গরুচোর সন্দেহে জনতার হাতে আটক এক জনকে উদ্ধার করতে গিয়ে আক্রান্ত হল পুলিশ। গাড়ি ভাঙচুর হয়, জখম হন সাব ইনস্পেক্টর-সহ দুই পুলিশকর্মী। ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে পুলিশের গাড়ির ধাক্কায় তিন জন আহত হন বলে অভিযোগ। এক কিশোর পরে হাসপাতালে মারা যায়।
সোমবার রাতের এই ঘটনায় অগ্নিগর্ভ হয়ে রয়েছে নদিয়ার ধানতলা থানার কুলগাছি। মঙ্গলবার দিনভর বিরাট পুলিশ বাহিনী এলাকায় টহল দিয়েছে। অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা রুজু করলেও রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। গাড়ির ধাক্কায় হতাহত হওয়া নিয়েও অভিযোগ দায়ের হয়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মৃতের নাম আকাশ রায় (১৫)। সুজন বিশ্বাস ও সুমন্ত প্রামাণিক নামে দু’জন রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি। জখম দুই পুলিশকর্মী রানাঘাটে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এলাকায় বেশ কিছু দিন ধরেই গরু চুরি হচ্ছিল। সোমবার সন্ধ্যায় খবর ছড়ায়, চুরিতে হাঁসখালি থানার সিলবেড়িয়া গ্রামের নাসির মণ্ডল যুক্ত। রাতে নাসিরের বাবা রশিদ মণ্ডকে ডেকে নিয়ে এসে মারধর শুরু হয়। খবর পেয়ে দত্তপুলিয়া ফাঁড়ির সাব ইনস্পেক্টর মহম্মদ মনিম আলম দুই কনস্টেবল ও এক হোমগার্ডকে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন। তাঁরা রশিদকে উদ্ধার করে গাড়িতে তুলতেই ভাঙচুর শুরু হয়। ইটের ঘায়ে জখম হন দুই পুলিশকর্মী। বেগতিক বুঝে ভিড় ঠেলে ভাঙা গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যায় পুলিশ। অভিযোগ, তখনই ধাক্কা খান তিন জন। এর মধ্যে আকাশকে রানাঘাটে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও বাঁচানো যায়নি। গণপিটুনিতে আহত রশিদকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী ও কমব্যাট ফোর্স গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মঙ্গলবার বিকালে রানাঘাট-দত্তপুলিয়া রাজ্য সড়কে পানিখালি মোড়ে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। মৃতের বাবা গুরুপদ রায়ের অভিযোগ, ‘‘পুলিশ গাড়িতে চাপা দিয়ে আমার ছেলেকে মেরেছে।’’ রানাঘাট পুলিশ জেলা সুপার কে কন্নন বলেন, ‘‘যে অভিযোগ দায়ের হয়েছে, তার ভিত্তিতে তদন্ত হচ্ছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)