Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal News

যাঁর বড় বউমাকে অসমে মারলেন, তাঁর বাড়ি যেতে লজ্জা করবে না! মোদীর সভার আগে সুর চড়ল জ্যোতিপ্রিয়র

প্রধানমন্ত্রী ঠাকুরনগরে সভা করলেই পাল্টা সভা করবে তৃণমূল— চ্যালেঞ্জটা আগেই ছুড়েছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এ বার পাল্টা সভার তারিখটাও প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গেল। ২ ফেব্রুয়ারি উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরে আসছেন নরেন্দ্র মোদী। ৫ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ ঠিক তিন তিন দিনের মাথাতেই সেখানে পাল্টা সভা করতে চলেছে তৃণমূল।

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৯ ২১:২২
Share: Save:

প্রধানমন্ত্রী ঠাকুরনগরে সভা করলেই পাল্টা সভা করবে তৃণমূল— চ্যালেঞ্জটা আগেই ছুড়েছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এ বার পাল্টা সভার তারিখটাও প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গেল। ২ ফেব্রুয়ারি উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরে আসছেন নরেন্দ্র মোদী। ৫ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ ঠিক তিন তিন দিনের মাথাতেই সেখানে পাল্টা সভা করতে চলেছে তৃণমূল। জানিয়েছেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা রাজ্যের প্রভাবশালী মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে প্রধানমন্ত্রীর যে সফর প্রস্তাবিত হয়েছে, তার বিরুদ্ধেও এ দিন ফের মুখ খুলেছেন জ্যোতিপ্রিয়।

বৃহস্পতিবার আনন্দবাজারকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেছিলেন, ‘‘ঠাকুরনগরে যদি নরেন্দ্র মোদী সভা করেন, তা হলে পাল্টা সভা কিন্তু হবেই।’’ মাঠ নিয়ে টানাপড়েন শেষে নরেন্দ্র মোদীর সেই সভা শেষ পর্যন্ত ২ ফেব্রুয়ারিই হচ্ছে। কখন সভা, কোন মাঠে সভা, কোথায় মোদীর হেলিকপ্টার নামবে, সে সব নিয়ে রবিবার পর্যন্তও বেশ কিছু অনিশ্চয়তা ছিল। সোমবার প্রায় সব অনিশ্চয়তাই কেটে গিয়েছে। আর নরেন্দ্র মোদীর কর্মসূচির বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠতেই সোমবার তৃণমূল সূত্রেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে পাল্টা কর্মসূচির কথা।

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এ দিন বলেন, ‘‘৫ বা ৬ ফেব্রুয়ারি আমরা ঠাকুরনগরে পাল্টা সভা করছি। দলের মধ্যে আলোচনা চলছে। শুধু জেলা নেতৃত্ব তো নয়, রাজ্য নেতৃত্বও উপস্থিত থাকবেন। তাই কথাবার্তা চালাতে হচ্ছে। ৫ তারিখই সভা রাখার চেষ্টা করছি। কোনও কারণে ওই দিন না হলে ৬ ফেব্রুয়ারি হবে।’’ তবে নরেন্দ্র মোদী যে মাঠে সভা করছেন ২ তারিখ, তৃণমূলের ৫ তারিখের সভা কিন্তু সেই মাঠে হবে না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছু দিন আগে যে মাঠে প্রশাসনিক কর্মসূচির আয়োজন করেছিলেন, সেই মাঠেই তৃণমূল পাল্টা সভা করবে। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘যে মাঠে মোদীর সভা হচ্ছে, সেখানে ১০ হাজারের বেশি লোক ধরে না। আমরা যে মাঠে পাল্টা সভা করছি, সেখানে ৫০ হাজার লোক ধরে। আর মনে রাখবেন, একটা লোককেও আমরা বাইরে থেকে আনব না। শুধুমাত্র গাইঘাটা বিধানসভা এলাকার মানুষই আমাদের মাঠ ভরিয়ে দেবেন।’’

আরও পড়ুন: বিদেশে পালাতে পারেন কে ডি সিংহ! তৃণমূল সাংসদের বিপুল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল ইডি

২ ফেব্রুয়ারি ঠাকুরনগরে সভা করতে গিয়ে মতুয়া সম্প্রদায়ের ঠাকুরবাড়িতেও যাওয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। সেখানে গিয়ে বড়মাকে প্রণাম করার কথা রয়েছে তাঁর। এই পরিকল্পনার কথা আগেই জানানো হয়েছিল মতুয়া মহাসঙ্ঘের অন্যতম নেতা শান্তনু ঠাকুরের তরফে। তবে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক চ্যালেঞ্জ ছুড়ে জানিয়েছিলেন যে, বড়মা দেখাই করবেন না নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে।

সোমবার অবশ্য সে প্রসঙ্গে কিছুটা অন্য রকম বয়ান দিলেন জ্যোতিপ্রিয়। মতুয়া ঠাকুরবাড়ির মেলার মাঠে মোদীর সভা হতে না দেওয়ার ‘যুদ্ধে’ জ্যোতিপ্রিয়রাই জিতে গিয়েছেন। মেলার মাঠের দখল নিজেদের হাতে নেওয়ার জন্য বিজেপি ঘনিষ্ঠ শান্তনু ঠাকুর এবং তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের অনুগামীরা সোমবার সকাল থেকে তৎপর হন। ফলে ঠাকুরনগরে উত্তেজনা বাড়ে। উত্তেজনা এড়াতে বিজেপি নেতৃত্ব ওই মাঠ থেকে সভা সরিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন শান্তনু ঠাকুরকে। তার পরেই মোদীর সভাস্থল বদলানোর সিদ্ধান্ত হয়। টানাপড়েনের এই প্রথম রাউন্ডে জিতে গিয়ে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কণ্ঠে কটাক্ষ আরও তীক্ষ্ণ এ দিন। মোদীর সঙ্গে বড়মা দেখা করবেন না— এমন মন্তব্য জ্যোতিপ্রিয় আর করেননি এ দিন। কিন্তু তিনি এ দিন বলেছেন, ‘‘মতুয়া ঠাকুরবাড়ির বড় বউ মমতাবালা ঠাকুর যখন অসমে গিয়েছিলেন, তখন বিজেপি সরকারের পুলিশ তাঁকে মারধর করেছে, হেনস্থা করেছে। যাঁর বড় বউমাকে অসমে এ ভাবে মারল বিজেপি, এখন তাঁর বাড়িতেই যেতে নরেন্দ্র মোদীর লজ্জা করবে না!’’ জ্যোতিপ্রিয়র প্রশ্ন, ‘‘ওঁর কি একেবারেই লজ্জা নেই?’’

আরও পড়ুন: কংগ্রেসের ‘গরিবি হঠাও’, ক্ষমতায় এলে গরিবদের ন্যূনতম আয়ের নিশ্চয়তা, ঘোষণা রাহুলের

ঠাকুরনগরে নরেন্দ্র মোদীর জনসভা বিজেপি-কে কোনও ভাবেই লাভবান করবে না বলে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এ দিন দাবি করেছেন। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে তিনি বলেন, ‘‘উনি ফালতু আসছেন। ঠাকুরনগরে ঢুকে উনি কিছুই করতে পারবেন না।’’

রাজ্য বিজেপি অবশ্য জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কথাকে গুরুত্ব দিতে রাজি নয়। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বললেন, ‘‘তৃণমূল পাল্টা সভা করতে চাইলে করুক। আমাদের কিছু যায় আসে না। এর আগেও ওঁরা পাল্টা সভা করেছেন। পুরুলিয়ায় করছেন, মেদিনীপুরে করেছেন। কোনও পাল্টা সভাতেই আমাদের সভার চেয়ে বেশি লোক জমাতে পারেননি। প্রত্যেক বারই ওঁদের মুখ পুড়েছে। আরও এক বার মুখ পুড়বে।’’

(বাংলার রাজনীতি, বাংলার শিক্ষা, বাংলার অর্থনীতি, বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার স্বাস্থ্য, বাংলার আবহাওয়া -পশ্চিমবঙ্গের সব টাটকা খবরআমাদের রাজ্য বিভাগে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE