Advertisement
E-Paper

রতুয়ায় আক্রান্ত পুলিশ, জখম ৭

রবিবার গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয় পরিমল মণ্ডলের (৪৩)। সোমবার ময়নাতদন্তের পরে তাঁর দেহ নিয়ে ফেরার সময়ে অভিযুক্ত গাড়ির চালককে পরিমলের পরিজনেরা রাস্তায় ঘুরতে দেখেন বলে দাবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৯ ০৪:২১
গোলমাল: ভাঙচুর করা হয়েছে পুলিশের গাড়ি। সোমবার রাতে রতুয়া ফাঁড়িতে। নিজস্ব চিত্র

গোলমাল: ভাঙচুর করা হয়েছে পুলিশের গাড়ি। সোমবার রাতে রতুয়া ফাঁড়িতে। নিজস্ব চিত্র

গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে রবিবার। আর সেই মৃত্যু ঘিরে সোমবার রাতে ভাঙচুর করা হল রতুয়ার মহানন্দটোলার পুলিশ ফাঁড়ি। পুলিশের উপরে হামলা চালানোর অভিযোগও উঠল। পরিস্থিতি সামাল দিতে এক সময়ে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। স্থানীয়রা আবার পুলিশের বিরুদ্ধে শূন্যে গুলি চালানোর অভিযোগ তুলেছে। যদিও পুলিশ সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এই গোলমালের ঘটনায় যুক্ত অভিযোগে রাতভর অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত মোট ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর সঙ্গে রাজনৈতিক রংও লেগে গিয়েছে। তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ, এর পিছনে রতুয়ার বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়ের উস্কানি ছিল। তিনি সদ্য কংগ্রেস থেকে তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। সমর অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির দিকে আঙুল তুলেছেন। বিজেপির দাবি, পুলিশের উপরে জনতা ক্ষেপেই ছিল। তাই এটা গণরোষ।

রবিবার গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয় পরিমল মণ্ডলের (৪৩)। সোমবার ময়নাতদন্তের পরে তাঁর দেহ নিয়ে ফেরার সময়ে অভিযুক্ত গাড়ির চালককে পরিমলের পরিজনেরা রাস্তায় ঘুরতে দেখেন বলে দাবি। তাঁরা তখন দেহ ফাঁড়ির সামনে রেখে পুলিশকে প্রশ্ন করেন, চালক জামিন পেলেন কী ভাবে? পুলিশের তরফে জানানো হয়, তারা আদালতে পাঠিয়েছে। বাকিটা তাদের জানার কথা নয়। এর পরে পুলিশের কাছ থেকে জেনারেল ডায়েরি বা জিডি নম্বর চান পরিমলের আত্মীয়েরা। তখন ফাঁড়ি থেকে বলা হয়, মামলা শুরু হয়ে যাওয়ায় আর জিডি নম্বর বলে কিছু থাকে না। বরং এফআইআরের কপি তাঁদের দিয়ে দেওয়া হবে।

পুলিশ সূত্রে দাবি, এর পরে লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশের উপরে হামলা চালানো হয় এবং তাদের গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ সুপার পরে জানান, এই ঘটনায় সাত জন পুলিশ জখম হয়েছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে মহানন্দটোলা ফাঁড়ি থেকে তখন রতুয়া, চাঁচল ও মালদহ থানা থেকে পুলিশ এবং র‌্যাফ চেয়ে পাঠানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের কেউ কেউ জানিয়েছেন, বাহিনী এসে লাঠিপেটা শুরু করলে ’শ তিনেক মানুষের ভিড় ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। দেহ রাস্তায় ফেলে রেখেই পরিজনেরা পালিয়ে যান। পুলিশ দেহটি রাতেই ফের মর্গে পাঠিয়ে দেয়। এ দিন পরিমলের সৎকার করা হয়।

এ দিন এলাকায় পরিস্থিতি ছিল থমথমে। বিকেল পর্যন্ত বাজার-দোকানেও ঝাঁপ ওঠেনি। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এলাকায় যান পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া। চাঁচলের এসডিপিও সজলকান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওই ঘটনায় আইন মেনেই পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। কেন এমন হল, আমরা খতিয়ে দেখছি।’’ একটি দুর্ঘটনাকে ঘিরে কী ভাবে এত বড় ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে ধন্দে পুলিশও। ঘটনার পিছনে কারও উস্কানি রয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

উস্কানির প্রশ্নে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও প্রকাশ্যে এসেছে। লোকসভা ভোটে শুধু রতুয়া থেকেই মৌসম নুর ‘লিড’ পেয়েছিলেন। এখানকার বিধায়ক তাঁর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। তৃণমূলের একাংশ মনে করছে, তাঁর উস্কানিতেই এই ঘটনা। মৃত পরিমল তৃণমূল কর্মী ছিলেন বলে জানিয়ে রতুয়া-১ ব্লক তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি ফজলুল হকের অভিযোগ, ‘‘ওখানকার বাসিন্দারা খেটে খাওয়া, নির্বিরোধী মানুষ। এলাকায় বিধায়কের পায়ের তলায় মাটি নেই। তাই বাসিন্দাদের পাশে পেতে তাঁদের উস্কে দিয়ে এ সব করেছেন। এতে আখেরে প্রশাসনেরই বদনাম হচ্ছে।’’

যদিও বিধায়কের দাবি, ‘‘এ সব বিজেপির কাজ। দলের কে কী বলছে, তার কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়ার ইচ্ছে আমার নেই।’’ রতুয়ার বিজেপি নেতা মণীন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘বাজে অভিযোগ। পুলিশের উপরে বিভিন্ন এলাকায় কারা হামলা করে, সবাই জানেন।’’

Ratua Police attacked Malda Injured
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy