E-Paper

বোস ও দুই কমিশন ‘বিজেপির সহায়ক’, তরজা শাসক- বিরোধীর

সন্দেশখালির মতো রাজ্যপাল, জাতীয় মহিলা কমিশন এবং মানবাধিকার কমিশনের সফর নিয়ে শাসক- বিরোধী চাপানউতোর শুরু হল মুর্শিদাবাদের হিংসা নিয়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৫ ০৫:২১
শমসেরগঞ্জে নিহতের বাড়িতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার এবং এআইসিসি-র সহ-পর্যবেক্ষক অম্বা প্রসাদ।

শমসেরগঞ্জে নিহতের বাড়িতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার এবং এআইসিসি-র সহ-পর্যবেক্ষক অম্বা প্রসাদ। —নিজস্ব চিত্র।

হিংসা- বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন নিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং দু’টি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় কমিশনকে নিশানা করল তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে তিন পক্ষের কাছেই রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলে পাল্টা চাপ তৈরি করল রাজ্য বিজেপি।

সন্দেশখালির মতো রাজ্যপাল, জাতীয় মহিলা কমিশন এবং মানবাধিকার কমিশনের সফর নিয়ে শাসক- বিরোধী চাপানউতোর শুরু হল মুর্শিদাবাদের হিংসা নিয়ে। হিংসা বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে আগেই এসেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও জাতীয় মহিলা কমিশন। পাশাপাশি বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছেন রাজ্যপালও। এ নিয়েই শনিবার প্রশ্ন তুলেছে শাসক তৃণমূল। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ এ দিন বলেন, ‘‘কে সেখানে যাবেন, তা আদালত দেখবে। রাজ্যপাল তো বটেই দিল্লি থেকে আসা দুই কমিশনও বিজেপির রাজনৈতিক লক্ষ্যপূরণের সাহায্যের চেষ্টা করছে। সন্দেশখালিতে আমরা যা দেখেছি এখানেও পরে তা সামনে আসবে।’’

অন্যদিকে, রাজ্যপাল ও জোড়া কমিশনের এই সফরকে ইতিবাচক মনে করছে রাজ্য বিজেপি। পাল্টা চাপ তৈরির কৌশল নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এ দিন বলেন, ‘‘এলাম, ছবি তুললাম চলে গেলাম। হবে না। অ্যাকশন নিতে হবে।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘যে পশ্চিমবঙ্গ তৈরি হয়েছিল বাঙালি হিন্দুদের জন্য। সেই পশ্চিমবঙ্গে বাঙালি হিন্দুদের উদ্বাস্তু হতে হয়। ঘরবাড়ি ছেড়ে স্ত্রী কন্যার ইজ্জত বাঁচাতে রাতের অন্ধকারে নদী পেরিয়ে পালাতে হয়!’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং জাতীয় মহিলা কমিশনকে বলব, আপনাদের যে সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে, সেই অধিকারে রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিন।’’

এ দিন এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে দেখা করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার, মালদহের (দক্ষিণ) সাংসদ ইশা খানচৌধুরী। মুর্শিদাবাদে দলীয় প্রতিনিধি দলে অধীর চৌধুরী না থাকলেও ছিলেন এআইসিসি’র সহকারী পর্যবেক্ষক অম্বা প্রসাদ। পরে শুভঙ্কর বলেন, “আগুনটা জ্বালিয়েছে কে? প্রশাসন কী করছিল। যারা ক্ষমতায় থাকতে চায়, আর যারা ক্ষমতায় আসতে চায় তারাই শমসেরগঞ্জে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।” রাজ্যপালের সফর নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিপিএমও। দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের প্রশ্ন, ‘‘রাজ্যপাল এখন গিয়ে কী করবেন? চার- পাঁচ ঘণ্টা পুলিশ আসেনি। রাজ্য প্রশাসনের প্রধান হিসেবে তখন তিনি কী করেছেন?’’

এই চাপানউতোর শুরু হয় সকাল থেকে। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সাগরিকা ঘোষ সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘‘এ আসলে কুখ্যাত শ্বেতপত্র কমিশন (এনসিডব্লিউ)।’ তাঁর অভিযোগ, ‘আগে সন্দেশখালিতে মহিলাদের সাদা কাগজে সই করে পরে তা ধর্ষণের অভিযোগপত্র তৈরি করেছিল কমিশন। সেই রকম শ্বেতপত্র আরও আসছে কি?’ জবাবে সুকান্ত বলেন, ‘‘কমিশনের তো যাওয়াই উচিত। মুর্শিদাবাদের ঘটনা গোটা দেশ ও মানব সমাজকে নাড়া দিয়েছে।’’ ইংরেজবাজারের বিজেপি বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘এটা জঙ্গি হানা, এটা সন্ত্রাসবাদ। এই সন্ত্রাসবাদের পক্ষে যারা কাজ করেন রাজ্য সরকার তাদের আশ্রয় দেন।’’

মুর্শিদাবাদের ঘটনায় রাজ্য প্রশাসনের ব্যর্থতার অভিযোগ উড়িয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘‘যা হয়েছে সেটা বিজেপির তৈরি করা একটা লড়াই। বিজেপি, বহিরাগত লোক এনে ঝামেলা পাকানোর চক্রান্ত করেছে। মুর্শিদাবাদের লোক তা প্রতিহত করেছে। পাশাপাশি প্রশাসনও ভীষণ তৎপর।’’ জবাবে সুকান্ত বলেন, ‘‘ব্রাত্য বসু অভিনয় করেন, নাটক লেখেন। আমার মনে হয় উনি সেই মেজাজে আছেন। এত ভিডিয়ো, যেখানে সাধারণ মানুষ বলছেন কী হয়েছে! ব্রাত্যের কথা মানুষ বিশ্বাস করবেন না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Murshidabad Congress

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy