামেশা করতে বারণ করেন। কিন্তু অর্জুন সম্পর্ক ভাঙতে চাননি। অভিযোগ, অপর্ণা-রিম্পাদের টানা হুমকিও দিয়ে যাচ্ছিলেন। এতে অর্জুনের সঙ্গ দিয়েছিলেন তাঁর জামাইবাবু নাসিরুদ্দিন।
তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, ধৃতেরা জেরায় জানিয়েছেন, ঘটনার তিন দিন আগে অপর্ণা প্রকাশ্যে অর্জুনকে চড়-থাপ্পড়ও মেরেছিলেন। তাঁরই বদলা নিতে খুনের পরিকল্পনা করেছেন অর্জুন। ঘটনার দিন অর্থাৎ বুধবার শিয়ালদহ থেকে ছুরি কিনে বৈদ্যবাটিতে পৌঁছোন অর্জুন। রাত পর্যন্ত ওই এলাকায় ঘাপটি মেরে বসেছিলেন। এর পর ভোরে বাড়িতে ঢুকে অপর্ণা এবং মণীশকে খুন করেন।